মেয়েশিশুর নেতৃত্বসুলভ আচরণ এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশে একজন বাবা অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। একটি মেয়েশিশু গুরুত্ব আশা করে। সে সহমর্মিতা আর শর্তহীন ভালোবাসা চায়। জীবন চলার পথে তারও হার-জিৎ থাকে। সব পরিস্থিতি মোকাবিলায় মেয়েশিশুর মনোজগৎ হওয়া চাই শক্তিশালী। সেজন্য বাবার করণীয়:
মেয়েশিশুকে আত্ননির্ভশীল করে গড়ে তুলতে চাইলে একজন বাবা মেয়েকে চিন্তা করতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে এবং দায়িত্ব গ্রহণ গ্রহণ করতে উৎসাহ দিতে পারেন।
একজন বাবা তার মেয়েশিশুকে অন্য মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পরামর্শ দিতে পারেন। আর শেখাতে পারেন— সে যেন অন্যের বিশ্বাস এবং অন্যের সীমাবদ্ধতাকে বোঝার চেষ্টা করে। প্রয়োজনে অন্যকে সহায়তা করে।
একজন বাবা তার মেয়েশিশুকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণে উৎসাহ দিতে পারেন এবং পাশে থাকতে পারেন। এতে তাদের সহনশীলতা বাড়বে।
মেয়েশিশুর নিজস্ব শক্তি, বুদ্ধিমত্তা এবং স্বকিয়তার বিষয়গুলো একজন বাবার চিহ্নিত করা উচিত। এবং এগুলো ইতিবাচকভাবে বলা উচিত। এতে মেয়েশিশুর নিজেস্ব শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
ছেলে-মেয়ে উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে মেয়েশিশুকে বোঝাতে পারেন।
অন্যের উদ্দেশ্যে, অভিজ্ঞতা এবং হতাশার প্রতি মেয়েশিশুকে সহমর্মী হতে শেখাতে পারেন একজন বাবা।
একজন বাবা তার মেয়েশিশুর স্কুলের পড়া শিখতে সহায়তা করতে পারেন। শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে পারেন এবং জটিল চিন্তা করতে উৎসাহ দিতে পারেন। এতে তার নিজস্ব চিন্তা প্রসারিত হবে।
মেয়েশিশুকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে চাইলে একজন বাবার উচিত তাকে ছোট ছোট বাজেট করতে শেখানো। এরপর বিনিয়োগের গুরুত্বও বোঝানো।
একজন বাবা তার মেয়েশিশুকে শেখাতে পারেন কীভাবে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, কীভাবে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিতে হয় এবং কীভাবে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়।
প্রতিদিনকার ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে গুজব কীভাবে এড়িয়ে চলতে হয় মেয়েশিশুকে শেখাতে পারেন। এবং তাকে বোঝাতে পারেন সে যেন যেকোন কথা সত্য বলে মেনে না নেয়।
মেয়েশিশুকে শেখান সব সম্পর্কেরই একটা সীমা আছে। যেমন— বন্ধুত্বে কিংবা পেশায়। সে যেন নিজেকে সম্মান করে এবং অন্যকে সম্মান দেয়।
মেয়েশিশুকে সমস্যা সমাধান করতে শেখান। এজন্য সমস্যা কেন হচ্ছে তাকে বর্ণনা করতে বলুন। তারপর সম্ভাব্য সমাধানও জানতে চান। সমাধানের জন্য সৃজনশীল চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করুন।
একজন বাবার নেতৃত্বসুলভ আচরণ থাকে। মেয়েকেও নেতৃত্ব বিকাশে সহায়তা দেওয়া উচিত। সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নিজের কমিউনিটি বা বন্ধু-বান্ধবদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলার জন্য তাকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।
ছোট ছোট নতুন কাজে মেয়েশিশুকে যুক্ত করতে পারেন। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
সবশেষে তাকে শর্তহীন ভালোবাসা দিন। তার নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিন। সে যেন নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করতে পারে। তাহলেই ধীরে ধীরে ইতিবাচক ব্যক্তিত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠবে।