দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ট্রেন চলাচল আর বেশিদূরে নয়। রেলযুগে প্রবেশের মাধ্যমে নব দিগন্তের সূচনা হতে যাচ্ছে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে। আক্ষরিক অর্থে ঝিনুক না হলেও সমুদ্র দর্শনে যাওয়ার পথে প্রথমেই সামুদ্রিক একটা আবহ পাবে কক্সবাজারে নির্মিত দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশনে এসে। কেবল আসা-যাওয়ার জন্যই নয়, এই স্টেশনে দেয়া হয়েছে বহুমাত্রিক রূপ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পরই খুলে দেয়া হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ। এর মাধ্যমে আগামী ১২ নভেম্বর দেশের রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। এর আগে ২ নভেম্বর হবে এ রেল পথে ট্রায়াল রান।
গতকাল সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে আইকনিক রেলস্টেশন পরিদর্শন করে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর অল্প সময়ের মধ্যে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে এই রেলপথে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, আইকনিক রেলস্টেশনটি নির্মাণে ব্যবহার হয়েছে বিশ্বমানের সব সরঞ্জাম। নানা জটিলতা পেরিয়ে পরিপূর্ণতা পেয়েছে ভবনটি। আর আইকনিক রেলস্টেশন দেখে সবাই মুগ্ধ আর প্রশংসা কুড়িয়েছে এডিবিও।
আইকনিক রেলস্টেশনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে আইকনিক রেলস্টেশনটি। আইকনিক ভবনটি নির্মাণ অত্যন্ত জটিল ছিল। যেমন যে স্টিলগুলো দেখা যাচ্ছে, এই স্টিলগুলোর না যত দাম, এটা তৈরি করতে তার চেয়ে চার গুণ বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা টাকার দিকে তাকাইনি, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও সহযোগিতা করেছে।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে নির্মিত আইকনিক রেলস্টেশনটি দেখে মুগ্ধ এডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, এ রকম সুন্দর ও নান্দনিক আইকনিক রেলস্টেশন বিশ্বে আর কোথাও নেই। এটা দেখে অন্যান্য দেশেও এরকম আইকনিক ভবন নির্মাণ করবেন।
এদিকে সোমবার বিকেলে আইকনিক রেলস্টেশন পরিদর্শনে আসে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন। পরিদর্শনের শুরুতেই আইকনিক ভবনের ভেতরে ঢুকে চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে দো’তলায় উঠেন, এরপর যাত্রী সেবার কার্যক্রমগুলো সম্পর্কে অবগত হন। এরপর ঝিনুকের ফোয়ারা, প্ল্যাটফর্ম, গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানগুলো পরিদর্শন করেন।
এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সুবক্তগীন, সাবেক প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের রেলমন্ত্রী বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ৯২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ। যা ট্রলিযোগে পরিদর্শনও করা হয়েছে। আর আইকনিক রেলস্টেশনটিও অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। এখন শুধুমাত্র ফিনিশিং ও কিছু রঙের কাজ চলমান রয়েছে। এসব বাকি কাজগুলোও উদ্বোধনের আগে শেষ হবে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের একমাত্র বিশ্বমানের দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা।