সিরাজগঞ্জের জনতা ব্যাংক সলঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম ও সহকারী অফিসার এফ.এম রুহুল আলমের বিরুদ্ধে সুদ মওকুফ করে দেবার কথা বলে ঘুষ গ্রহন ও অসৌজন্যমূলক আচারণের অভিযোগ উঠেছে ।
এছাড়াও ঘুষের বাকী টাকা পরিশোধ না করায় ব্যাংকের গ্রাহক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সলঙ্গা থানায় মিথ্যা সাজানো অভিযোগ করেছে ব্যাংকের সহকারী অফিসার এফএম রুহুল আলম।
জনতা ব্যাংক সলঙ্গা শাখার ভুক্তভোগি গ্রাহক শহিদুল ইসলাম জনতা ব্যাংক লি: প্রধান কার্যলয়ের এমডি এন্ড সিইও মো: আব্দুল জব্বার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ।
অভিযোগ সুত্রে ও ভুক্তভোগি শহিদুল ইসলাম জানান,সে সিরাজগঞ্জ জেলার জনতা ব্যাংক সলঙ্গা শাখার একজন সিসি (হাঃ) ঋণ গৃহিতা। ঋন হিসাব নং-৭৯। বিগত করোনা কালীন সময়ে বিশ্ব মহামারীতে ব্যবসায়িক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক অচ্ছলতার কারনে তিনি ঋণটি আর নবায়ন করতে পারেনি ।
ঋণটি সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে না পেরে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ঋণ হিসাবের লেজার স্থিতি সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করেন। পরে অনারপিত শতভাগ সুদ মওকুফের জন্য শাখা ব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করেন শহিদুল ইসলাম ।
শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ কামরুল ইসলাম ও সহকারী অফিসার এফ.এম রুহুল আলম ২ লাখ ৪ হাজার টাকা অনারপিত সুদ মওকুফ করার শর্তে উপর মহলে ম্যানেজারসহ সিরাজগঞ্জ ডিজিএম সাহেব এর সুপারিশ করাতে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করে।
টাকা না হলে প্রস্তাবটি সিরাজগঞ্জ সুদ মওকুফের জন্য সুপারিশ করবে না । উপায় না পেয়ে জনতা ব্যাংক সলঙ্গা শাখার সহকারী অফিসার এফ.এম রুহুল আলম এর প্রস্তাবে রাজি হয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করে এবং সাকুল্য সুদ মওকুফ করে দিতে পারলে বাকী ২০ হাজার টাকা দিতে মৌখিক সম্মতি প্রকাশ করেন শহিদুল ইসলাম।
শহিদুল ইসলাম বলেন পরবর্তীতে ৩১ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে সুদ মওকুফ কমিটি আমার ১ লাখ ৫০ হাজার ২৫২ টাকা সুদ মওকুফের অনুমোদন দেয় এবং ৫৩ হাজার ৭৬৭ টাকা ২০ জুলাই ২০২৪ তারিখের মধ্যে পরিশোধের নিমিত্তে শাখা বরাবরে চিঠি ইস্যু করেন। শাখা ব্যবস্থাপক এ বিষয়ে আমাকে কোন কিছুই অবহিত করেন নাই। পরে ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে সুদ মওকুফ দপ্তরে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই। অতঃপর আমি নিজ ইচ্ছায় শাখা ব্যবস্থাপক সাহেবের নিকট গেলে তাৎক্ষনিক ৫৩ হাজার ৭৬৭
টাকা পরিশোধ করতে বলে। আমি শাখা ব্যবস্থাপককে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাস করিলে আমাকে কিছুই না বলিয়া তাৎক্ষনিক টাকা পরিশোধ করিতে নির্দেশ প্রদান করেন। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে আমার নিজ বাস ভবনে আত্মীয় স্বজন ব্যবসায়িক লোকজন লইয়া পরিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। উক্ত সময়ে সহকারী অফিসার এফ.এম রুহুল আলম আমার নিজ বাস ভবনে উপস্থিত হয়ে ঘুষের বাকী ২০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি তাহাতে অস্বীকার করায় আমার সহিত কথা কাটাকাটি হয় এবং সহকারী অফিসার এফ.এম রুহুল আলম আমাকে আত্মীয় স্বজন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সম্মুখে গালিগালাজ করে।
পরে সম্মানের ভয়ে গত ২৩ আগষ্ট ২০২৩ইং তারিখে উক্ত শাখায় গিয়ে বকেয়া সকল টাকা পরিশোধ করেছি। পরে সলঙ্গা থানার মাধ্যমে জানতে পারি, ব্যাংকের শাখার ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম ও সহকারী অফিসার এফ.এম রুহুল আলম উভয়কে হুমকি ধামকি দিয়েছি মর্মে আমার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করে।পরে তা মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে।
সহকারী অফিসার রুহুল আলম জানান, আমি কারোর কাছ থেকে কোন প্রকার ঘুষ গ্রহন করি নাই। আমাকে ও কামরুল স্যারকে হুমকি ধামকি দিয়েছে জন্য থানায় জিডি করেছিলাম।
জনতা ব্যাংক সলঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম ঘুষ গ্রহনের কথা অস্বীকার করে জানান, আমি ও আমার অফিসের কেউ ঘুষ চায়নি বা গ্রহন করেনি। ঋণ পরিষোধের চাপ দেওয়ায় শহিদুল ইসলাম রেগে আমাদের গালিগালাজ করে ও হুমকি ধামকি দিয়েছে। পরে ব্যাংকের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়েছে। জিডি করার কথা শুনে হয়তো তিনি আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।