‘স্বাস্থ্যবান ভবিষ্যতের জন্য ডিম’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্ণিল আয়োজনের মধ্যে দিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপিত হয়েছে। ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদ ও পোল্ট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ গণ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট এর যৌথ উদ্যোগে এই দিবস পালন করা হয়।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় একাডেমিক ভবন এর সামনে থেকে অনুষদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ক্যাম্পাস ও এর সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষদের একটি করে ডিম খাওয়ানো হয়।
এফভিএএস’র সাধারণ শিক্ষার্থী মোঃ রুমন হোসেন বলেন, দিবসটি পালন করা হয় মূলত সাধারণ মানুষকে ডিমের যে গুনাগুন সেই বিষয়টি অবগত করার জন্য। ডিমের অনেক উপকারিতা আছে, যা আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিৎ এবং প্রতিদিন অন্তত দুটি করে ডিম খাওয়া প্রয়োজন। বর্তমান বাজারে ডিমের যে মূল্যস্ফীতি, খামারিদের দোষ বলবো না, দোষটি কয়েক গুষ্টি এর সাথে জড়িত। সরকারের উচিৎ এই ব্যপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।
ভেটেরিনারি অনুষদের ইন্টার্ণ শিক্ষার্থী ও পোল্ট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ গণ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের লিডার সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভূলে যাওয়ার প্রবনতা অনেক বেশি। যাকে ডিমেনশিয়া বলে। ডিমে কোলিন নামক এসেনশিয়াল নিউট্রিয়েন্ট থাকে। যা ব্রেইনের শক্তি বৃদ্ধি করে। এবং ৯ ধরনের এমাইনো এসিড থাকে। যা মস্তিষ্কের সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন স্ট্রেস ও এংজাইটি কমিয়ে মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই স্ট্রেস, এংজাইটি, ডিমেনশিয়া, আ্যলঝাইমারস সহ একাধিক ব্রেইন ডিজিজ থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন ডিম খাওয়া উচিত।
প্যারা ক্লিনিক্যাল বিভাগের সহকারী প্রভাষক ডা. উত্তম কুমার রয় বলেন, ডিম একটি সুপার ফুড। এতে সকল ধরনের পুষ্টি বিদ্যমান। এটি খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।এটি শিশু হতে বয়স্ক সকল ধরনের খেতে পারে। নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রত্যেকটি মানুষের প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া উচিত। তাই সকল মানুষকে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়ার আহ্বায়ন জানাচ্ছি।
এনিমেল প্রোডাকশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রুকনুজ্জামান বলেন, ডিম একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপদ প্রানীজ আমিষের উৎস। বরাবর ই ডিম আমাদের দেশের প্রানীজ আমিষের ঘাটতি পুরনে বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। বিভিন্ন কারনে দেশে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়া একটি চিন্তার বিষয়। তবে বিদেশ থেকে ডিম আমদানি করা এর সমাধান নয় কারন এই শিল্পের সাথে অনেক মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িত। সরকারের উচিৎ দেশে সুলভ মুল্যে ডিম উৎপাদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফলপ্রসু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা।
উল্লেখ্য, ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা ৮০। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে।