তুরস্ক থেকে ৯০ হাজার লং রেঞ্জের টিয়ার শেল কিনছে সরকার

ন্যাশনাল ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
তুরস্ক থেকে ৯০ হাজার লং রেঞ্জের টিয়ার শেল কিনছে সরকার

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমে উত্তাপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনীতির মাঠে নিজেদের অনড় অবস্থান নিয়ে সভা-সমাবেশ করছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। যদিও এখন পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হচ্ছে তবে যেকোনো সময় তা সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথ দখলে রাখতে মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে রাজপথসহ “দেশে স্থিতিশীলতা” বজায় রাখতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। বিএনপি ও সমমনাদের সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনকে ঘিরে “নাশকতা ও নৈরাজ্যের” আশঙ্কা করছে সরকার; যে কারণে সরকারও নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। একইসঙ্গে গত দুই নির্বাচনের আগে-পরে “নৈরাজ্যকারীদের” বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো সচল ও দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের নামে নৈরাজ্য চালাতে পারে। এছাড়া এ সুযোগে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদীরাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। সবকিছু মাথায় রেখেই সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে তুরস্ক থেকে দূরবর্তী টার্গেটকে প্রতিরোধ করতে লং রেঞ্জের ৯০ হাজার টিয়ার গ্যাস শেল আনা হচ্ছে তুরস্ক থেকে।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সরকারি আদেশে জানা গেছে, টিয়ার শেষ আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এস এম ফেরদৌস, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি কুসুম দেওয়ান এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পুলিশ সুপার মনজুর আহমেদ সিদ্দিক তুরস্ক গেছেন। তারা সেখানকার টিয়ার গ্যাস শেলের ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও এসবের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখবেন।

সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক গত সপ্তাহে এক নির্দেশনায় পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। থানাগুলোতে অস্ত্র, গোলাবারুদ যথেষ্ট আছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), সহকারী কমিশনার (এসি) ও উপ পুলিশ কমিশনাররা (ডিসি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে (লজিস্টিক) নিয়মিত অবহিত করতে বলা হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশি কার্যক্রমের নতুন নতুন কৌশল জানাতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মামলা সচল

একইসঙ্গে দুই বছরের বেশি সময় ধরে মুলতবি থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির অপরাধ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগে দুই বছরের বেশি মুলতবি থাকা ১৩৪টি রাজনৈতিক মামলাও নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় হওয়া মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির পাশাপাশি যেসব মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে বা অন্যকোনো কারণে স্থগিত রয়েছে সেগুলো সচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা হয়েছিল ৩,৭৮৬টি। এরমধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ৩,৫৪৯টির। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় ১৮৬টি মামলার। এখনো তদন্ত শেষ হয়নি ৫১টি মামলার।

এছাড়া ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ওই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সারাদেশে সহিংসতার ঘটনায় আরও ১,৮২৬টি মামলা করা হয়েছিল। এরমধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ১,৭৮৯টি মামলার। চূড়ান্ত প্রতিবেদন বা ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ৩৩টি মামলায়। চারটি মামলা এখনো তদন্তাধীন। এ মামলাগুলোর আসামি বা অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুলিশ সদর দপ্তরকে তদারকি অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে।

গত ৩১ আগস্ট রাজারবাগে এক সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং দেশ বিরোধী যেকোনো চক্রান্ত রুখে দিতে সব পুলিশ সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা করা দরকার- তাই করা হবে।”

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তুরস্ক থেকে ৯০ হাজার লং রেঞ্জের টিয়ার শেল কিনছে সরকার

তুরস্ক থেকে ৯০ হাজার লং রেঞ্জের টিয়ার শেল কিনছে সরকার

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমে উত্তাপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনীতির মাঠে নিজেদের অনড় অবস্থান নিয়ে সভা-সমাবেশ করছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। যদিও এখন পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হচ্ছে তবে যেকোনো সময় তা সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথ দখলে রাখতে মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে রাজপথসহ “দেশে স্থিতিশীলতা” বজায় রাখতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। বিএনপি ও সমমনাদের সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনকে ঘিরে “নাশকতা ও নৈরাজ্যের” আশঙ্কা করছে সরকার; যে কারণে সরকারও নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। একইসঙ্গে গত দুই নির্বাচনের আগে-পরে “নৈরাজ্যকারীদের” বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো সচল ও দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের নামে নৈরাজ্য চালাতে পারে। এছাড়া এ সুযোগে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদীরাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। সবকিছু মাথায় রেখেই সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে তুরস্ক থেকে দূরবর্তী টার্গেটকে প্রতিরোধ করতে লং রেঞ্জের ৯০ হাজার টিয়ার গ্যাস শেল আনা হচ্ছে তুরস্ক থেকে।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সরকারি আদেশে জানা গেছে, টিয়ার শেষ আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এস এম ফেরদৌস, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি কুসুম দেওয়ান এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পুলিশ সুপার মনজুর আহমেদ সিদ্দিক তুরস্ক গেছেন। তারা সেখানকার টিয়ার গ্যাস শেলের ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও এসবের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখবেন।

সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক গত সপ্তাহে এক নির্দেশনায় পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। থানাগুলোতে অস্ত্র, গোলাবারুদ যথেষ্ট আছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), সহকারী কমিশনার (এসি) ও উপ পুলিশ কমিশনাররা (ডিসি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে (লজিস্টিক) নিয়মিত অবহিত করতে বলা হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশি কার্যক্রমের নতুন নতুন কৌশল জানাতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মামলা সচল

একইসঙ্গে দুই বছরের বেশি সময় ধরে মুলতবি থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির অপরাধ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগে দুই বছরের বেশি মুলতবি থাকা ১৩৪টি রাজনৈতিক মামলাও নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় হওয়া মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির পাশাপাশি যেসব মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে বা অন্যকোনো কারণে স্থগিত রয়েছে সেগুলো সচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলা হয়েছিল ৩,৭৮৬টি। এরমধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ৩,৫৪৯টির। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় ১৮৬টি মামলার। এখনো তদন্ত শেষ হয়নি ৫১টি মামলার।

এছাড়া ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ওই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সারাদেশে সহিংসতার ঘটনায় আরও ১,৮২৬টি মামলা করা হয়েছিল। এরমধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ১,৭৮৯টি মামলার। চূড়ান্ত প্রতিবেদন বা ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ৩৩টি মামলায়। চারটি মামলা এখনো তদন্তাধীন। এ মামলাগুলোর আসামি বা অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুলিশ সদর দপ্তরকে তদারকি অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে।

গত ৩১ আগস্ট রাজারবাগে এক সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং দেশ বিরোধী যেকোনো চক্রান্ত রুখে দিতে সব পুলিশ সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা করা দরকার- তাই করা হবে।”

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: ১৮/৩, ব্লক-এফ, রিং রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭ এজেড মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। লাইসেন্স নং : TRAD/DNCC/154868/2022