ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মশার হাত থেকে বাঁচতে হলে মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশা মেরে শেষ করা যাবে না। নিজেরাও সচেতন হতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) গণভবনে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৩ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আজকে কৃষকের ঘরে সার পৌঁছে যায়। তাদের কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি।
এটা দিয়ে কৃষি উপকরণ কিনতে পারে। ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এর মাধ্যমে ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের কাছে পৌঁছে যায়। জেলেদের ৪০ কেজি করে চাল দিই।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ৯৬ সালে ১৬০০ মেগাওয়াট ছিল। আমরা চার হাজার ৩০০ করে যাই। পরে বিএনপির আমলে কমে গেছে সেটা। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পায়। শিক্ষার্থীদের বই, বৃত্তি, উপবৃত্তি দিচ্ছি। ডিজিটাল সেন্টার করে দিচ্ছি। ইনকিউবেটর, হাই-টেক পার্ক করে দিয়েছি। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। ৭৩ শতাংশ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ঘরে ঘরে মোবাইল ফোন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না। নানাভাবে তাদের এগিয়ে নেওয়ার কাজ করছি। প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতা দিচ্ছি। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের স্বীকৃতি ও তাদের ভাতাও দিচ্ছি। পাঁচ কোটি মানুষের পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। এটা দিয়ে তারা স্বল্পমূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক আদর্শ নিয়ে সংবিধানে বর্ণিত পন্থায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌর ও সিটি করপোরেশন আইন করে আমরা এগুলো নিয়ে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, ঘরে বসে চাকরির আবেদনসহ যাবতীয় সেবার কাজ করতে পারে মানুষ। অনলাইনে কেনা-বেচাসহ সব কিছু হচ্ছে। আমরা তরুণ-তরুণীদের ফ্রিল্যান্সিং শিখাচ্ছি। সে এই ট্রেনিং নিয়ে বিদেশেও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নোত দেশের মর্যাদা দিয়ে গেছেন জাতির পিতা। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে ক্ষমতায়ন করে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন। তখনই এল আঘাত। জাতির পিতা সপরিবারে শাহাদাৎ বরণ করতে হয়। হারিয়েছিলাম বাবা-মা ভাইবোন। পেয়েছি বিশাল জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশের মানুষই আমার আপনজন। তারাই আমার সব শক্তি।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, নারায়ণগঞ্জের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ বিভিন্ন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইবরাহীম।
এবারই প্রথমবারের মতো উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস। এ উপলক্ষে সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, পৌর মেয়র ও কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ প্রায় আট হাজার জনপ্রতিনিধি অংশ নেন।