ইসরায়েলকে সহযোগিতার অভিযোগে ৩৩ জনকে মৃত্যুদন্ড দিলো হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
ইসরায়েলকে সহযোগিতার অভিযোগে ৩৩ জনকে মৃত্যুদন্ড দিলো হামাস

দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় নিজেদের কর্তৃত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত হামাস বিভিন্ন গোষ্ঠীর ওপর দমন অভিযান চালিয়ে অন্তত ৩৩ জনকে হত্যা করেছে। নিহতরা হামাসের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল বলে জানা গেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিপর্যস্ত হামাস যুদ্ধবিরতির পর ধীরে ধীরে তাদের সদস্যদের গাজার রাস্তায় ফিরিয়ে আনছে। তবে পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে—এই আশঙ্কায় তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছে গাজার দুটি নিরাপত্তা সূত্র।

যুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকেই হামাসের নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ করছিল বিভিন্ন গোষ্ঠী। গাজা সিটির এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির পর হামাস বাহিনী ৩৩ জনকে হত্যা করেছে এবং সংঘর্ষে হামাসেরও ছয়জন সদস্য নিহত হয়েছে। নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি কিংবা তারা ইসরায়েলের সমর্থন পাচ্ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয়।

এছাড়া রাফাহ অঞ্চলে সক্রিয় হামাস-বিরোধী নেতা ইয়াসের আবু শাবাবের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। গাজার নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামাস ইতোমধ্যে আবু শাবাবের ঘনিষ্ঠ এক সহযোগীকে হত্যা করেছে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। হামাসের দাবি, আবু শাবাব ইসরায়েলের সহযোগী; তবে তিনি তা অস্বীকার করেছেন।

সোমবার সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশধারী কয়েকজন বন্দুকধারী—তাদের কয়েকজনের মাথায় হামাসের সবুজ ফিতা বাঁধা ছিল। তারা রাস্তার ওপর হাঁটু গেড়ে বসা সাতজনকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করছে। ঘটনাটি সোমবার গাজায় ধারণ করা বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপস্থিত জনতা নিহতদের ‘সহযোগী’ বলে উল্লাস করছিল। তবে রয়টার্স ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

গত মাসেও হামাস-নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল।

অন্যদিকে, সোমবার হামাস দুই বছর আগে ইসরায়েলের হাতে আটক শেষ জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে। এ সময় হামাসের কাসাম ব্রিগেডের সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন, যা গাজায় একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জটিলতাকে আবারও সামনে এনেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও আরও অনেক দেশ হামাসকে নিরস্ত্র করার দাবি জানিয়ে আসছে।

হামাসের গাজা সরকারের মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতা রয়টার্সকে বলেন, তারা কোনো নিরাপত্তা শূন্যতা সৃষ্টি হতে দেবে না এবং জননিরাপত্তা ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। হামাস জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের অস্ত্র সেই রাষ্ট্রের কাছে সমর্পণ করতে প্রস্তুত, তবে গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই নির্ধারিত হওয়া উচিত—কোনো বিদেশি নিয়ন্ত্রণ ছাড়া।

ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক রেহাম ওউদা মনে করেন, হামাসের এই দমন অভিযান ও অবস্থান মূলত তাদের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিরোধীদের ভয় দেখানোর কৌশল। পাশাপাশি হামাস দেখাতে চাইছে যে, তাদের নিরাপত্তা কাঠামো ভবিষ্যতের যেকোনো সরকারে থাকা উচিত, যদিও ইসরায়েল তা মেনে নেবে না।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ইসরায়েলকে সহযোগিতার অভিযোগে ৩৩ জনকে মৃত্যুদন্ড দিলো হামাস

ইসরায়েলকে সহযোগিতার অভিযোগে ৩৩ জনকে মৃত্যুদন্ড দিলো হামাস

দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় নিজেদের কর্তৃত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত হামাস বিভিন্ন গোষ্ঠীর ওপর দমন অভিযান চালিয়ে অন্তত ৩৩ জনকে হত্যা করেছে। নিহতরা হামাসের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল বলে জানা গেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিপর্যস্ত হামাস যুদ্ধবিরতির পর ধীরে ধীরে তাদের সদস্যদের গাজার রাস্তায় ফিরিয়ে আনছে। তবে পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে—এই আশঙ্কায় তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছে গাজার দুটি নিরাপত্তা সূত্র।

যুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকেই হামাসের নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ করছিল বিভিন্ন গোষ্ঠী। গাজা সিটির এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির পর হামাস বাহিনী ৩৩ জনকে হত্যা করেছে এবং সংঘর্ষে হামাসেরও ছয়জন সদস্য নিহত হয়েছে। নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি কিংবা তারা ইসরায়েলের সমর্থন পাচ্ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয়।

এছাড়া রাফাহ অঞ্চলে সক্রিয় হামাস-বিরোধী নেতা ইয়াসের আবু শাবাবের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। গাজার নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামাস ইতোমধ্যে আবু শাবাবের ঘনিষ্ঠ এক সহযোগীকে হত্যা করেছে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। হামাসের দাবি, আবু শাবাব ইসরায়েলের সহযোগী; তবে তিনি তা অস্বীকার করেছেন।

সোমবার সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশধারী কয়েকজন বন্দুকধারী—তাদের কয়েকজনের মাথায় হামাসের সবুজ ফিতা বাঁধা ছিল। তারা রাস্তার ওপর হাঁটু গেড়ে বসা সাতজনকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করছে। ঘটনাটি সোমবার গাজায় ধারণ করা বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপস্থিত জনতা নিহতদের ‘সহযোগী’ বলে উল্লাস করছিল। তবে রয়টার্স ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

গত মাসেও হামাস-নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল।

অন্যদিকে, সোমবার হামাস দুই বছর আগে ইসরায়েলের হাতে আটক শেষ জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে। এ সময় হামাসের কাসাম ব্রিগেডের সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন, যা গাজায় একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জটিলতাকে আবারও সামনে এনেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও আরও অনেক দেশ হামাসকে নিরস্ত্র করার দাবি জানিয়ে আসছে।

হামাসের গাজা সরকারের মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতা রয়টার্সকে বলেন, তারা কোনো নিরাপত্তা শূন্যতা সৃষ্টি হতে দেবে না এবং জননিরাপত্তা ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। হামাস জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের অস্ত্র সেই রাষ্ট্রের কাছে সমর্পণ করতে প্রস্তুত, তবে গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই নির্ধারিত হওয়া উচিত—কোনো বিদেশি নিয়ন্ত্রণ ছাড়া।

ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক রেহাম ওউদা মনে করেন, হামাসের এই দমন অভিযান ও অবস্থান মূলত তাদের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিরোধীদের ভয় দেখানোর কৌশল। পাশাপাশি হামাস দেখাতে চাইছে যে, তাদের নিরাপত্তা কাঠামো ভবিষ্যতের যেকোনো সরকারে থাকা উচিত, যদিও ইসরায়েল তা মেনে নেবে না।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত