আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে গুমের দুই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার (২১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন তিন মামলার ওপর শুনানি হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ২৯ অক্টোবরের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “আজ তিনটি মামলার মোট ১৫ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে র্যাবের টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৭ আসামির মধ্যে ১০ জনকে হাজির করা হয়। তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
এর আগে, গত ৮ অক্টোবর পৃথক তিন মামলায় মোট ৩৪ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। এর একটিতে ১৭, আরেকটিতে ১৩ ও তৃতীয়টিতে ৪ জনকে আসামি করা হয়। দু’টি মামলায় শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। এসব মামলায় সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন ২৫ জন। অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর ১১ অক্টোবর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সেনাসদর।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা ঘিরে রাজধানীর কাকরাইল, মৎস্য ভবন ও পল্টন এলাকায় সকাল থেকেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টের মাজারগেট এলাকায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।


