সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জার ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মেটা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ম্যাক এবং উইন্ডোজ উভয় ব্যবহারকারীর জন্য মেসেঞ্জারের ডেস্কটপ অ্যাপ বন্ধ হয়ে যাবে। এই পরিবর্তনের ফলে ডেস্কটপ ব্যবহারকারীরা শুধুমাত্র ওয়েবভিত্তিক মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে পারবে। মেটার এই পদক্ষেপ ব্যবহারকারীদের মধ্যে আলোচনার ঝড় তুলেছে, বিশেষ করে যারা নিয়মিত ডেস্কটপে মেসেজিং করতেন।
মেটা জানিয়েছে, অ্যাপ বন্ধ হওয়ার পর ব্যবহারকারীরা facebook.com বা messenger.com ওয়েবসাইট ব্যবহার করে মেসেঞ্জারে প্রবেশ করতে পারবেন। যারা ফেসবুক ছাড়া মেসেঞ্জার ব্যবহার করেন, তারা সরাসরি মেসেঞ্জারের ওয়েবসাইট থেকে চ্যাট চালিয়ে যেতে পারবেন। এছাড়া, ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপ বন্ধ হওয়ার সময়সীমা ৬০ দিন, আর উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
ডেস্কটপ অ্যাপ বন্ধ হওয়ায় ব্যবহারকারীদের চ্যাট হিস্ট্রি সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মেটা “Secure Storage” ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের চ্যাট ইতিহাস ওয়েব ভার্সনে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছে। এতে করে ডেস্কটপ অ্যাপ বন্ধ হলেও ব্যবহারকারীরা তাদের পুরনো চ্যাট ইতিহাস অ্যাক্সেস করতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি ব্যবহারকারীদের অভ্যস্ত ব্যবহারের ধারাকে সুষ্ঠুভাবে ওয়েবের দিকে সরিয়ে নেবে।
যদিও মেটা আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাপ বন্ধ করার কারণ প্রকাশ করেনি, তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন যে কম ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এছাড়া, ওয়েবভিত্তিক মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীদের জন্য আরও সুবিধাজনক ও দ্রুতগতির চ্যাট অভিজ্ঞতা প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছেন যে ডেস্কটপ অ্যাপ বন্ধ হওয়ার আগে সকল গুরুত্বপূর্ণ চ্যাট এবং ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করা উচিত। ওয়েব ভার্সনে প্রবেশ করার জন্য ব্যবহারকারীদের ব্রাউজার আপডেট এবং সিকিউর স্টোরেজ সক্রিয় রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এটি ব্যবহারকারীদের নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন চ্যাটিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে।
মেসেঞ্জারের এই পদক্ষেপ ডিজিটাল যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করছে। ডেস্কটপ অ্যাপ বন্ধ হলেও, ব্যবহারকারীরা ওয়েবের মাধ্যমে তাদের মেসেজিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবহারকারীদের অভ্যস্ত চ্যাট অভিজ্ঞতাকে আরও সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে পরিচালনার সুযোগ করে দেবে।
