সঠিক নিয়মে গ্রীণ টি না খেলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকতে পারে

অতিথি লেখক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
সঠিক নিয়মে গ্রীণ টি না খেলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকতে পারে
সঠিক নিয়মে গ্রীণ টি না খেলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকতে পারে

বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের কাছে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত পানীয়গুলোর একটি হলো গ্রীণ টি বা সবুজ চা। চিকিৎসক থেকে শুরু করে পুষ্টিবিদরা সবাই গ্রীণ টিকে দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে ওজন নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তি বাড়ানো, মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখা এবং ত্বকের যত্নে গ্রীণ টির উপকারিতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, সঠিক নিয়ম মেনে গ্রীণ টি না খেলে এর উপকার পাওয়া যায় না বরং ক্ষতির ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। তাই প্রশ্ন উঠেছে—গ্রীণ টি পান করার সঠিক নিয়ম আসলে কী?

খালি পেটে নয়, খাবারের পরই সেরা সময়-

বিশেষজ্ঞদের মতে, খালি পেটে গ্রীণ টি খেলে গ্যাস্ট্রিক বা বুক জ্বালা সমস্যার আশঙ্কা থাকে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে সরাসরি গ্রীণ টি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গ্রীণ টি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো খাবারের আধা ঘণ্টা পর। এতে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরাতে সক্ষম হয়। আবার বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে গ্রীণ টি খেলে ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর সতেজ থাকে। তবে রাতে ঘুমানোর আগে গ্রীণ টি খাওয়া অনুচিত, কারণ এতে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

দিনে কতবার খাওয়া উচিত-

গবেষকরা জানান, গ্রীণ টির উপকারিতা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কাপ যথেষ্ট। এর বেশি খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি, পানিশূন্যতা এমনকি ঘুমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ১ কাপ গ্রীণ টি নিরাপদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কীভাবে বানাতে হবে-

গ্রীণ টির উপকার পেতে সঠিকভাবে বানানোও জরুরি। এজন্য প্রথমে পানি ৮০ থেকে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম করতে হবে। এরপর প্রতি কাপের জন্য ১ চা চামচ গ্রীণ টি পাতা বা একটি টি-ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। ২–৩ মিনিট রেখে চা ছেঁকে নিতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা চিনি বা দুধ না দিয়ে গ্রীণ টি খাওয়ার পরামর্শ দেন। চাইলে সামান্য লেবু বা মধু যোগ করা যেতে পারে।

কারা এড়িয়ে চলবেন-

চিকিৎসকদের মতে, গ্রীণ টি সবার জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা আলসার আছে, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। আবার রক্তচাপ কম থাকে এমন ব্যক্তিদের অতিরিক্ত গ্রীণ টি খাওয়া উচিত নয়। গর্ভবতী নারীদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে সীমাবদ্ধ থাকা জরুরি। আর যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে, তাদের রাতে গ্রীণ টি না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

উপকারিতার বিস্তৃত তালিকা-

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় গ্রীণ টির অসংখ্য উপকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। নিয়ম মেনে পান করলে এটি—

শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে,

হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে,

শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাড়িয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়,

ত্বককে উজ্জ্বল রাখে ও বার্ধক্য বিলম্বিত করে,

মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখে।

সবশেষে বলা যায়, গ্রীণ টি পান করার সঠিক নিয়ম হলো দিনে সর্বোচ্চ ২–৩ কাপ, খাবারের আধা ঘণ্টা পর, চিনি ও দুধ ছাড়া পান করা। খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে এটি খাওয়া উচিত নয়। সঠিক নিয়মে পান করলে গ্রীণ টি শরীরের জন্য উপকারী হলেও, ভুলভাবে খেলে এটি উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ভোক্তাদের সচেতন থেকে পরিমিত পরিমাণে গ্রীণ টি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সঠিক নিয়মে গ্রীণ টি না খেলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকতে পারে

সঠিক নিয়মে গ্রীণ টি না খেলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকতে পারে
সঠিক নিয়মে গ্রীণ টি না খেলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকতে পারে

বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের কাছে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত পানীয়গুলোর একটি হলো গ্রীণ টি বা সবুজ চা। চিকিৎসক থেকে শুরু করে পুষ্টিবিদরা সবাই গ্রীণ টিকে দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে ওজন নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তি বাড়ানো, মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখা এবং ত্বকের যত্নে গ্রীণ টির উপকারিতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, সঠিক নিয়ম মেনে গ্রীণ টি না খেলে এর উপকার পাওয়া যায় না বরং ক্ষতির ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। তাই প্রশ্ন উঠেছে—গ্রীণ টি পান করার সঠিক নিয়ম আসলে কী?

খালি পেটে নয়, খাবারের পরই সেরা সময়-

বিশেষজ্ঞদের মতে, খালি পেটে গ্রীণ টি খেলে গ্যাস্ট্রিক বা বুক জ্বালা সমস্যার আশঙ্কা থাকে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে সরাসরি গ্রীণ টি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গ্রীণ টি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো খাবারের আধা ঘণ্টা পর। এতে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরাতে সক্ষম হয়। আবার বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে গ্রীণ টি খেলে ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর সতেজ থাকে। তবে রাতে ঘুমানোর আগে গ্রীণ টি খাওয়া অনুচিত, কারণ এতে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

দিনে কতবার খাওয়া উচিত-

গবেষকরা জানান, গ্রীণ টির উপকারিতা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কাপ যথেষ্ট। এর বেশি খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি, পানিশূন্যতা এমনকি ঘুমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ১ কাপ গ্রীণ টি নিরাপদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কীভাবে বানাতে হবে-

গ্রীণ টির উপকার পেতে সঠিকভাবে বানানোও জরুরি। এজন্য প্রথমে পানি ৮০ থেকে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম করতে হবে। এরপর প্রতি কাপের জন্য ১ চা চামচ গ্রীণ টি পাতা বা একটি টি-ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। ২–৩ মিনিট রেখে চা ছেঁকে নিতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা চিনি বা দুধ না দিয়ে গ্রীণ টি খাওয়ার পরামর্শ দেন। চাইলে সামান্য লেবু বা মধু যোগ করা যেতে পারে।

কারা এড়িয়ে চলবেন-

চিকিৎসকদের মতে, গ্রীণ টি সবার জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা আলসার আছে, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। আবার রক্তচাপ কম থাকে এমন ব্যক্তিদের অতিরিক্ত গ্রীণ টি খাওয়া উচিত নয়। গর্ভবতী নারীদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে সীমাবদ্ধ থাকা জরুরি। আর যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে, তাদের রাতে গ্রীণ টি না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

উপকারিতার বিস্তৃত তালিকা-

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় গ্রীণ টির অসংখ্য উপকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। নিয়ম মেনে পান করলে এটি—

শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে,

হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে,

শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাড়িয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়,

ত্বককে উজ্জ্বল রাখে ও বার্ধক্য বিলম্বিত করে,

মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখে।

সবশেষে বলা যায়, গ্রীণ টি পান করার সঠিক নিয়ম হলো দিনে সর্বোচ্চ ২–৩ কাপ, খাবারের আধা ঘণ্টা পর, চিনি ও দুধ ছাড়া পান করা। খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে এটি খাওয়া উচিত নয়। সঠিক নিয়মে পান করলে গ্রীণ টি শরীরের জন্য উপকারী হলেও, ভুলভাবে খেলে এটি উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ভোক্তাদের সচেতন থেকে পরিমিত পরিমাণে গ্রীণ টি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত