আফগানিস্তানকে হারানোর ম্যাচে যেন ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা। কিন্তু পরের ম্যাচেই সব উধাও। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে একরকম খেলায় অংশ নেওয়াই বড় কথা এমন পণ করেই যেন হেরে গেলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
এদিন প্রথমে ব্যাট করে ২০০ রানের ঘরও পার হতে পারেননি টাইগাররা। জবাবে এই রান যেন তুড়ি মেরেই তুলে নিলেন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ জিতল শাহিন আফ্রিদির দল।
গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর আফগানদের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করে পরের ম্যাচগুলোতেও দারুণ লড়াইয়ের আভাস দিয়ে রেখেছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষের ম্যাচে মেহেদি হাসানকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে সফলতা এলেও পাকিস্তানের ম্যাচে যেন খেই হারালেন তিনি। প্রথম বলেই অঘটন। দলের ওপর চাপ বাড়িয়ে অবিরাম বিশ্রামের পথ ধরলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে স্বাভাবিক ভাবেই দায়িত্বের বোঝা বাড়ছিল। কিন্তু কে নেয় কার বোঝা? উইকেটে হাজিরা দিয়েই ছুটির হাঁটা ব্যাটারদের। এখানে অবশ্য বাড়তি বাহবা পাবেন পাক পেসাররা।
তীব্র তাপমাত্রার লাহোরের পিচে আগুন ঝরাচ্ছিলেন শাহিন আফ্রিদি, হ্যারিস রউফ এবং নাসিম শাহেরা। সেই আগুনে পুড়ে অঙ্গার লিটন দাস (১৬), মোহাম্মদ নাইম তৌহিদ হৃদয়রা।
তরুণরা যখন ব্যর্থতার স্মৃতি গড়ছেন। তখন বাংলাদেশের জান-বাংলাদেশের প্রাণ খ্যাত সাকিব নিজের পুরনো সতীর্থ মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে দলকে লড়াইয়ের কিছুটা শ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
ক্রিজ দেখল পঞ্চম উইকেটে শত রানের জুটি। এই জুটি টিকলে হয়তো ওপরের পুরো গল্পের প্লট অন্য রকম হতে পারতো। কিন্তু তীব্র আশাবাদী ভক্তদের মন ভাঙলো। ক্রিকেট ঈশ্বর যেন দেখালেন অতি আশা ভালো নয়।
ফাহিম আশরাফের বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারির ধারে ফখর জমানের হাতে গেলো ক্যাচ। বুক চিতিয়ে খেলতে থাকা সাকিব মুহূর্তেই মাটিতে। ফিরতে হলো মলিন মুখে। এরমধ্য দিয়েই যেন তাসের পাহাড়ের মতো বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়াটা শুধুই সময়ের ব্যাপার ছিল। হলোও তাই।
একের পর এক ব্যাটার আসছিলেন আর ফিরে যাচ্ছিলেন। অবশ্য মুশফিক তখনও এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন। ৬৪ রান তুলে ফিরে যান তিনিও।
পাকিস্তানের পেসাররা এদিন জাত চেনালেন। হ্যারিস রউফ ছয় ওভার বল করে ১৯ রানের খরচে তুলে নিলেন চার উইকেট। নাসিম শাহ তিনটি ও শাহিন একটি উইকেট নেন।
জবাবে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরু ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসী। খেলা শুরুর পরপরই একটি ফ্লাডলাইট নিভে যায়। প্রায় ২০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। তবে তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই পাক ব্যাটারদের।
ওপেনার ফখর তুলেছেন মাত্র ২০ রান। তবে আরেক প্রান্তে ইমাম দলকে টেনে নিচ্ছিলেন। যদিও পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবরের ব্যাট বাংলাদেশের বিপক্ষে হাসতে পারেনি। তাসকিনের বল খেলতে গিয়ে বাবরের ব্যাট ভেঙ্গে দেয় স্ট্যাম্প।
তৃতীয় উইকেটে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইমাম যোগ করেন ৮৫ রান। ম্যাচ মূলত সেখানেই টাইগারদের হাতছাড়া।
তবুও ম্যাচের লাগাম টানতে কখনও পেস, কখনও স্পিনারদের ব্যবহার করেছেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ফল আসেনি। শেষতক হেরেই সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ শেষে মাঠ ছাড়তে হয় টাইগার শিবিরকে।