জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, আমরা এখন পর্যন্ত চিন্তা করছি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবো। ভবিষ্যতে কী করবো, ভবিষ্যতের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। যেহেতু এখনো রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক অস্থিতিশীল, অনিশ্চিত ও অস্বচ্ছ। সবকিছু জেনে বিবেচনায় নিতে হবে। আমার মনে হয় সবাই এই অনিশ্চয়তার দিকে তাকিয়ে আছে। সরকার এক ধরনের নির্বাচন করতে চাচ্ছে, সরকারের বিপক্ষ আরেক ধরনের নির্বাচন করতে চাইছে। কোন পদ্ধতিতে আসলে নির্বাচন হবে, সেটাই আমরা জানি না। নির্বাচন সঠিক পথে সঠিক সময়ে হবে কিনা, এটা নিয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে আমরা এখনই সঠিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত কে লড়বেন আর কে থাকবেন সেটাও অনিশ্চিত।
আজ শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লালমনিরহাট রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব চত্বরে আয়োজিত জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার আইন সংস্কার করে দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করছে। এ সরকার গণতন্ত্র ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করছেন। এক সময় মানুষ আর টেলিভিশন দেখবে না। টেলিভিশনগুলোতে সরকারের গুণাবলী প্রকাশ হবে। দেশের মানুষ এক টাকা পায় না কিন্তু দেশ থেকে হাজারো কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। দুর্নীতিতে দেশ ভেসে গেছে। এ সরকারের কোন দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নেই। তাই তারা লুটপাটের রাজত্ব করছে। তারা জনগণের জন্য নয়, শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনীতি করে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সরকারকে কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। যেখানে সরকারের ইন্টারফেয়ার করার কথা, সেসব জায়গায় তারা সঠিকভাবে কিছু করছে না। সেকারণে দ্রব্যমূল্য সরকার যাই বেঁধে দিয়ে থাকুক, বাজারে এর চেয়ে মূল্য বেশি। কৃষকরা অনেক সময় কম দামে দিচ্ছে কিন্তু শহরে তা অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনোরকম কোনো বন্দোবস্ত বা পদক্ষেপ জনগণের চোখে পড়ছে না। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। এটা একটা দুর্বিষহ অবস্থা।
জিএম কাদের বলেন, দেশের মালিক জনগণ। কিন্তু সরকার তাদের সমালোচনা করার সুযোগ দিচ্ছেন না। সরকার রাষ্ট্রকে নিজের মত করে ব্যবহার করছে। যেখানে জনগণের কোনো কথা শুনছে না। যেখানে সরকারের ইচ্ছেমতো দেশকে ব্যবহার করছে সেখানে বলা যায় এটি একটি গণতন্ত্রহীন সরকার ব্যবস্থা।
এর আগে শনিবার সকালে তিস্তা সড়ক সেতু থেকে তাকে লালমনিরহাট জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় অভ্যর্থনা জানান।
জেলা জাতীয় পার্টির আয়োজনে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি।
প্রধান বক্তা ছিলেন, পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সংরক্ষিত আসনের এমপি জিএম কাদের পত্নী শেরিফা কাদের।
লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক এ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সভাপতি নির্বাচিত হন শেরিফা কাদের এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জাহিদ হাসান লিমন।
