রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি দেখতে কক্সবাজারের টেকনাফ আসা মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল প্রথম দিনে ৯০ রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করেছে। যদিও প্রত্যাবাসনে তালিকাভুক্ত সোয়া ৪শ রোহিঙ্গার তথ্য যাচাইয়ের কথা রয়েছে। সবার তথ্য যাচাইয়ে ৫-৬ দিন লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার (১৬ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দর এলাকার একটি ভবনে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বৈঠক হয়। এর আগে সকাল ১০ টার দিকে ২২ জনের প্রতিনিধি দল টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি ঘাটে পৌঁছান। বৈঠক শুরু হলে তাদের সাথে আসা ৫ নিরাপত্তাকর্মী মিয়ানমার ফিরে গেছেন।
প্রতিনিধি দল প্রথম দিন ২৮টি পরিবারের ৮০-৯০ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে। কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, টেকনাফ স্থল বন্দরের অভ্যন্তরে মালঞ্চ সম্মেলন কক্ষে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল ও বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল মিলে রোহিঙ্গাদের তথ্য যাচাই-বাছাই কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে।
সূত্র জানায়, মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি টেকনাফে অবস্থানকালে প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত ৪২৯ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। একই সঙ্গে আলাপ করা হচ্ছে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া শিশুদের তথ্যও নথিভুক্ত করার বিষয়। এর আগে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ ৮ লাখ ৬২ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়েছিল। ওই তালিকা থেকে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ১৪০ জনকে বাছাই করে মিয়ানমার। এর মধ্যে ৭১১ রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের সম্মতি মিললেও বাকি ৪২৯ জনের ব্যাপারে মিয়ানমারের আপত্তি ছিল। সেই ৪২৯ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাইয়ের জন্যই টেকনাফে এসেছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলতে ৬ দিনের সফরে এসেছে। প্রথম দিনে ৮০-৯০ জন তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গার সঙ্গে প্রতিনিধি দল কথা বলেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সরকার রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে ছিল আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা। এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা।