জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ( জাবি) শেখ রাসেল হলের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের ৮১৬ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) শেখ রাসেল হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী মাহিবি রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ( ৫০ ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং শেখ রাসেল হলের আবাসিক ছাত্র। অন্যদিকে অভিযুক্তরা হলেন- পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের মুশফিকুর রহমান পরশ। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব রহমান উৎসব, নৃবিজ্ঞান বিভাগের মির্জা তৌফিক রায়হান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রীতম সাহা এবং প্রকাশ মিত্র। তাঁরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শেখ রাসেল হলে অবস্থান করেন। এদের মধ্যে প্রীতম ও প্রকাশ ভুক্তভোগী মাহিবির রুমমেট এবং উৎসব, পরশ ও তৌফিক ছাত্রলীগের রাজিনীতির সঙ্গে জড়িত।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, রুমে ওঠার পর থেকেই প্রিতম সাহা ( সিএসই – ৪৮ ব্যাচ) ও প্রকাশ মিত্র ( সিএসই – ৪৮ ব্যাচ) ভুক্তভোগীদের রুম ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। এছাড়া পরীক্ষার আগে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে, মাদকদ্রব্য সেবন করে রুমে পড়ালেখার পরিবেশ বিনষ্ট করে।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গতকাল সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে দশটার দিকে প্রিতম সাহা মো. মুশফিকুর রহমান (পরশ), মো. মাহবুবুর রহমান ( উৎসব) ও মির্জা তৌফিককে রুমে ডেকে নিয়ে আসে। এসময় পরশ ও উৎসব ভুক্তভোগীকে ( মাহিবি) মারধর করে এবং পরিবার নিয়ে গালিগালাজ করে। এবিষয়ে অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে আরো খারাপ অবস্থা হবে বলে হুমকি দেয় তারা। এসময় তাঁরা হলের প্রভোস্টকেও গালিগালাজ করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুশফিকুর রহমান পরশ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গতকাল রাতে প্রিতম ভাই যখন জানালেন যে রুমমেট জুনিয়র তার কথা শুনছে না,রুমে সমস্যা করছে তখন আমরা গিয়ে তাকে সতর্ক করেছি ও বুঝিয়েছি কিন্তু এসময় গায়ে হাত তোলার কোন ঘটনা ঘটেনি।
অভিযুক্ত উৎসব ও তৌফিকের কাছে এ বিষয়ে জানার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে ওই হলের ছাত্রলীগের নেতা জোবায়েদ আশিক ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের রুম ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ গত ৯ আগষ্ট রাতে হলের ৮০১ নং কক্ষ ছাড়তে নির্দেশ দেন পরশ ও উৎসব। এ সময় এক সাংবাদিক উৎসবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আরেক সাংবাদিকের উপড় তেড়ে আসেন পরশ।
এ ঘটনায় শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট ড. তাজউদ্দিন শিকদার বলেন,আমি একটি লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।