বিশ্বে প্রায় ২৬০ প্রজাতি বানর রয়েছে, জীবনকালও আলাদা

অতিথি লেখক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
বিশ্বে প্রায় ২৬০ প্রজাতি বানর রয়েছে, জীবনকালও আলাদা
বিশ্বে প্রায় ২৬০ প্রজাতি বানর রয়েছে, জীবনকালও আলাদা

প্রাণিজগতে বানর এমন এক প্রজাতি, যা মানুষসহ অন্যান্য বুদ্ধিদীপ্ত প্রাণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। খেলাধুলা, বুদ্ধিমত্তা ও কৌতূহলী স্বভাবের জন্য তারা বরাবরই মানুষের কাছে আকর্ষণীয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না, বানর কতদিন পর্যন্ত বাঁচে বা তাদের জীবনকাল কীভাবে নির্ধারিত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, বানরের আয়ু নির্ভর করে তাদের প্রজাতি, আবাসস্থল, খাদ্যাভ্যাস ও পরিবেশের উপর।

গড়ে কতদিন বাঁচে বানর-

গবেষণা অনুযায়ী, সাধারণত একটি বানরের আয়ু ১৫ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তবে সব প্রজাতির বানরের জীবনকাল সমান নয়। কেউ বনে মুক্তভাবে বসবাস করে, কেউ আবার চিড়িয়াখানা বা সংরক্ষিত কেন্দ্রে জীবন কাটায়— ফলে তাদের আয়ুতেও বড় পার্থক্য দেখা যায়। সংরক্ষিত স্থানে থাকা বানর সাধারণত বেশি দিন বাঁচে, কারণ তারা নিয়মিত খাবার, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা পায়।

প্রজাতি অনুযায়ী বানরের আয়ু-

বিশ্বে বানরের প্রায় ২৬০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে, যার প্রত্যেকটির জীবনকাল আলাদা।

রিসাস বানর (Rhesus macaque): এরা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় এই প্রজাতিটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

লাঙ্গুর বা ধূসর বানর: ভারত ও বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে প্রচলিত এই প্রজাতি সাধারণত ২০–২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

ক্যাপুচিন বানর: মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় পাওয়া যায়। এরা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে।

বাবুন: আফ্রিকার এই শক্তিশালী প্রজাতি ৩৫ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত বাঁচতে সক্ষম।

স্পাইডার বানর: আমাজন অঞ্চলে দেখা যায়, আয়ু প্রায় ২৫–৩০ বছর।

চিম্পাঞ্জি (যদিও technically Ape): মানুষের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হিসেবে পরিচিত এই প্রাণী প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

পরিবেশের ভূমিকা-

বানরের আয়ু অনেকাংশে নির্ভর করে তারা কোথায় বাস করছে তার উপর। বন্য পরিবেশে থাকা বানররা শিকারি প্রাণী, খাদ্যের অভাব এবং রোগব্যাধির কারণে সাধারণত কম দিন বাঁচে। অন্যদিকে সংরক্ষিত কেন্দ্র, গবেষণাগার বা চিড়িয়াখানায় থাকা বানররা তুলনামূলকভাবে দীর্ঘায়ু হয়। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসা, পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপত্তা তাদের আয়ু বাড়ায়।

খাদ্য ও যত্নের প্রভাব-

বানরের খাদ্যাভ্যাসও তাদের আয়ুর অন্যতম নির্ধারক। ফল, বাদাম, বীজ ও প্রাকৃতিক খাবার খেলে তারা সুস্থ থাকে। গবেষকরা বলেন, নিয়মিত যত্ন, মানসিক উদ্দীপনা ও সামাজিক পরিবেশ বানরের জীবনকালকে প্রভাবিত করে। একঘেয়েমি বা মানসিক চাপ তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে আয়ু কমে যায়।

বিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণ-

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বানরদের জীবনচক্র পর্যবেক্ষণ করলে মানব বিবর্তন ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের অনেক দিক বোঝা যায়। বানরের বয়স ও বুদ্ধিমত্তার সম্পর্ক নিয়েও গবেষণা চলছে। অনেক প্রজাতি ২০ বছরের পর বয়সজনিত দুর্বলতায় ভোগে, আবার কেউ কেউ ৪০ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বানরের গড় আয়ু প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর, তবে পরিবেশ ও যত্নের ওপর নির্ভর করে কেউ কেউ ৪০ বছরেরও বেশি বাঁচে। প্রজাতিভেদে আয়ুর এই পার্থক্য আমাদের দেখায়, প্রকৃতিতে প্রতিটি প্রাণীর জীবনযাত্রা আলাদা এবং তা পরিবেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বিশ্বে প্রায় ২৬০ প্রজাতি বানর রয়েছে, জীবনকালও আলাদা

