ঘরে মুরগির মাংস প্রায় প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহৃত হয়। তবে সাধারণ তরকারি বা ভাজি ছাড়াও মুরগির মাংস দিয়ে ভিন্ন স্বাদের খাবার তৈরি করা যায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো মুরগির কিমা। এটি শুধু ভাত, রুটি কিংবা পরোটার সঙ্গে নয়, বিভিন্ন রেসিপিতেও ব্যবহার করা যায়। মুরগির কিমা তৈরি করা যেমন সহজ, তেমনি এটি পুষ্টিকরও বটে। তবে অনেকেই জানেন না সঠিকভাবে কিমা তৈরি করার ধাপগুলো কী। আজকের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো মুরগির মাংসের কিমা তৈরির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ও প্রস্তুত প্রণালী।
মুরগির কিমার উপকরণ-
কিমা তৈরির জন্য প্রথমেই দরকার হয় টাটকা মুরগির মাংস। সাধারণত ব্রয়লার কিংবা দেশি মুরগির মাংস ব্যবহার করা যায়। তবে দেশি মুরগির কিমায় স্বাদ বেশি হয়। প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হলো—
মুরগির মাংস (হাড় ছাড়া) – ৫০০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি – ২ কাপ
রসুন বাটা – ১ চা চামচ
আদা বাটা – ১ চা চামচ
কাঁচা মরিচ কুচি – ৪-৫টি
টমেটো কুচি – ১ কাপ
গুঁড়া মরিচ – ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়া – আধা চা চামচ
জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ
গরম মসলা – আধা চা চামচ
তেল – পরিমাণমতো
লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
ধনেপাতা কুচি – সাজানোর জন্য
কিমা তৈরির প্রাথমিক ধাপ
প্রথমেই মুরগির মাংস ভালোভাবে ধুয়ে হাড় আলাদা করে নিতে হবে। মাংস ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ব্লেন্ডার বা মাংস কিমা করার মেশিনে দিতে হবে। একেবারে মিহি করে কিমা করতে হবে, তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত ব্লেন্ড না হয়ে পেস্টে পরিণত না হয়। চাইলে হাতে ছুরি দিয়েও মিহি করে কেটে কিমার মতো তৈরি করা যায়।
কিমা রান্নার প্রক্রিয়া-
১. প্রথমে কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিতে হবে।
২. এরপর রসুন-আদা বাটা দিয়ে নেড়ে নিতে হবে যতক্ষণ না কাঁচা গন্ধ চলে যায়।
৩. টমেটো কুচি দিয়ে নরম হওয়া পর্যন্ত রান্না করতে হবে।
৪. এবার কিমা করা মুরগির মাংস কড়াইতে দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে।
৫. কষানোর সময় গুঁড়া মরিচ, হলুদ, জিরা গুঁড়া, লবণ দিয়ে নেড়ে নিতে হবে।
৬. মাংস কষানোর সময় অল্প গরম পানি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যাতে কিমা নরম হয়।
৭. শেষে গরম মসলা দিয়ে নামানোর আগে ধনেপাতা কুচি দিয়ে মিশিয়ে নিলেই প্রস্তুত হয়ে যাবে সুস্বাদু মুরগির কিমা।
পরিবেশনের ধরন-
মুরগির কিমা সাধারণত ভাত, রুটি, পরোটা কিংবা নানরুটির সঙ্গে খাওয়া যায়। এছাড়া কিমা দিয়ে সিঙ্গারা, সমুচা, কাটলেট, পরোটা রোল, স্যান্ডউইচ বা পাস্তা তৈরি করা যায়।
পুষ্টিগুণ-
মুরগির কিমায় প্রচুর প্রোটিন থাকে, যা শরীরের পেশি গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া এতে ভিটামিন বি, আয়রন, ফসফরাস এবং সেলেনিয়াম থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মুরগির মাংসের কিমা শুধু সুস্বাদুই নয়, এটি একটি পুষ্টিকর খাবারও। সহজ উপকরণ ও সামান্য সময় দিয়ে যে কেউ ঘরে বসে মজাদার কিমা রান্না করতে পারেন। তাই একঘেয়ে মুরগির তরকারি খাওয়ার পরিবর্তে মাঝে মাঝে কিমা রান্না করলে পরিবারের সবাই ভিন্ন স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।