অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগের কাছে জ্বালানি ও সারের ভর্তুকি কমানোর কৌশল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত প্রতিনিধিদল। রাজস্ব আহরণ বাড়াতে কৌশল তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে ঠিক কবে নাগাদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের করা হবে তাও জানতে চেয়েছে আইএমএফের প্রতিনিধিদলটি।
যদিও সেপ্টেম্বর মাসে আইএমএফের বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ঋণের শর্তে জ্বালানি তেলের প্রাইসিং ফর্মুলা করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ডিজেলের দাম সমন্বয় করার কথা ছিল কিন্তু সরকার আগামী নির্বাচনের দোহাই দিয়ে সেই শর্ত বাস্তবায়ন থেকে সরে এসেছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ ও ভর্তুকিতে বিশাল বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা সভা শেষে এসব তথ্য জানান।
দ্বিতীয় ঋণের কিস্তি দেওয়া জন্য সরকারের চলমান আর্থিক খাতের সংস্কার কর্মসূচি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের ১১ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদল এখন ঢাকায়। আইএমএফ স্টাফ মিশন সদস্যের এই প্রতিনিধিদল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বাজেটে অনুবিভাগের সঙ্গে আলাদা সভা করেছে। বাংলাদেশে আইএমএফের প্রথম কিস্তির শর্ত বাস্তবায়ন দেখার জন্য ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে প্রতিনিধিদলটি।
সভা সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফে এই প্রতিনিধিদল ভর্তুকি ও সরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থবছর থেকে ২০২৫-২৬২৬ অর্থবছর পর্যন্ত কত হতে পারে তা জানতে চেয়েছে।
জ্বালানি তেল ও সারের দাম বাড়িয়ে কিভাবে বাজেটের ঘাটতি অবস্থার কমিয়ে ফেলা যায় তার কৌশল নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় প্রকৃতপক্ষে গরীব মানুষকে কিভাবে অর্থ সহায়তা প্রদান করা যায় তা নির্ধারণ করতে হবে। বাজেট অনুবিভাগের দ্বিতীয় সভায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সামাজিক ব্যয় ধারাবাহিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আইএমএফ। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে নগদ সহায়তা ও ভর্তুকির পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে সংশোধনের পর এ পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ এর আগে আইএমএফ থেকে চারবার ঋণ নেয়। প্রথমবার ঋণ নেওয়া হয় ১৯৯০-১৯৯১ অর্থবছরে। এরপর ২০০৩-২০০৪, ২০১১-২০১২ এবং সর্বশেষ ২০২০-২০২১ সালে সংস্থাটি থেকে ঋণ নেয় বাংলাদেশ। তবে কোনোবারই ঋণের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি।