সগিরা মোর্শেদ খুনের পরিকল্পনাকারী খালাস

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
সগিরা মোর্শেদ খুনের পরিকল্পনাকারী খালাস
ছবি : সংগৃহীত

৩৫ বছর আগে খুন হয়েছিলেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক সগিরা মোর্শেদ। ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে গিয়েই সিদ্ধেশ্বরীতে খুনের শিকার হন তিনি। এই খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তার ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী (৭১) ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীন (৬৫)। কীভাবে এবং কেন খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তার সবিস্তারে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

কিন্তু বিচারে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী ডা. হাসান ও তার স্ত্রীকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন। তবে সগিরা মোর্শেদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া আবাসন ব্যবসায়ী মারুফ রেজা ও বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সাবেক কর্মকর্তা আনাস মাহমুদ রেজওয়ানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আনাস মাহমুদ রেজওয়ান খুনের পরিকল্পনাকারী ডা. হাসান আলীর শ্যালক।

১৯৮৯ সালে সংঘটিত সগিরা মোর্শেদ খুনের ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সেই খুনের মামলার রায়ে মূল পরিকল্পনাকারীকে স্ত্রীসহ খালাস দেওয়ার দেওয়ার ঘটনাও নানা আলোচনার খোড়াক জুগিয়েছে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের মনে।

রায়ের পর সগিরার স্বামী সালাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রায়ে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। দুই জনের রায়ে সন্তুষ্ট আর দুই জনের রায়ে সন্তুষ্ট নই। রায় আরো ভালো হতে পারত। আমরা আপিল করব। বিশ্বাস করি, আইনি ব্যবস্থা এখনো চালু রয়েছে। প্রচণ্ড চাপ কাজ করেছে। কিন্তু ফরচুনেটলি চাপের মধ্যে থেকেও জজ মোটামুটি ভালো রায় দিয়েছেন।

তবে আরো ভালো রায় হতে পারত। বাদী পক্ষের কৌঁসুলি ফারুক আহমেদ বলেন, এই মামলায় চার জন আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। সেখানে দুই জনেরটা গ্রহণ করে সাজা দিয়েছেন আর দুই জনেরটা গ্রহণ না করে খালাস দিয়েছেন। আদালতকে হয় পুরো বিষয়টা গ্রহণ বা বর্জন করতে হবে।

কিন্তু এখানে আংশিক গ্রহণ করে রায় দেওয়া হয়েছে। আমার মনে হয়, দুই পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে এই ‘গোঁজামিলের রায়’ দেওয়া হয়েছে। তবে আসামিদের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলার বিচার চলাকালে সাক্ষ্যে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি আসেনি। মামলার বাদীও সাক্ষ্যে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। সাক্ষ্য প্রমাণে এসব কিছু বাদীপক্ষ প্রমাণ করতে না পারায় বিচারক তাদের খালাস দিয়েছেন।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়ে সারাহাত সালমাকে আনতে গিয়ে খুন হন সগিরা মোর্শেদ। তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের ভাগনে মারুফ রেজা সরাসরি গুলি করে খুন করেন তাকে। তখন এই খুনের ঘটনাকে ছিনতাই বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। মন্টু মণ্ডল ওরফে মিন্টুর বিরুদ্ধে দেওয়া হয় চার্জশিট।

১৯৯১ সালে ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে মামলার বিচারের মাঝপর্যায়ে অধিকতর তদন্তের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। অধিকতর তদন্তের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন মারুফ রেজা। যদিও ঐ সময়ে তিনি এই মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন না। আসামি না হয়েও তার করা আবেদনেই মামলার বিচারকাজ হাইকোর্টের আদেশে বন্ধ থাকে ৩০ বছর। এ নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় শীর্ষ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২০১৯ সালে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। ঐ নির্দেশের পরই তদন্ত শুরু করে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। তদন্তে বেরিয়ে আসে সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীনের পরিকল্পনা মোতাবেক গুলি করে খুন করেন মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদ রেজওয়ান। এই চার আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৯ সালে মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পিবিআই চার্জশিট দেয়। সকল আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। কিন্তু আইনে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করতে না পারায় মামলাটি স্থাস্তান্তর হয় ঢাকার তৃতীয় বিশেষ দায়রা জজ আদালতে।

১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৫ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। দুই দফা দিন ধার্য করে রায় দিতে পারেননি বিচারক। সর্বশেষ তৃতীয় বারের মতো ধার্য তারিখে বুধবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায়ে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী দুই জনসহ প্রথম তদন্তে নাম আসা মন্টু মণ্ডলকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

‘তোমাকে চিনি—এরপরই আপাকে গুলি করা হয়’

সগিরা মোর্শেদকে শান্তিনগরের বাসা থেকে বহন করে সিদ্ধেশ্বরীতে নিয়ে গিয়েছিলেন রিকশাচালক সালাম মোল্লা। হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন তিনি। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে রিকশাচালক বলেন, ‘আপাকে নিয়ে সিদ্ধেশ্বরীর ভেতর ঢুকে কালীমন্দিরের সামনে এলে একটি মোটরসাইকেল বের হয়ে আসে। সেখানে দুই জন লোক ছিল। ঘটনাস্থল ভিকারুননিসা নূন স্কুলের দুই বাড়ির পূর্বে আমার রিকশা এলে মোটরসাইকেলটি আমার রিকশার সামনের চাকার সামনে এসে ব্রেক করে এবং ব্যারিকেড দেয়।

আপার হাতে একটি ব্যাগ ছিল। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের পেছনে বসা লোকটি ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে নেয়। সেটা মোটরসাইকেলে বসা সামনের লোকটির কাছে দেয়। সামনের লোকটি আপার হাতের বালা ধরে টানাটানি করে। এ সময় আপা বলেন, তুমি আমার সঙ্গে এগুলো করো না। আমি তোমাকে চিনি। আপা লোকটিকে চিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলের আরোহীরা তাকে গুলি করে। গুলি আপার বুকের বাম পাশে লাগে। আপা রিকশা থেকে পড়ে যেতে লাগলে আমি হাত দিয়ে তাকে ঠেকিয়ে রাখি। যাওয়ার সময় তারা আরো একটি গুলি করে। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।’

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সগিরা মোর্শেদ খুনের পরিকল্পনাকারী খালাস

সগিরা মোর্শেদ খুনের পরিকল্পনাকারী খালাস
ছবি : সংগৃহীত

৩৫ বছর আগে খুন হয়েছিলেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক সগিরা মোর্শেদ। ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে গিয়েই সিদ্ধেশ্বরীতে খুনের শিকার হন তিনি। এই খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তার ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী (৭১) ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীন (৬৫)। কীভাবে এবং কেন খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তার সবিস্তারে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

কিন্তু বিচারে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী ডা. হাসান ও তার স্ত্রীকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন। তবে সগিরা মোর্শেদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া আবাসন ব্যবসায়ী মারুফ রেজা ও বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সাবেক কর্মকর্তা আনাস মাহমুদ রেজওয়ানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আনাস মাহমুদ রেজওয়ান খুনের পরিকল্পনাকারী ডা. হাসান আলীর শ্যালক।

১৯৮৯ সালে সংঘটিত সগিরা মোর্শেদ খুনের ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সেই খুনের মামলার রায়ে মূল পরিকল্পনাকারীকে স্ত্রীসহ খালাস দেওয়ার দেওয়ার ঘটনাও নানা আলোচনার খোড়াক জুগিয়েছে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের মনে।

রায়ের পর সগিরার স্বামী সালাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রায়ে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। দুই জনের রায়ে সন্তুষ্ট আর দুই জনের রায়ে সন্তুষ্ট নই। রায় আরো ভালো হতে পারত। আমরা আপিল করব। বিশ্বাস করি, আইনি ব্যবস্থা এখনো চালু রয়েছে। প্রচণ্ড চাপ কাজ করেছে। কিন্তু ফরচুনেটলি চাপের মধ্যে থেকেও জজ মোটামুটি ভালো রায় দিয়েছেন।

তবে আরো ভালো রায় হতে পারত। বাদী পক্ষের কৌঁসুলি ফারুক আহমেদ বলেন, এই মামলায় চার জন আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। সেখানে দুই জনেরটা গ্রহণ করে সাজা দিয়েছেন আর দুই জনেরটা গ্রহণ না করে খালাস দিয়েছেন। আদালতকে হয় পুরো বিষয়টা গ্রহণ বা বর্জন করতে হবে।

কিন্তু এখানে আংশিক গ্রহণ করে রায় দেওয়া হয়েছে। আমার মনে হয়, দুই পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে এই ‘গোঁজামিলের রায়’ দেওয়া হয়েছে। তবে আসামিদের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলার বিচার চলাকালে সাক্ষ্যে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি আসেনি। মামলার বাদীও সাক্ষ্যে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। সাক্ষ্য প্রমাণে এসব কিছু বাদীপক্ষ প্রমাণ করতে না পারায় বিচারক তাদের খালাস দিয়েছেন।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়ে সারাহাত সালমাকে আনতে গিয়ে খুন হন সগিরা মোর্শেদ। তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের ভাগনে মারুফ রেজা সরাসরি গুলি করে খুন করেন তাকে। তখন এই খুনের ঘটনাকে ছিনতাই বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। মন্টু মণ্ডল ওরফে মিন্টুর বিরুদ্ধে দেওয়া হয় চার্জশিট।

১৯৯১ সালে ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে মামলার বিচারের মাঝপর্যায়ে অধিকতর তদন্তের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। অধিকতর তদন্তের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন মারুফ রেজা। যদিও ঐ সময়ে তিনি এই মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন না। আসামি না হয়েও তার করা আবেদনেই মামলার বিচারকাজ হাইকোর্টের আদেশে বন্ধ থাকে ৩০ বছর। এ নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় শীর্ষ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২০১৯ সালে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। ঐ নির্দেশের পরই তদন্ত শুরু করে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। তদন্তে বেরিয়ে আসে সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীনের পরিকল্পনা মোতাবেক গুলি করে খুন করেন মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদ রেজওয়ান। এই চার আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৯ সালে মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পিবিআই চার্জশিট দেয়। সকল আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। কিন্তু আইনে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করতে না পারায় মামলাটি স্থাস্তান্তর হয় ঢাকার তৃতীয় বিশেষ দায়রা জজ আদালতে।

১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৫ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। দুই দফা দিন ধার্য করে রায় দিতে পারেননি বিচারক। সর্বশেষ তৃতীয় বারের মতো ধার্য তারিখে বুধবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায়ে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী দুই জনসহ প্রথম তদন্তে নাম আসা মন্টু মণ্ডলকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

‘তোমাকে চিনি—এরপরই আপাকে গুলি করা হয়’

সগিরা মোর্শেদকে শান্তিনগরের বাসা থেকে বহন করে সিদ্ধেশ্বরীতে নিয়ে গিয়েছিলেন রিকশাচালক সালাম মোল্লা। হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন তিনি। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে রিকশাচালক বলেন, ‘আপাকে নিয়ে সিদ্ধেশ্বরীর ভেতর ঢুকে কালীমন্দিরের সামনে এলে একটি মোটরসাইকেল বের হয়ে আসে। সেখানে দুই জন লোক ছিল। ঘটনাস্থল ভিকারুননিসা নূন স্কুলের দুই বাড়ির পূর্বে আমার রিকশা এলে মোটরসাইকেলটি আমার রিকশার সামনের চাকার সামনে এসে ব্রেক করে এবং ব্যারিকেড দেয়।

আপার হাতে একটি ব্যাগ ছিল। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের পেছনে বসা লোকটি ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে নেয়। সেটা মোটরসাইকেলে বসা সামনের লোকটির কাছে দেয়। সামনের লোকটি আপার হাতের বালা ধরে টানাটানি করে। এ সময় আপা বলেন, তুমি আমার সঙ্গে এগুলো করো না। আমি তোমাকে চিনি। আপা লোকটিকে চিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলের আরোহীরা তাকে গুলি করে। গুলি আপার বুকের বাম পাশে লাগে। আপা রিকশা থেকে পড়ে যেতে লাগলে আমি হাত দিয়ে তাকে ঠেকিয়ে রাখি। যাওয়ার সময় তারা আরো একটি গুলি করে। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।’

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: মনসুরাবাদ হাউজিং, ঢাকা-১২০৭ এজেড মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।