দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক বক্তব্য ও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সম্পর্কের টানাপোড়েন চরমে উঠেছে। ভারতের সেনা ও বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারির জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে—“এবার সংঘাত বাঁধলে পাকিস্তান আর সংযম দেখাবে না।”
শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই সতর্কবার্তা দেয়। রোববার (৫ অক্টোবর) এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
এর একদিন আগে ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী ইসলামাবাদকে উদ্দেশ করে বলেন, “পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতা চালিয়ে যায়, তবে তার অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে। এবার ভারত আর সংযম দেখাবে না।”
এরও আগে বৃহস্পতিবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, “পাকিস্তান যদি সির ক্রিক সীমান্তে কোনো অ্যাডভেঞ্চার করে, তবে ইতিহাস ও ভূগোল বদলে দিতে পারে এমন কঠোর জবাব দেবে ভারত।”
‘সির ক্রিক’ ভারতের গুজরাট ও পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের মধ্যে ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বিতর্কিত উপসাগরীয় অঞ্চল, যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
ভারতের এসব মন্তব্যের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানায়, “ভারতের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আসা উসকানিমূলক ও যুদ্ধংদেহী বক্তব্যে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ভবিষ্যতে সংঘাত বাঁধলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যদি আবার সংঘাত শুরু হয়, পাকিস্তান কোনো সংযম দেখাবে না। প্রতিপক্ষের ভূখণ্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পাল্টা হামলা চালানোর সক্ষমতা ও প্রস্তুতি পাকিস্তানের আছে। এবার আমরা ভারতের তথাকথিত ভূগোলগত নিরাপত্তার ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দেব।”
এর আগে জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে চলতি বছরের মে মাসে দুই দেশের মধ্যে চার দিনের সংঘাত হয়। ভারত হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে অভিযান চালায়। জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’ চালিয়ে পাল্টা হামলা করে।
চার দিনের সেই হামলা ও পাল্টা হামলার পর গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতা করে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।