ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ বন্ধ করে পরীক্ষামূলক বা অনুমাননির্ভর কোর্স চালু করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ‘বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মত দেন সংগঠনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার লক্ষ্যে ১৯৮০ সালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার গঠিত হলেও শিক্ষা বিষয়ে নীতিনির্ধারণে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। ফলে স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও শিক্ষাখাতে নানা ধরনের অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষাই যেহেতু একটি দেশের উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি, তাই এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
তারা অভিযোগ করেন, ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজকে ২০১৭ সালে কোনো ধরনের গবেষণা বা স্টাডি ছাড়াই কেবল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। শুরুতে শিক্ষার্থীরা খুশি হলেও পরে অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়।
এ বিষয়ে সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি কমিটি গঠন করলেও সেখানে শিক্ষা ক্যাডারের কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাদের মতে, মূল স্টেকহোল্ডারদের বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণেই সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, কেউ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে, কেউ বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এমনকি কিছু মহল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করে শিক্ষক সমাজের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বক্তারা বলেন, দেশের উন্নয়নে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক সমুন্নত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দেশসেরা কলেজগুলো বন্ধ রেখে অনুমাননির্ভর পরীক্ষামূলক কোর্স চালু করা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। সাত কলেজ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে গণভোট নয়, বরং শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও অংশীজনদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি স ম গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, অধ্যাপক এম এ সামাদ প্রমুখ।


