বিশ্বে অর্থনীতিতে চলছে মন্দা। রাজনীতির সাথে যেন অর্থনৈতিক ও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর দখলে, আর তাইতো পটো ম্যাকসহ ইত্যাদির তীরের মন্দার হাওয়া লেগেছে পুরো পৃথিবী জুড়েই। অর্থনীতি সামাল দিতে গিয়ে কোথাও কোথাও যেন পুড়ে যাচ্ছে নিজেদেরই ঘর, ওয়াশিংটনের কঠোর মুদ্রা নীতিতেও প্রভৃতি বাড়িয়ে নেয়ার প্রশ্নে বৃদ্ধ মার্কিনীরা।
যখন পুরোপুরি উৎপাদন মুখী ৭০ দশকের দেশগুলো জোর কদমে শিল্পোনের পথে তখন এক ভয়াবহ মন্দার মুখে বিশ্ব অর্থনীতি।
সে সময় সার্বিক জিডিপি প্রতি বছরই বাড়ছিল প্রায় ৩.৫ শতাংশ হারে। এরপর পরপরই প্রশান্ত মহাসাগরের পানি গড়িয়েছে বহুদূর। নানা সময়ের সাক্ষী এই বিশ্ব অর্থনীতি আবারও মন্দার পথে হাঁটতে শুরু করেছে।
ডামুকস নামে একজন ব্যক্তি করেছিলেন ভবিষ্যৎ বাণী, আর অর্থনৈতিক নিয়ে রাশিফলের চিত্রটা বারবারই যেন সামনে নিয়ে আসে- আই এম এফ’র সংস্থাটির দাবি অংকের মারপ্যাচে নয় বরং সার্বিক সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় গেল গত বছর প্রবৃত্তির ৬.১% আশা করা হলেও এবছর তা নেমে আসতে পারে ৩.২% মানে প্রায় অর্ধেকে, আর আগামী বছর তা আরও কমে নামতে পারে ২.৯ নয় শতাংশে।
আর এর ফলে টম এর উপর নির্ভর করে চলা দেশগুলি যেন এখন হিমশিম খাচ্ছে অর্থনৈতিক সামলাতে! কয়েকটা দেশে তো জাতীয় রিজার্ভ ঐ থেমেছে একদম তলানিতে।
যেমন-
পাকিস্তানের মুদ্রার মান কমেছে ১৮%
ভারতে মুদ্রার মান কমেছে ১৭%
বাংলাদেশে মুদ্রার মান কমেছে ১১%
রাশিয়ায় মুদ্রার মান কমেছে ১৭%
আফগানিস্তানে মুদ্রার মান কমেছে ০.২%
যখন মার্কিন ডলার উন্নত হয় তখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য খরচ বাড়িয়ে দেয়, আর তার সাথে সাথে মুদ্রাস্মৃতি কেউ বাড়িয়ে তোলে।
অদৃশ্য এক ভাইরাসের ছোবলে পুরো বিশ্ব দখল করে নেওয়া চীনের অর্থনীতিতে ও গেছে থমকে। এই দেশটির উপর ব্যাপক নির্ভরতাই হুমকির মুখে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ফলাফল ৪০ বছরের ইতিহাস পাল্টে সবচাইতে কম ৩.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পথে দেশটি।
আর এসব মাতাল হাওয়ায় যখন বেসামাল তখন চরম ক্ষতির মুখে ইউরোপ আর সাথে মরার ওপর খাড়ার ঘা ইউক্রেন যুদ্ধ। জার্মানিতে এ বছর দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। আর সরিষ রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় আফ্রিকার কয়েকটি দেশেও বেড়ে গেছে ক্ষুধার্ত শিশু ও বৃদ্ধর সংখ্যা।
জাতিসংঘের কৃষি বিষয়ক সংস্থা ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অরগানাইজেশনের (এফএও) প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে অক্টোবর এই ৪ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম ১২ শতাংশ, সয়াবিনের দাম ১৮ শতাংশ, চিনির দাম ২২ শতাংশ কমেছে। এছাড়া ডালের দাম ৬ শতাংশ, ডিমের দাম ৮ শতাংশ কমেছে। তবে এক বছরের হিসাবে খাদ্যপণ্যের দাম এখনও গড়ে ১২ শতাংশ বেশি রয়েছে।
জুনে আমদানির জন্য ডলারের দাম ছিল ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা। বর্তমানে প্রতি ডলার ১০৭ টাকা। ওই সময়ে প্রতি ডলারের দাম বেড়েছে ১৩ টাকা ৫৫ পয়সা। অর্থাৎ টাকার মান কমেছে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
করোনার পর খাদ্যপণ্যের দাম এক দফা বেড়েছে। এর ধকল কাটিয়ে উঠার আগেই ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর প্রভাবে মার্চ থেকে খাদ্যপণ্যের দাম আরও লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকে। ফলে দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়তে থাকে।
অনামিকা চৌধুরী
এজেড নিউজ বিডি ডটকম