জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক নারী শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুর সঙ্গে অসদাচরণের জেরে মিরপুর-কালিয়াকৈর রুটে চলাচলকারী রাজধানী পরিবহনের ৩৭টি বাস আটক করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে মুচলেকা নিয়ে ৩৬টি বাস ছেড়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা ও বাস থেকে এক শিক্ষার্থীর ফোন হারানোকে কেন্দ্র করে ১টি বাস জব্দ করে রেখেছে প্রশাসন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে বাস আটক শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রাত ১০টায় বাস কর্তৃপক্ষ মুচলেকা দিয়ে ৩৬টি বাস ছাড়িয়ে নেন৷
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর নাম শাহমিনা আক্তার দিতি৷ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। এছাড়া অপরজন সেই নারী শিক্ষার্থীর বন্ধু খান মোহাম্মদ ইফতেখার৷ তিনি ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজের সমাপনী বর্ষের শিক্ষার্থী৷ অভিযুক্ত বাসের নম্বর (ঢাকা মেট্রো-ব ১২-৩০৪৪)।
ভুক্তভোগী শাহমিনা আক্তার দিতি বলেন, “আমি পৌনে ৩টার দিকে জয় বাংলা গেট (প্রান্তিক গেইট) থেকে নবীনগরের দিকে যাওয়ার জন্য রাজধানী বাসে উঠি। গাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার পরেও তিনি আমাকে সরে দাঁড়িয়ে দুইলাইনের মধ্যকার একলাইনে দাঁড়াতে বলেন। এসময় বাসের কনট্রাক্টর আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। একজন নারী শিক্ষার্থী হওয়ার পরেও তিনি আমার সাথে উচ্চবাচ্য করেন।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজধানী বাসের সুপারভাইজার মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, “ওইভাই মিরপুরের ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকে বাসে উঠে এবং বলে যে জাহাঙ্গীরনগরের প্রান্তিক গেটে নামবে৷ পরে উনার এক বান্ধবী প্রান্তিক গেট থেকে উঠলে উনারা পল্লী বিদ্যুৎ যাবেন বলে বাসে উঠেন৷ পরে উনাকে বলি যে আপু একটু চেপে একপাশে দাঁড়ান৷ তখন এ নিয়েই উনাদের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়৷ এর বাইরে তেমন কোনও খারাপ আচরণ হয়নি উনাদের সাথে৷”
সবশেষ রাজধানী পরিবহনের মালিকপক্ষ এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিক থেকে উপস্থাপিত বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার শর্তে প্রক্টর অফিসে মুচলেকা দিয়ে চাবি বুঝে নেন৷ এসময় ৫১ ব্যাচের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শরিফুল ইসলাম সেই বাসে তার ৪২ হাজার টাকা সমমূল্যের একটি ফোন (গুগল পিক্সেল-৭) হারিয়েছে উল্লেখ করে এর ক্ষতিপূরণ দাবি করেন৷ এরই প্রেক্ষিতে সবগুলো বাস ছেড়ে দিলেও একটি বাস আটকে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাশিদুল আলম বলেন, “একটি বাস আপাতত আটক করে রাখা হয়েছে। আগামীকাল বাসের মালিকপক্ষের সাথে আমাদের আলোচনা হবে। মোবাইল হারানোর বিষয়ে আমরা জেনেছি। তাকে জিডি করতে বলেছি।”