টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকার মহানগর এলাকার কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদীর দক্ষিণ পশ্চিম এলাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যে কোনও প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ ইত্যাদি নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ২টা থেকে কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদীর দক্ষিণ পশ্চিম এলাকায় যেকোনও সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ ইত্যাদি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো।
সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন– কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৭০) এবং রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০)।
এদিকে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও একজনের মৃত্যুর দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিহত আরেকজন হলেন, তাইজুল ইসলাম (৬৫), তিনি বগুড়া জেলার বাসিন্দা।
নিহতদের উভয়পক্ষই নিজেদের অনুসারী বলে দাবি করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার আগে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। আর তারা যেন ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে না পারেন, সেজন্য আগে থেকেই ময়দানে অবস্থান করছিলেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।
অন্যদিকে এই সংঘর্ষের ঘটনার বিচার ও ইজতেমা ময়দান জুবায়েরপন্থিদের বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন মুসল্লিদের একাংশ। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জেলার শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মুলাইদের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় এ অবরোধ করেন জুবায়েরপন্থিরা। এরফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় দীর্ঘ যানজটের তৈরি হয়েছে।
এদিকে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা বিশ্ব ইজতেমার মাঠ ছাড়ার পর সরকার ওই মাঠের দায়িত্ব নেবে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারের পাঁচ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর মাওলানা সাদের অনুসারী মাওলানা রেজা আরিফ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।