এশিয়া কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতকে ৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুভমান গিলের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পৌঁছায় ম্যাচ। তবে গিলের বিদায়ও বাংলাদেশের জয়ের পথের বাধা দূর করতে পারেনি। এরপর অক্ষর প্যাটেল ও শার্দুল ঠাকুর চোখ রাঙাতে থাকেন। সেই চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের লাগাম পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়েছেন মুস্তাফিজরা।
শেষ ২ ওভারে ভারতের দরকার ১৭। শুভমান গিলের সেঞ্চুরির পর অক্ষর প্যাটেল ম্যাচ অনেকটাই হাতে নিয়ে এসেছিলেন। ৪৯তম ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ২টি উইকেট তুলে নেন ফিজ। আউট করেন ৩৪ বলে ৪২ করে বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ ছুটিয়ে নিতে চাওয়া প্যাটেলকে।
শেষ ওভারে জিততে ১২ দরকার ভারতের। অভিষিক্ত পেসার তানজিম তামিমের হাতে বল তুলে দেন সাকিব। তানজিদ প্রথম তিন বলে রান আটকে রাখেন। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেন মোহাম্মদ শামি। পঞ্চম বল ফাইন লেগে ঠেলে দুই নিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তানজিদ তামিমের দুর্দান্ত থ্রোতে উইকেট ভেঙে দেন লিটন দাস। অবশেষে ভারতের বিপক্ষে ৬ রানের দুর্দান্ত এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিব আল হাসানের দল। আর এর মধ্য দিয়ে ১১ বছর পর এশিয়া কাপে ভারতকে হারায় টাইগাররা। এর আগে ২০১২ সালে শেষবার ভারতকে হারায় তারা।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারতের সামনে বাংলাদেশ ছুড়ে দিয়েছিল ২৬৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য। মাঝারি পুঁজি নিয়ে দারুণ বোলিং করে টাইগাররা। একশর আগে (৯৪ রানে) ভারত হারায় ৪ উইকেট।
তানজিম সাকিবের আজই অভিষেক হয়েছে আন্তর্জাতিক আঙিনায়। নিজের দ্বিতীয় বলে উইকেট নিলেন রোহিত শর্মার মতো ব্যাটারের। এরপর তিলক ভার্মা পরাস্ত হলেন দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হলেন তিলক।
প্রথম ওভারের দ্বিতীয় রোহিত শর্মা (০) ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন কভার পয়েন্টে। এরপর তানজিম সাকিব নিজের পরের ওভারে বোল্ড করেন তিলককে (৫)। যে বলটি বেরিয়ে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটার, কিন্তু সাকিবের সুইংয়ে ভেঙে যায় স্টাম্প। ১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বসে ভারত।
সেখান থেকে জুটি গড়েন লোকেশ রাহুল আর শুভমান গিল। গিল বেশ স্বচ্ছন্দ্যে ব্যাট করলেও রাহুলকে হাত খুলে খেলতে দেননি বাংলাদেশি বোলাররা। অবশেষে ধীরগতির রাহুলকে ফেরান শেখ মেহেদি। ৩৯ বলে ১৯ রান করে মিডউইকেটে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর হাতে ধরা পড়েন রাহুল।
ইশান কিশানও বেশিদূর এগোতে পারেননি। ৫ রান করা এই ব্যাটারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর থিতু হওয়ার চেষ্টা করা সূর্যকুমারকে (৩৪ বলে ২৬) বোল্ড করেন সাকিব। মোস্তাফিজ বোল্ড করেন জাদেজাকে (৭)।
কিন্তু শুভমান গিল একপ্রান্ত ধরে সেঞ্চুরি তুলে নেন। দলীয় ২০৯ রানের মাথায় ভারতের সপ্তম ব্যাটার হিসেবে তাকে আউট করেন শেখ মেহেদি। ১৩৩ বলে ১২১ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংসে ৮টি চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা হাঁকান ভারতীয় ওপেনার।
মোস্তাফিজ ৫০ রানে নেন ৩টি উইকেট। তানজিম সাকিব ৩২ রানে ২টি আর শেখ মেহেদি ৫০ রানে নেন ২টি উইকেট।
ভারত: ৪৯.৫ ওভারে ২৫৯/১০ (প্রসিদ্ধ ০*, শামি ৬, অক্ষর ৪২, শার্দুল ১১, গিল ১২১, জাদেজা ৭, সূর্যকুমার ২৬, ইশান ৫, রাহুল ১৯, তিলক ৫, রোহিত ০)
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৬৫/৮ (তানজিম সাকিব ১৪*, মেহেদী ২৯*, নাসুম ৪৪, হৃদয় ৫৪, লিটন দাস ০, তানজিদ ১৩, এনামুল ৪, মিরাজ ১৩, সাকিব ৮০, শামীম ১)
ফল: ৬ রানে জয়ী বাংলাদেশ।