বিশ্বে প্রায় ২৬০ প্রজাতি বানর রয়েছে, জীবনকালও আলাদা
বিশ্বে প্রায় ২৬০ প্রজাতি বানর রয়েছে, জীবনকালও আলাদা

প্রাণিজগতে বানর এমন এক প্রজাতি, যা মানুষসহ অন্যান্য বুদ্ধিদীপ্ত প্রাণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। খেলাধুলা, বুদ্ধিমত্তা ও কৌতূহলী স্বভাবের জন্য তারা বরাবরই মানুষের কাছে আকর্ষণীয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না, বানর কতদিন পর্যন্ত বাঁচে বা তাদের জীবনকাল কীভাবে নির্ধারিত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, বানরের আয়ু নির্ভর করে তাদের প্রজাতি, আবাসস্থল, খাদ্যাভ্যাস ও পরিবেশের উপর।

গড়ে কতদিন বাঁচে বানর-

গবেষণা অনুযায়ী, সাধারণত একটি বানরের আয়ু ১৫ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তবে সব প্রজাতির বানরের জীবনকাল সমান নয়। কেউ বনে মুক্তভাবে বসবাস করে, কেউ আবার চিড়িয়াখানা বা সংরক্ষিত কেন্দ্রে জীবন কাটায়— ফলে তাদের আয়ুতেও বড় পার্থক্য দেখা যায়। সংরক্ষিত স্থানে থাকা বানর সাধারণত বেশি দিন বাঁচে, কারণ তারা নিয়মিত খাবার, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা পায়।

প্রজাতি অনুযায়ী বানরের আয়ু-

বিশ্বে বানরের প্রায় ২৬০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে, যার প্রত্যেকটির জীবনকাল আলাদা।

রিসাস বানর (Rhesus macaque): এরা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় এই প্রজাতিটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

লাঙ্গুর বা ধূসর বানর: ভারত ও বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে প্রচলিত এই প্রজাতি সাধারণত ২০–২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

ক্যাপুচিন বানর: মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় পাওয়া যায়। এরা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে।

বাবুন: আফ্রিকার এই শক্তিশালী প্রজাতি ৩৫ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত বাঁচতে সক্ষম।

স্পাইডার বানর: আমাজন অঞ্চলে দেখা যায়, আয়ু প্রায় ২৫–৩০ বছর।

চিম্পাঞ্জি (যদিও technically Ape): মানুষের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হিসেবে পরিচিত এই প্রাণী প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

পরিবেশের ভূমিকা-

বানরের আয়ু অনেকাংশে নির্ভর করে তারা কোথায় বাস করছে তার উপর। বন্য পরিবেশে থাকা বানররা শিকারি প্রাণী, খাদ্যের অভাব এবং রোগব্যাধির কারণে সাধারণত কম দিন বাঁচে। অন্যদিকে সংরক্ষিত কেন্দ্র, গবেষণাগার বা চিড়িয়াখানায় থাকা বানররা তুলনামূলকভাবে দীর্ঘায়ু হয়। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসা, পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপত্তা তাদের আয়ু বাড়ায়।

খাদ্য ও যত্নের প্রভাব-

বানরের খাদ্যাভ্যাসও তাদের আয়ুর অন্যতম নির্ধারক। ফল, বাদাম, বীজ ও প্রাকৃতিক খাবার খেলে তারা সুস্থ থাকে। গবেষকরা বলেন, নিয়মিত যত্ন, মানসিক উদ্দীপনা ও সামাজিক পরিবেশ বানরের জীবনকালকে প্রভাবিত করে। একঘেয়েমি বা মানসিক চাপ তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে আয়ু কমে যায়।

বিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণ-

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বানরদের জীবনচক্র পর্যবেক্ষণ করলে মানব বিবর্তন ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের অনেক দিক বোঝা যায়। বানরের বয়স ও বুদ্ধিমত্তার সম্পর্ক নিয়েও গবেষণা চলছে। অনেক প্রজাতি ২০ বছরের পর বয়সজনিত দুর্বলতায় ভোগে, আবার কেউ কেউ ৪০ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বানরের গড় আয়ু প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর, তবে পরিবেশ ও যত্নের ওপর নির্ভর করে কেউ কেউ ৪০ বছরেরও বেশি বাঁচে। প্রজাতিভেদে আয়ুর এই পার্থক্য আমাদের দেখায়, প্রকৃতিতে প্রতিটি প্রাণীর জীবনযাত্রা আলাদা এবং তা পরিবেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত