অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সার্টিফিকেট সংগ্রহ, গবেষণাপত্র প্রকাশনা ইত্যাদি কাজের জন্য গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ছুটি নিয়ে সপরিবারে অস্ট্রেলিয়া যান কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. নির্মল কুমার হালদার। এরপর কাজ শেষ করে দেশে না ফেরায় চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় তাকে।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, ড. নির্মল কুমার হালদার ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া গমনের পর ২৫ এপ্রিল তার ছুটি শেষ হওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত দেশে ফেরত আসেননি তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় থেকে একই বছরের ২১ এপ্রিল ৪ মাস ছুটি বর্ধিতকরণের আবেদন করেন ড. নির্মল কুমার। যুক্তিসংগত কারণ না থাকায় ছুটির আবেদন মঞ্জুর না করে তাকে দেশে ফেরত আসতে অনুরোধ জানানো হয়।
এরপরও তিনি বিদেশে অবস্থান করায় তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয় তাকে। এরপর জবাব দাখিল করলেও ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেননি অভিযুক্ত এ কর্মকর্তা।
জবাবে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে তার পক্ষে আর চাকরি করা সম্ভব নয় বিধায় তিনি সরকারি চাকরি হতে ইস্তফা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৭(২)(ঘ) মোতাবেক অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা চলতি বছরের ২২ মার্চ তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৭(৮)বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং একই বিধিমালার ৭(৯) বিধি মোতাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তাকে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।
লিখিতভাবে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর দাখিলকৃত জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে ড. নির্মল কুমারকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩)(ঘ) বিধি অনুযায়ী গুরুদণ্ড হিসাবে ‘চাকরি হতে বরখাস্ত’ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত ও প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। পরে কমিশন তাকে প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করলে তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত নামীয় গুরুদণ্ড প্রদান করা হলো।