কানাডার টরন্টো সিটি কর্তৃপক্ষ রাইড শেয়ারিংয়ের লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কানাডার স্থানীয় সময় বুধবার (১১ অক্টোবর) সিটি কাউন্সিলের এক সভায় এ সম্পর্কিত এক মূসন পাস হয়েছে। মূসনটি উত্থাপন করেন ডেপুটি মেয়রের দায়িত্বে থাকা মাইক কোর। যদিও সাত জন কাউন্সিলর এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিরোধিতা সত্ত্বেও টরন্টোর সিটি মেয়র অলিভিয়া চৌ মূসন পাস করেন।
সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০৩১ সালের মধ্যে শহরে ইলেকট্রিক গাড়ি চালুর লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিটি কর্তৃপক্ষ বলেছে, পরিবেশ দূষণ রোধ এবং যানবাহন থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে আইনি কাঠামো এবং পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে সিটিকে বলা হয়েছে। এগুলো চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত টরন্টোয় রাইড শেয়ারিংয়ের নতুন লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ থাকবে।
উবার, লিফ্টসহ রাইড শেয়ারিং বা ফুড ডেলিভারির জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রাইভেট ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি (পিটিসি) লাইসেন্স নিতে হয়। সিটি এখন এ লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রাখবে। টরন্টোর সিটির তথ্য অনুযায়ী, ৫২ হাজার উবার ড্রাইভার রয়েছে টরন্টোতে। টরোন্টো সিটি কর্তৃপক্ষ এই সংখ্যা আর বাড়াতে চাইছে না।
এদিকে, কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের ফলে অনেকের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বহু সংস্কৃতির দেশ কানাডায় প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ নতুন অভিবাসী অভিবাসনের প্রত্যাশায় পাড়ি দেয়। নতুন আসা অভিবাসীদের অনেকেই পেশা হিসেবে রাইড শেয়ারিংকে বেছে নেন।
কানাডায় বসবাসরত অনেকেই আবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অতিরিক্ত আয়ের জন্য রাইড শেয়ারিং করে থাকেন। কর্তৃপক্ষের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের ফলে অনেকের মধ্যে হতাশা দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে কানাডার নতুন দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বলেন, বর্তমানে কানাডাজুড়ে এক ধরনের অর্থনৈতিক চাপ চলছে। নাগরিকরা হিমশিম খাচ্ছে। একদিকে যারা বাড়ি ভাড়া করে থাকেন তাদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে যাদের নিজস্ব বাড়ি আছে তাদের ব্যাংকের মটগেজের সুদের হার বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন আকাশচুম্বী। অনেকেই উবার বা রাইড শেয়ারিং করে সংসার চালান। তিনি সিটি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ বলে অভিহিত করেছেন।