জাতীয় সংসদ ভবন ঢাকার শেরে-বাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত। এটি পৃথিবীর দৃষ্টিনন্দন আইনসভা ভবনের একটি। এই এলাকার আশপাশে বিপুলসংখ্যক র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। অথচ প্রতিদিন সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রশাসনের নাকের ডগায় ভাসমান দেহ ব্যবসায়ীদের মেলা বসছে। এখানে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসে ঢাকার মধ্যে থাকা অনেকে। এই ধরনের পরিবেশ দেখে বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়তে হচ্ছে অনেককেই।
এজেড নিউজ বিডির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় সংসদ ভবন ও পাশে চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকায় টাকার বিনিময় চলে রমরমা ভাসমান দেহব্যবসা। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে থাকা এই দেহব্যবসায়ীদের সাথে টাকার বিনিময় মিলিত হতে থাকে কলেজ পড়ুয়া, সিএনজি চালক, রিকশা চালকসহ বিভিন্ন পেশার খদ্দের।
মিরপুর থেকে ঘুরতে আসা আসলাম শেখ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমরা অবরস সময় এখানে ঘুরতে আসি, কিন্তু এখানকার পরিবেশটা নোংরা হয়ে যায় সন্ধ্যার পর পরিবার নিয়ে দাঁড়াতে পারি না। আজ (মঙ্গলবার) এসেছিলাম স্ত্রী-বাচ্চাদের নিয়ে একটু ঘুরতে, এসে দেখি বসার পরিবেশ নেই, সব ভাসমান দেহব্যবসায়ীদের দখলে। তাদের সাথে জোর করে কথা বলা যায় না, অপমান করে বসে।
আকলিমা (ছদ্দনাম) এক ভাসমান দেহ ব্যবসায়ী এজেড নিউজ বিডিকে একান্তে বলেন, ‘আমার পরিবার আছে। আমি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময় এই কাজ করি। আমার বাড়ি ঢাকাতেই। পেট আছে তাই এই কাজ করতে হয়। এখানে অনেক মেয়ে আছে। কেউ আসে পরিবারের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে। আর অনেকের আছে নানান কষ্ট…। অনেকে আসে অভাবের তাড়নায়। কেউ আসে নিছক আনন্দ….। ২-৩ মিনিটি কথা বলার পরই ওই নারী বললো ভাইয়া এখন আমাকে একটু যেতে হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক দেহব্যবসায়ী বলেন, আমরা পেটের দায়ে এই কাজে এসেছি। আপনারা যদি বন্ধ করে দেন আমরা না খেয়ে মরে যাবো। আমরা সমাজে কোথায় কাজ করতে পারি না। যেখানে কাজ করতে যায় সেখানেই কু-প্রস্তাব দেয়। আমি বাধ্য হয়ে এই লাইনে এসেছি। আমার দুইটা সন্তান আছে। তারা জানে আমি গার্মেন্টস এ কাজ করি। আমি ২ বছর যাবৎ এই কাজ করে সংসার চালাচ্ছি।
উদ্যানের পরিবেশ রক্ষায় আনসার নিয়োগ করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তারাই নাকি টাকার বিনিময় এই অনৈতিক কাজ করার সুযোগ করে দেয় উদ্যানের মধ্যে। বনের মধ্যে একটু এগিয়ে দেখা গেলো জোড়ায় জোড়ায় প্রকাশ্যে চলছে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। দেখেও যেন কিছু বলার নেই।
সংসদ ভবন এলকায় দায়িত্বরত পুলিশ বিট ইনর্চাজ এস আই সাব্বির আলম বলেন, এমন পবিত্র জায়গাতে এই ধরণের কার্যকলাপ আমরা আশা করি না। আগের তুলনায় অনেক কমেছে। পুলিশের তৎপরতা চলমান রয়েছে। আশা করি আগামীতে আরও কমে যাবে।
আরেক পুলিশ কর্মকর্তা এ এস আই মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমার ডিউটির বাহিরে ঘটে থাকলে সেটা আমি বলতে পারবো না।