শ্রীলংকার এক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর

আকাশ ইসলাম ডেস্ক এডিটর, ঢাকা
শ্রীলংকার এক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর
শ্রীলংকার এক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর

শ্রীলংকা ভারতের দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের কোলে অবস্থিত এক ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র। আয়তনে ছোট হলেও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, প্রাচীন সভ্যতা, সমুদ্র সৈকতের মায়া আর পাহাড়ি চা-বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য মিলিয়ে শ্রীলংকা আজ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। পর্যটকদের কাছে এই দেশ পরিচিত “ইন্ডিয়ান ওশেনের মুক্তা” নামে, আর সত্যিই যেন মুক্তার মতোই ঝলমলে এর প্রতিটি প্রান্ত।

শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো থেকে শুরু হয় যেকোনো ভ্রমণ। সমুদ্রতীর ঘেঁষে বিস্তৃত এই শহরটি একদিকে আধুনিক স্থাপত্যে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে ঔপনিবেশিক স্থাপনার ঐতিহ্য এখনো বহন করে চলেছে। গলে ফেস গ্রীন, স্বাধীনতা চত্বর আর কলম্বো ন্যাশনাল মিউজিয়াম পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। আর এখানকার বাজার, ক্যাফে ও সাগরপাড়ের হাঁটার পথ যেন ভ্রমণ পিপাসুদের মন ভরে দেয়।

শ্রীলংকার আরেক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর। পাহাড়ঘেরা এই শহরটি শ্রীলংকার ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক কেন্দ্র। এখানে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত “Temple of the Tooth”, যেখানে গৌতম বুদ্ধের একটি দন্তাবশেষ সংরক্ষিত আছে। প্রতি বছর হাজার হাজার বৌদ্ধ ভক্ত এখানে আসেন প্রার্থনার জন্য। ক্যান্ডি হ্রদ ঘিরে সন্ধ্যায় হাঁটলে পাহাড়ি হাওয়ার সঙ্গে মিশে যায় এক শান্ত সৌন্দর্যের স্পর্শ।

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য শ্রীলংকার দক্ষিণাঞ্চল সত্যিই স্বপ্নের রাজ্য। গলে ফোর্ট ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহ্যবাহী এই শহরটি এখন এক জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। ডাচ ও ব্রিটিশ স্থাপত্য, পুরনো রাস্তাঘাট, সমুদ্রের ধারে কাফে সব মিলিয়ে যেন ইউরোপীয় সৌন্দর্যের এক ঝলক।

অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে গেলে দেখা মিলবে চা-বাগানের অসীম সৌন্দর্য। নুয়ারা এলিয়া বা “লিটল ইংল্যান্ড” নামে পরিচিত এই জায়গাটি যেন ছবির মতো সুন্দর। চারদিকে সবুজ চা-বাগান, কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়, আর ঠান্ডা হাওয়া সব মিলিয়ে এটি এক পরিপূর্ণ প্রশান্তির জায়গা। এখানকার চা বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত “সিলন টি” নামে, যার স্বাদ ভ্রমণকারীরা উপভোগ করতে পারেন চা কারখানায় গিয়ে।

প্রাণীপ্রেমীদের জন্য ইয়ালা ন্যাশনাল পার্ক এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। এখানে রয়েছে হাতি, চিতা, ময়ূর, মগর, এমনকি বিরল প্রজাতির পাখিও। সাফারি গাড়িতে করে পুরো পার্ক ঘুরে দেখা এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।

ভ্রমণের শেষে দক্ষিণ উপকূলে গিয়ে মিরিসা বিচ বা বেনটোটা বিচে সূর্যাস্ত দেখা যেন এক পরম আনন্দের অনুভূতি। নীলাভ সমুদ্র, সোনালি বালু আর শান্ত ঢেউয়ের ছন্দে এখানে হারিয়ে যায় সময়ের হিসাব।

খাবারের দিক থেকেও শ্রীলংকা বেশ সমৃদ্ধ। নারকেল দুধে রান্না করা সীফুড, স্পাইসি কারি, ‘হপারস’ ও ‘কোত্তু রোটি’ সবই মুখরোচক ও বৈচিত্র্যময়।

বাংলাদেশ থেকে শ্রীলংকা যেতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘণ্টা। ভিসা পাওয়া সহজ, আর স্থানীয়দের আতিথেয়তা মন ছুঁয়ে যায়। পর্যটকদের জন্য দেশটি নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল।

শ্রীলংকা শুধু একটি দেশ নয়, এটি এক অনুভূতি যেখানে ইতিহাস, প্রকৃতি আর আতিথেয়তা মিলে গড়ে তুলেছে অনন্য এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। পাহাড়, সমুদ্র, চা-বাগান আর মানুষের হাসিতে ভরা এই দেশ প্রতিটি ভ্রমণকারীর মনে চিরস্থায়ী স্মৃতি হয়ে থাকে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শ্রীলংকার এক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর

শ্রীলংকার এক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর
শ্রীলংকার এক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর

শ্রীলংকা ভারতের দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের কোলে অবস্থিত এক ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র। আয়তনে ছোট হলেও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, প্রাচীন সভ্যতা, সমুদ্র সৈকতের মায়া আর পাহাড়ি চা-বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য মিলিয়ে শ্রীলংকা আজ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। পর্যটকদের কাছে এই দেশ পরিচিত “ইন্ডিয়ান ওশেনের মুক্তা” নামে, আর সত্যিই যেন মুক্তার মতোই ঝলমলে এর প্রতিটি প্রান্ত।

শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো থেকে শুরু হয় যেকোনো ভ্রমণ। সমুদ্রতীর ঘেঁষে বিস্তৃত এই শহরটি একদিকে আধুনিক স্থাপত্যে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে ঔপনিবেশিক স্থাপনার ঐতিহ্য এখনো বহন করে চলেছে। গলে ফেস গ্রীন, স্বাধীনতা চত্বর আর কলম্বো ন্যাশনাল মিউজিয়াম পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। আর এখানকার বাজার, ক্যাফে ও সাগরপাড়ের হাঁটার পথ যেন ভ্রমণ পিপাসুদের মন ভরে দেয়।

শ্রীলংকার আরেক অনন্য আকর্ষণ হলো ক্যান্ডি শহর। পাহাড়ঘেরা এই শহরটি শ্রীলংকার ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক কেন্দ্র। এখানে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত “Temple of the Tooth”, যেখানে গৌতম বুদ্ধের একটি দন্তাবশেষ সংরক্ষিত আছে। প্রতি বছর হাজার হাজার বৌদ্ধ ভক্ত এখানে আসেন প্রার্থনার জন্য। ক্যান্ডি হ্রদ ঘিরে সন্ধ্যায় হাঁটলে পাহাড়ি হাওয়ার সঙ্গে মিশে যায় এক শান্ত সৌন্দর্যের স্পর্শ।

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য শ্রীলংকার দক্ষিণাঞ্চল সত্যিই স্বপ্নের রাজ্য। গলে ফোর্ট ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহ্যবাহী এই শহরটি এখন এক জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। ডাচ ও ব্রিটিশ স্থাপত্য, পুরনো রাস্তাঘাট, সমুদ্রের ধারে কাফে সব মিলিয়ে যেন ইউরোপীয় সৌন্দর্যের এক ঝলক।

অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে গেলে দেখা মিলবে চা-বাগানের অসীম সৌন্দর্য। নুয়ারা এলিয়া বা “লিটল ইংল্যান্ড” নামে পরিচিত এই জায়গাটি যেন ছবির মতো সুন্দর। চারদিকে সবুজ চা-বাগান, কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়, আর ঠান্ডা হাওয়া সব মিলিয়ে এটি এক পরিপূর্ণ প্রশান্তির জায়গা। এখানকার চা বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত “সিলন টি” নামে, যার স্বাদ ভ্রমণকারীরা উপভোগ করতে পারেন চা কারখানায় গিয়ে।

প্রাণীপ্রেমীদের জন্য ইয়ালা ন্যাশনাল পার্ক এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। এখানে রয়েছে হাতি, চিতা, ময়ূর, মগর, এমনকি বিরল প্রজাতির পাখিও। সাফারি গাড়িতে করে পুরো পার্ক ঘুরে দেখা এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।

ভ্রমণের শেষে দক্ষিণ উপকূলে গিয়ে মিরিসা বিচ বা বেনটোটা বিচে সূর্যাস্ত দেখা যেন এক পরম আনন্দের অনুভূতি। নীলাভ সমুদ্র, সোনালি বালু আর শান্ত ঢেউয়ের ছন্দে এখানে হারিয়ে যায় সময়ের হিসাব।

খাবারের দিক থেকেও শ্রীলংকা বেশ সমৃদ্ধ। নারকেল দুধে রান্না করা সীফুড, স্পাইসি কারি, ‘হপারস’ ও ‘কোত্তু রোটি’ সবই মুখরোচক ও বৈচিত্র্যময়।

বাংলাদেশ থেকে শ্রীলংকা যেতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘণ্টা। ভিসা পাওয়া সহজ, আর স্থানীয়দের আতিথেয়তা মন ছুঁয়ে যায়। পর্যটকদের জন্য দেশটি নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল।

শ্রীলংকা শুধু একটি দেশ নয়, এটি এক অনুভূতি যেখানে ইতিহাস, প্রকৃতি আর আতিথেয়তা মিলে গড়ে তুলেছে অনন্য এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। পাহাড়, সমুদ্র, চা-বাগান আর মানুষের হাসিতে ভরা এই দেশ প্রতিটি ভ্রমণকারীর মনে চিরস্থায়ী স্মৃতি হয়ে থাকে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত