জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে যে রূপকল্পের কথা বলা হয়েছে, তা যথাসম্ভব দ্রুত জাতির সামনে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি। পাশাপাশি প্রশাসনের সর্বস্তরে যে শ্লথগতি তা দুর করে অবিলম্বে সরকারের কার্যক্রম গতিশীল করারও আহ্বান জানান দলের নেতারা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেল ৪টায় বিজয়নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, কিছুটা বিলম্বে হলেও জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার প্রদত্ত ভাষণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে এবি পার্টি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সমন্বয় না থাকলে গভীর সংকট সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে দ্রুত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার রূপকল্পের কথা যথাসম্ভব দ্রুত জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে। প্রশাসনের সর্বস্তরে যে শ্লথগতি তা অবিলম্বে দুর করতে হবে। পুলিশ, বিচারাঙ্গন ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদে যোগ্য লোকদের পদায়ন করে সরকারের কার্যক্রমকে গতিশীল না করলে মানুষের মাঝে হতাশা ও অনাস্থার পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লে. কর্ণেল (অবঃ) হেলাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান ও মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একটি ভিশনারী বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা আশা করি, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তিনি বাস্তবিক পদক্ষেপ নেবেন।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। আপনারা আন্দোলন করেন, সমস্যা নেই, কিন্তু শত শত জীবনের বিনিময়ে আমরা যে স্বৈরাচারকে হটিয়ে একটি বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছি, তাদের বিব্রত করে বা ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা ভুলুণ্ঠিত করে প্রতি বিপ্লবের কোনো ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা যদি কেউ করে, তাহলে সেটা আমরা ভালোভাবে নেবো না।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলবো, আপনারা গণতান্ত্রিক পন্থায় দাবি দাওয়া করেন, কিন্তু পতিত স্বৈরাচারের লক্ষ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ার হওয়ার চেষ্টা করবেন না। ছাত্র-জনতা এখনও মাঠে আছে, লক্ষ্য অর্জনের আগ পর্যন্ত মাঠে থাকবে ইনশাআল্লাহ। কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘সরকার উদারতার পরিচয় দিয়েছে। তারা কাজ করার চেষ্টা করছে। আমরা সমর্থন করছি। আশা করি তারা বন্যার্তদের পুনর্বাসনে যথাযথ ভুমিকা রাখবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান সরকার একটি ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। যা অতীতের সকল ধরনের সরকারের চেয়ে ভিন্নতর। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেশকে সামগ্রিকভাবে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করার কারণে এই সরকারের উপর যে দায়-দায়িত্ব এসেছে তা খুবই চ্যালেঞ্জিং। রাষ্ট্র মেরামত ও সংস্কার নিয়ে ছাত্র জনতার দেখা স্বপ্ন যদি বাস্তবায়ন করা না যায়, তাহলে জাতি কখনও ক্ষমা করবে না।
উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, যুবপার্টি মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব কেফায়েত হোসেন তানভীর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমেনা বেগম, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, রুনা হোসাইন, শাহিনুর আক্তার শীলা, মশিউর রহমান মিলু, ফেরদৌসী আক্তার অপি, পল্টন থানার আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।