নারীরা পরিবারের পাশাপাশি সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু ব্যস্ততা ও দায়িত্বের চাপে নিজেদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে অনেক সময় সচেতন থাকতে পারেন না। অথচ কিছু সমস্যায় সতর্ক না হলে সেগুলো ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই প্রতিটি মেয়ের উচিত নিজের শরীর, মন এবং জীবনযাত্রা সম্পর্কে যত্নবান হওয়া। নিচে এমন ৫টি সমস্যার কথা তুলে ধরা হলো, যেগুলোতে মেয়েদের অবশ্যই সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
১. শারীরিক স্বাস্থ্য ও স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সমস্যা
মেয়েদের স্বাস্থ্যের বড় একটি অংশ জুড়ে থাকে প্রজনন ও স্ত্রীরোগজনিত বিষয়। অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত ব্যথা, অস্বাভাবিক স্রাব বা হরমোনজনিত সমস্যা হলে অবহেলা করা ঠিক নয়। এগুলো অনেক সময় পিসিওএস, থাইরয়েড কিংবা জরায়ুর রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
২. মানসিক চাপ ও ডিপ্রেশন
অনেক মেয়ে পড়াশোনা, সংসার, চাকরি বা সামাজিক চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এ সময় তারা একাকিত্ব, হতাশা বা ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন। বিষয়টি ছোট করে দেখা উচিত নয়, কারণ মানসিক চাপ শারীরিক সমস্যারও জন্ম দেয়। তাই মন খারাপ হলে কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং প্রয়োজনে কাউন্সেলিং নেওয়া প্রয়োজন।
৩. অনলাইন হয়রানি ও নিরাপত্তা
ডিজিটাল যুগে মেয়েরা অনলাইনে নানা ধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ভুয়া প্রোফাইল, হ্যাকিং, ব্ল্যাকমেইল বা অনলাইন বুলিং জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই মেয়েদের উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সতর্ক থাকা, ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি অযথা শেয়ার না করা এবং হয়রানির শিকার হলে আইনগত সহায়তা নেওয়া।
৪. শারীরিক নিরাপত্তা
বাসে, রাস্তায় বা কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের শারীরিক হয়রানি বা ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয় প্রায়ই। এ জন্য আত্মরক্ষার কৌশল শেখা, জরুরি নম্বর জানা এবং সচেতন থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার ও সমাজকেও মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হতে হবে।
৫. পুষ্টিহীনতা ও জীবনযাপন
অনেক মেয়েই ব্যস্ততার কারণে ঠিকমতো খেতে পারেন না বা ডায়েটের নামে শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করেন। এর ফলে রক্তশূন্যতা, হাড় দুর্বল হওয়া বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রতিটি মেয়ের উচিত যথেষ্ট ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া।
মেয়েদের সুস্থ ও নিরাপদ থাকা শুধু ব্যক্তিগত জীবনের জন্য নয়, বরং পরিবার ও সমাজের কল্যাণের জন্যও অত্যন্ত জরুরি। তাই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং জীবনযাত্রা নিয়ে প্রতিটি মেয়েকেই সচেতন হতে হবে। সতর্ক থাকলে ভবিষ্যতের বড় সমস্যাগুলো অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।