সালমান খানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে। তার বাবা সেলিম খান একজন বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার এবং মা সুশীলা চরক (যিনি পরে সেলিম খানের সাথে বিয়ে করার পর সালমা খান নামে পরিচিত হন) ছিলেন গৃহিণী। চলচ্চিত্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে এক ধরনের তারকাসুলভ ব্যক্তিত্ব তৈরি হয়েছিল।
বলিউডের ভাইজান খ্যাত সালমান খান শুধু চলচ্চিত্র জগতেই নয়, বরং ভক্তদের হৃদয়েও বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন। তবে তার জীবনযাত্রার শুরুটা কেমন ছিল এবং স্কুলে তিনি কেমন ছিলেন এসব নিয়ে অনেকের আগ্রহ রয়েছে। একাধিক সাক্ষাৎকারে সালমান খান নিজের শৈশবের নানা দুষ্টুমির কথা জানিয়েছেন। তিনি মুম্বাইয়ের খ্যাতনামা স্কুল থেকে পড়াশোনা শুরু করলেও পড়াশোনার চেয়ে খেলাধুলা ও দুষ্টুমিতেই ছিলেন বেশি আগ্রহী।
সালমান খান প্রথমে মুম্বাইয়ের সেন্ট স্ট্যানিসলস হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তবে এর আগে তিনি কিছুদিন গ্বালিয়রের বিখ্যাত স্কিন্ডিয়া স্কুলে ভর্তি ছিলেন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে তিনি খুব মনোযোগী ছাত্র ছিলেন না। তার সহপাঠীরা জানিয়েছেন, সালমান বেশ দুষ্টু ছিলেন এবং প্রায়ই নানা কাণ্ড ঘটাতেন।
সালমান খান নিজেও সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, তিনি স্কুলে প্রায়ই শিক্ষকদের হাতে মার খেতেন এবং শাস্তি পেতেন। তবে তিনি স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হননি। যদিও তার অনেক সহপাঠী ভেবেছিল, কোনো না কোনোদিন হয়তো তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
শৈশবে সালমান ছিলেন অত্যন্ত চঞ্চল। বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি, খেলাধুলায় মেতে থাকা, ক্লাস ফাঁকি দেওয়া—এসব তার কাছে ছিল স্বাভাবিক। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “আমার স্কুলজীবন মানেই দুষ্টুমি। আমি কখনো শান্ত ছেলে ছিলাম না।” এ কারণেই অনেকবার তাকে বাবা-মা এবং শিক্ষকদের বকাঝকা শুনতে হতো।
অনেক সময় সংবাদমাধ্যমে বা গুজবে শোনা যায় যে সালমান খান নাকি স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য বা প্রমাণ নেই। বরং বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি শাস্তি পেয়েছিলেন, মার খেয়েছিলেন, তবে কখনো স্কুল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত হননি।
স্কুল শেষ করে সালমান খান মুম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। তবে পড়াশোনায় মনোযোগ না থাকায় তিনি কলেজ সম্পূর্ণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক থাকায় ধীরে ধীরে বলিউডে পা রাখেন।
১৯৮৮ সালে “বিবি হো তো অ্যায়সি” সিনেমার মাধ্যমে সালমানের বলিউডে অভিষেক ঘটে। তবে নায়ক হিসেবে তার প্রথম সাফল্য আসে ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “ম্যায়নে পেয়ার কিয়া” ছবির মাধ্যমে। সেই থেকেই শুরু হয় তার দীর্ঘ ক্যারিয়ার, যা আজও বলিউডে শীর্ষস্থানে রয়েছে।