পিঠা গ্ৰামীণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার। সকালের কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের মৃদু হাসিতে নতুন পিঠার ঘ্রাণে সুবাসিত হয়ে চারদিক। গ্ৰামের বাড়িতে অতিথির আগমন উপলক্ষে বাহারি পিঠার আয়োজন করা হয়। গ্ৰামীণ সমাজে শীতের ভাপা পিঠা অনেক জনপ্রিয়। কালের বিবর্তনে নান্দনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে এসব ঐতিহ্য। তাই, হারানো সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে সম্প্রতি বাহারি পিঠার আয়োজনে মেতে উঠেছিল ৩২ একরের প্রাঞ্জল গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) ক্যাম্পাস। পঞ্চমবারের মতো পিঠা উৎসবে শিক্ষার্থীদের আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো।
শিক্ষার্থীদের নিজস্ব হাতে তৈরি হয়েছিল আকর্ষণীয় মুখরোচক পিঠা। উৎসবে শিক্ষার্থীরা নারকেল পুলি, ইলিশ পিঠা, দুধ পুলি, ভাপা, পোয়া, পাটিসাপটা, ঘর কন্যা, কুটুম, হাতকুলি সহ মেলায় বাহারি পিঠা বিক্রি করে। তাইতো বলা হয়ে থাকে শীতের পিঠা ভারি মিঠা। পাশাপাশি হরেক রকমের মিষ্টি, কেক, চা ও লাড্ডুর আয়োজন ছিল। শিক্ষার্থীদের আয়োজনে চুড়ি, ফিতার ও ফুলের দোকান বসানো হয়েছিল।
এছাড়াও, কেন্দ্রীয় মাঠের পিঠা ঘরগুলো বাহারি নামে সজ্জিত ছিল। টোনাটুনির পিঠাঘর, ঢেঁকির বৈঠকখানা, নাইওর, পিঠা জাদুঘর, পৌষের প্রেম সহ ২৭টি স্টল। শিক্ষার্থীরা বাঁশের চাটাই, খড়কুটো, কলাগাছ দিয়ে স্টলগুলো সাজিয়ে গ্রামীণ আবহের সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীদের তৈরি আলপনায় ফুটে উঠেছিল গ্ৰামীণ সমাজের চিত্র। এছাড়াও, বেলুন, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে সজ্জ্বিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
পিঠা উৎসব যেমন বাঙালি জাতির হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে মনে করিয়ে দেয়। ঠিক তেমনি শৈশবের সময় শীতের দিনে সবাই মিলে পিঠা তৈরির দৃশ্যপটকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তাইতো কবি সুফিয়া কামালের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে, ‘পৌষ-পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে, আরও উল্লাস বাড়িয়াছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে।’
লেখা: মোঃ আনসারুজ্জামান সিয়াম
শিক্ষার্থী, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়।