জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘স্বৈরাচারী সরকার দেশের জনসাধারণকে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ– এভাবে বিভক্ত করেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা ঐক্যবদ্ধ একটা দেশ চাই, যেখানে এমন বিভক্তির কোনও জায়গা থাকবে না।’
সোমবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কর্মী সম্মেলনে জামায়াত আমির বলেন, ‘এ দেশে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবেন, আমরা এমন দেশ চাই। স্বৈরাচার পতনের পরে বিশেষ পরিস্থিতিতে হিন্দু ভাইরা দুর্গাপূজা যাতে তারা নির্বিঘ্নে করতে পারেন সেজন্য আমরা মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে পাহারা দিয়েছি। মসজিদ যদি পাহারা দিতে না হয় তবে মন্দির কেন পাহারা দিতে হবে? মসজিদের মতো মন্দিরও পাহারা দেওয়ার দরকার হবে না, আমরা তেমন দেশ চাই।’
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী আমলে ১৬ বছরে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার হয়েছে। আমাদের দাবি, পাচার করা সব সম্পদ এ দেশে ফেরত আনতে হবে। আমাদের এমন দেশ গড়তে হবে, যাতে স্বৈরাচার আর কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।
‘বিগত স্বৈরাচারী সরকার জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর বিচারিক ও অবিচারিক উভয় প্রক্রিয়ায় যে হত্যা, নির্যাতন, গুম, বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া, রাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে তাণ্ডব চালিয়েছে; তারই প্রতিক্রিয়ায় আজ তাদের পতন হয়েছে এবং দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।’
ডা. শফিকুর রহমান ঠাকুরগাঁও জেলার উন্নয়ন দাবি করে বলেন, ‘দেশে বৈষম্যপূর্ণ উন্নয়ন হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার বাসিন্দারা দেশের উন্নয়নে শুরু থেকেই ভূমিকা পালন করে এসেছেন, অথচ এ জেলায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নেই। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই, যদি এ মুহূর্তে কোনও উন্নয়নের বরাদ্দ দেওয়া হয় তবে প্রথম ধাপেই যেন ঠাকুরগাঁওয়ে এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
জেলা জামায়াত আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন প্রধানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন– জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, সাবেক জেলা আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য দেলোয়ার হোসেনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।