গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ব্যবসায়ী চাঞ্চল্যকর দুলাল শেখ হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক প্রধান আসামী ফক্করকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬,খুলনা। র্যাব-৬ সদর দপ্তরে এক প্রেসব্রিফিং এ জানানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘদিন যাবত পালিয়ে থাকা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জনগনের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে আসছে।
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের থানাধীন তাড়ীহাটি গ্রামের ভিকটিম ব্যবসায়ী দুলাল শেখ গত ২ জুন ২০১২ তারিখ বাজারে যাওয়ার কথা বলে নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে আর বাড়ি ফেরেনি। ভিকটিমের মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়াতে পরিবারের সন্দেহ বাড়তে শুরু করে। পরের দিন ০৩ জুন ২০১২ তারিখ সকালে ভিকটিমের পরিবার লোকমুখে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে পার্শ্ববর্তী গোহালা নদীর তীরে ভিকটিমের পরিহিত রক্তমাখা সেন্ডেল ও চশমাসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক মালামাল দেখতে পায়। নদীতে নেমে খোঁজাখুজির একপর্যায় ভিকটিমের মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের পরিবার বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে আসামী ফক্কার শেখ ওরফে ফারুক শেখসহ তার সহযোগীরা ভিকটিমের মাথায়, গলায়, কোমড়, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ নির্জন স্থানে নদীতে ফেলে দেয়। এ সংক্রান্তে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি তখন বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। উক্ত মামলার বিচারকার্য শেষে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত গত ২৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখ প্রধান আসামী ফক্কার শেখ ওরফে ফারুক শেখসহ ০৫ আসামীকে মৃত্যুদন্ডসহ প্রত্যেককে ৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। আসামীরা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ায়। মামলার রায় হওয়ার পর থেকেই র্যাব-৬ খুলনার একটি গোয়েন্দা দল পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১১ মার্চ ২০২৩ তারিখ র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি চৌকস আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ব্যবসায়ী দুলাল শেখ হত্যা মামলার দীর্ঘদিন যাবত পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামী ফক্কার শেখ ওরফে ফারুক শেখ কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশে এসেছে এবং বর্তমানে ঢাকা জেলার সাভার থানা এলাকায় আত্নগোপনে আছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আভিযানিক দলটি একই তারিখ রাতে ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত প্রধান পলাতক আসামী গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানা এলাকার ফক্কার শেখ ওরফে ফারুক শেখ(৪০)কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।