সিগারেটের মধ্যে থাকা নিকটিন ধূমপায়ীদের জন্য এক মারাত্মক ঝুঁকি। শুধু ধূমপায়ীর শরীরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, পারিপার্শ্বিক মানুষকেও প্রভাবিত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিকটিন আসক্তি তৈরি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে হার্ট, ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই সিগারেটের নিকটিনের পরিমাণ ও তার প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।
সিগারেটে নিকটিনের পরিমাণ-
প্রতিটি সিগারেটে নিকটিনের পরিমাণ এক রকম নয়। সাধারণত একটি স্ট্যান্ডার্ড সিগারেটে প্রায় ০.৫ মিলিগ্রাম থেকে ২ মিলিগ্রাম নিকটিন থাকে। তবে এটি নির্ভর করে—
সিগারেটের ব্র্যান্ড ও ধরন-
লাইট, মিডিয়াম বা হেভি ক্যালোরি হিসেবে পরিচিত কিনা
ফিল্টার এবং মিশ্রণের ধরণ-
ধূমপানের সময়, এই নিকটিনের একটি অংশই রক্তে প্রবেশ করে এবং শরীরে আসক্তি সৃষ্টি করে।
নিকটিনের শরীরে প্রভাব-
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, নিকটিন শুধু আসক্তি তৈরি করে না, বরং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে সরাসরি প্রভাবিত করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
হৃদরোগ ও রক্তচাপ বৃদ্ধি: নিকটিন রক্তনালীর সংকোচন ঘটায়, যার ফলে রক্তচাপ ও হার্টবিট বেড়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
ফুসফুসের সমস্যা: ক্রনিক ব্রংকাইটিস, COPD এবং ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
আসক্তি সৃষ্টি: ব্রেইনে ডোপামিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা সুখানুভূতি দেয় এবং নিয়মিত ধূমপানের আসক্তি তৈরি করে।
হজম ও ত্বকের প্রভাব: হজম ক্ষমতা কমে এবং ত্বক আগেভাগেই শুষ্ক ও বলিরেখাযুক্ত হয়ে যায়।
শিশু ও কিশোরদের জন্য ঝুঁকি-
পরিবেশে ধোঁয়া বা সিগারেটের নিকটিন শ্বাস নেওয়াও বিপজ্জনক। শিশু বা কিশোরদের মধ্যে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা, অ্যালার্জি এবং মনোযোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ধূমপায়ীদের উচিত শিশুদের কাছাকাছি ধোঁয়া এড়িয়ে চলা।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ-
ডাক্তাররা বলছেন, নিকটিন আসক্তি শুধু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটি পারিপার্শ্বিকদের জন্যও হুমকি সৃষ্টি করে। ধূমপান না করলে হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়া নিকটিন ছাড়ার জন্য ই-সিগারেট, নিকটিন গাম বা প্যাচের মতো বিকল্পগুলো রয়েছে, তবে সঠিক ব্যবহারের প্রয়োজন।
প্রতিটি সিগারেটে প্রায় ০.৫–২ মিলিগ্রাম নিকটিন থাকে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য ধূমপান এড়ানোই একমাত্র নিরাপদ উপায়। বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করে বলেন, নিয়মিত ধূমপান ছাড়াই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা সম্ভব এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে।