বাড়ি ভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে টানা আট দিন ধরে আন্দোলন করছেন দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। এরই মধ্যে ৪২ ঘণ্টা ধরে তারা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক।
রবিবার আন্দোলনরত শিক্ষকদের খোঁজ নিতে শহীদ মিনারে যান এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও ডা. তাসনিম জারা। তারা শিক্ষকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের সফরের বিষয়টি শেয়ার করে জানান, নেতারা আন্দোলন চালিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
শনিবার রাতে অধ্যক্ষ আজিজী ঘোষণা দেন, সোমবার শিক্ষকেরা “ভূখা মিছিল” করবেন। এ কর্মসূচিতে তারা খালি থালা ও প্লেট হাতে নিয়ে শিক্ষা ভবন অভিমুখে মিছিল করবেন।
তিনি বলেন, “আমরা এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, জাতির মেরুদণ্ড শক্ত করছি। কিন্তু নিজেদের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে প্রতিশ্রুতি শুনেছি, কিন্তু বাস্তবে কিছুই পাইনি। এখন আমাদের অবস্থা এমন—খালি থালা হাতে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার চাইলে যেকোনো সময় এ সংকটের অবসান ঘটাতে পারে। আমাদের আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবেন না। শিক্ষক সমাজ মর্যাদা চায়, করুণা নয়।”
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করলে শিক্ষক সমাজে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। পরবর্তীতে ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে সেই প্রজ্ঞাপন সামনে আসলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর তারা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। তখন থেকেই চলছে তাদের টানা অনশন ও আন্দোলন।
বর্তমানে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।