বিজয় সরকারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

এস এম শরিফুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল
বিজয় সরকারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার চারণকবি বিজয় সরকারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৪ ডিসেম্বর)। মায়ার বাঁধন ছেড়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়ায় চিরন্তন উপলদ্ধি ফুটে উঠেছে তার সুরমূর্ছনায়।

তিনি গেয়েছেন-যেমন আছে এই পৃথিবী/তেমনিই ঠিক রবে/সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে…। মায়ার বাঁধন ছেড়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়ায় এই চিরন্তন উপলদ্ধি সহজেই অনুমেয়। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গানের কথায়, সুরমূর্ছনায় বিজয় সরকার স্মৃতির পাতায় ‘স্মৃতি’ হয়েছেন ৩৯ বছর আগে। বার্ধ্যকজনিত কারণে ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতে পরলোকগমন করেন কবিয়াল বিজয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়। তার দুই ছেলে কাজল ও বাদল অধিকারী ভারতে বসবাস করেন।

কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফের্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। বিজয় সরকার নবমশ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত। তার দুই স্ত্রী বীণাপানি ও প্রমোদা অধিকারীর কেউ বেঁচে নেই। বিজয় সরকার একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি। শিল্পকলায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন বিজয় সরকার।

আধ্যত্মিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নবী নামের নৌকা গড়/আল্লাহ নামের পাল খাটাও/বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/কূলের তরী খুলে দাও…।’ কিংবা ‘আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/ সোজা পথে চল…।’

স্ত্রী বীনাপাণির মৃত্যুর খবরে গানের আসরেই গেয়েছেন-‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/সে আমারে ভুলবে কেমনে…।’ প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন-‘তুমি জানো নারে প্রিয়/তুমি মোর জীবনের সাধনা…’।

পল্লীকবি জসীমউদ্দীন এর‘নক্সী কাথার মাঠ’ কাব্যগ্রন্থের নায়ক-নায়িকা ‘রূপাই’ ও ‘সাজু’র প্রেমকাহিনী নিয়ে বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নক্সী কাঁথার মাঠেরে/ সাজুর ব্যাথায় আজো রে বাজে রূপাই মিয়ার বাঁশের বাঁশি…।’ ‘কী সাপে কামড়াইলো আমারে/ওরে ও সাপুড়িয়ারে/আ…জ্বলিয়া পুড়িয়া মলেম বিষে’সহ অসংখ্য গান।

এদিকে, বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার নড়াইলে বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে-বিজয়গীতি পরিবেশন, কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। জেলা প্রশাসন ও চারণকবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

 

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বিজয় সরকারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিজয় সরকারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার চারণকবি বিজয় সরকারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৪ ডিসেম্বর)। মায়ার বাঁধন ছেড়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়ায় চিরন্তন উপলদ্ধি ফুটে উঠেছে তার সুরমূর্ছনায়।

তিনি গেয়েছেন-যেমন আছে এই পৃথিবী/তেমনিই ঠিক রবে/সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে…। মায়ার বাঁধন ছেড়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়ায় এই চিরন্তন উপলদ্ধি সহজেই অনুমেয়। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গানের কথায়, সুরমূর্ছনায় বিজয় সরকার স্মৃতির পাতায় ‘স্মৃতি’ হয়েছেন ৩৯ বছর আগে। বার্ধ্যকজনিত কারণে ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতে পরলোকগমন করেন কবিয়াল বিজয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়। তার দুই ছেলে কাজল ও বাদল অধিকারী ভারতে বসবাস করেন।

কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফের্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। বিজয় সরকার নবমশ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত। তার দুই স্ত্রী বীণাপানি ও প্রমোদা অধিকারীর কেউ বেঁচে নেই। বিজয় সরকার একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি। শিল্পকলায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন বিজয় সরকার।

আধ্যত্মিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নবী নামের নৌকা গড়/আল্লাহ নামের পাল খাটাও/বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/কূলের তরী খুলে দাও…।’ কিংবা ‘আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/ সোজা পথে চল…।’

স্ত্রী বীনাপাণির মৃত্যুর খবরে গানের আসরেই গেয়েছেন-‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/সে আমারে ভুলবে কেমনে…।’ প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন-‘তুমি জানো নারে প্রিয়/তুমি মোর জীবনের সাধনা…’।

পল্লীকবি জসীমউদ্দীন এর‘নক্সী কাথার মাঠ’ কাব্যগ্রন্থের নায়ক-নায়িকা ‘রূপাই’ ও ‘সাজু’র প্রেমকাহিনী নিয়ে বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নক্সী কাঁথার মাঠেরে/ সাজুর ব্যাথায় আজো রে বাজে রূপাই মিয়ার বাঁশের বাঁশি…।’ ‘কী সাপে কামড়াইলো আমারে/ওরে ও সাপুড়িয়ারে/আ…জ্বলিয়া পুড়িয়া মলেম বিষে’সহ অসংখ্য গান।

এদিকে, বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার নড়াইলে বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে-বিজয়গীতি পরিবেশন, কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। জেলা প্রশাসন ও চারণকবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

 

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: মনসুরাবাদ হাউজিং, ঢাকা-১২০৭ এজেড মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।