খুবির শিক্ষার্থীদের গণহত্যার প্রতীকী চিত্র প্রদর্শণ

আব্দুল লতিফ মোড়ল জেলা প্রতিনিধি, খুলনা
খুবির শিক্ষার্থীদের গণহত্যার প্রতীকী চিত্র প্রদর্শণ
নিজস্ব প্রতিবেদন

১৯৭১ সালের ভয়াল ২৫ মার্চের কালরাত্রি। দেশব্যাপি পাকবাহিনী যে গণহত্যা চালায় তারই একটি আবহ ( পরিবেশ পরিস্থিতি) প্রদর্শণ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের(খুবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগ। শনিবার(২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনের চত্বরে ১৫০টির অধিক ভাস্কর্যের মাধ্যমে ওইদিনকার ওই রাতের পরিস্থিতি ও পরবর্তিতে গণহত্যা ও বধ্যভূমির চিত্র তুলে ধরা হয়।

ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে অংশ গ্রহণকারি শিক্ষার্থীরা জানালেন, সেই দিনকার সেই পরিস্থিতি আমরা দেখিনি। তবে মৃত্যুপূরাণ নামে একটি প্রদর্শনীতে আমরা পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়টি একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা বধ্যভূমির উপর স্থাপিত।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালযের চারুকলা অনুষদ ভবনের দক্ষিনের চত্বর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মানুষের কঙ্কাল, মাথা, হাত, পা, শরীরের অন্যান্য অঙ্গের খন্ডিত অংশ। গর্ত, ডোবা কোথায় নেই লাশের ভাস্কর্য। এমন এক পরিবেশ তৈরি করা করেন চারুকলা অনুষদের ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগের কয়েক জন শিক্ষার্থী।
ডিসপ্লে পরিদর্শনে অংশ নেন, এই বিভাগের ৬ শিক্ষার্থী। তারা হলেন, এস এম মুরাদ, শাহনেওয়াজ শিশির, ইশরাত জাহান স্বপ্নীল, শুভাশীশ বৈরাগী, সায়ন্তণী সরকার শিখী, সানজিদা ইসলাম মীম।

এসব শিক্ষার্থীরা গুলিবিদ্ধ মানুষকে বধ্যভূমিতে এনে ফেলে দেয়ার পর কিভাবে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। এক পর্যায়ে শান্ত হযে যায়। এমন চিত্র ফুটিয়ে তোলেন। দশ মিনিট প্রতীকী গণহত্যার চিত্র তুলে ধরার পর সতীর্থ ও সহপাঠিরা তাদেরকে ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে অভিনন্দন জানান।

বেলা সোয়া ১০টায় এই স্থানে এসে পৌছান খুলনা বিশ্ব বিদ্যালযের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। সাথে ছিলেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর মোসাম্মৎ হোসনে আরা, চারুকলা ইন্সটিটিউটের ডীন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ, রেজিষ্টার অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস।

ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগীয় প্রধান মোঃ রকিব হাসান এই আয়োজনের উদ্দেশ্য বর্ণণা করতে গিয়ে বলেন, ইতিহাস পুনাবৃতি হয় না। কিন্তু গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই পূনরাবৃত্তি হয় না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি বধ্যভূমির উপর দাড়িয়ে। রক্তাক্ত সেই বধ্যভূমি ও গণহত্যাকে সামনে রেখে মৃত্যপূরাণ নামে একটি প্রদর্শনীতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালযের প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বললেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এত কম সময়ে এত মানুষ হত্যার ঘটনা কোথাও ঘটেনি যা ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে ঘটেছিল। আমরা এই গণহত্যার দিন ২৫ মার্চকে আর্ন্তজাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দেয়ার দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একাত্তরের বধ্যভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা সব সময় সেই স্মৃতি ও আবেগ ধারণ করি এবং শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন একাত্তরের ২৫ মার্চ গণহত্যা স্মরণে নতুন প্রজন্মের মধ্যে চেতনা সৃষ্টিতে স্থাপনা শিল্পের যে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে তার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদযাপন কমিটির আহবায়ক শিক্ষা স্কুলের ডিন প্রফেসর মোছাঃ তাছলিমা খাতুন, কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রুবেল আনছার, চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ খান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত এ গণহত্যা ও নির্যাতন শিল্প স্থাপনায় ১০মিনিটে একাত্তরের ২৫মার্চ রাতে গণহত্যার প্রতীকী চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা এ উপস্থাপনায় অংশগ্রহণ করেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

খুবির শিক্ষার্থীদের গণহত্যার প্রতীকী চিত্র প্রদর্শণ

খুবির শিক্ষার্থীদের গণহত্যার প্রতীকী চিত্র প্রদর্শণ
নিজস্ব প্রতিবেদন

১৯৭১ সালের ভয়াল ২৫ মার্চের কালরাত্রি। দেশব্যাপি পাকবাহিনী যে গণহত্যা চালায় তারই একটি আবহ ( পরিবেশ পরিস্থিতি) প্রদর্শণ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের(খুবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগ। শনিবার(২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনের চত্বরে ১৫০টির অধিক ভাস্কর্যের মাধ্যমে ওইদিনকার ওই রাতের পরিস্থিতি ও পরবর্তিতে গণহত্যা ও বধ্যভূমির চিত্র তুলে ধরা হয়।

ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে অংশ গ্রহণকারি শিক্ষার্থীরা জানালেন, সেই দিনকার সেই পরিস্থিতি আমরা দেখিনি। তবে মৃত্যুপূরাণ নামে একটি প্রদর্শনীতে আমরা পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়টি একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা বধ্যভূমির উপর স্থাপিত।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালযের চারুকলা অনুষদ ভবনের দক্ষিনের চত্বর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মানুষের কঙ্কাল, মাথা, হাত, পা, শরীরের অন্যান্য অঙ্গের খন্ডিত অংশ। গর্ত, ডোবা কোথায় নেই লাশের ভাস্কর্য। এমন এক পরিবেশ তৈরি করা করেন চারুকলা অনুষদের ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগের কয়েক জন শিক্ষার্থী।
ডিসপ্লে পরিদর্শনে অংশ নেন, এই বিভাগের ৬ শিক্ষার্থী। তারা হলেন, এস এম মুরাদ, শাহনেওয়াজ শিশির, ইশরাত জাহান স্বপ্নীল, শুভাশীশ বৈরাগী, সায়ন্তণী সরকার শিখী, সানজিদা ইসলাম মীম।

এসব শিক্ষার্থীরা গুলিবিদ্ধ মানুষকে বধ্যভূমিতে এনে ফেলে দেয়ার পর কিভাবে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। এক পর্যায়ে শান্ত হযে যায়। এমন চিত্র ফুটিয়ে তোলেন। দশ মিনিট প্রতীকী গণহত্যার চিত্র তুলে ধরার পর সতীর্থ ও সহপাঠিরা তাদেরকে ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে অভিনন্দন জানান।

বেলা সোয়া ১০টায় এই স্থানে এসে পৌছান খুলনা বিশ্ব বিদ্যালযের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। সাথে ছিলেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর মোসাম্মৎ হোসনে আরা, চারুকলা ইন্সটিটিউটের ডীন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ, রেজিষ্টার অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস।

ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগীয় প্রধান মোঃ রকিব হাসান এই আয়োজনের উদ্দেশ্য বর্ণণা করতে গিয়ে বলেন, ইতিহাস পুনাবৃতি হয় না। কিন্তু গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই পূনরাবৃত্তি হয় না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি বধ্যভূমির উপর দাড়িয়ে। রক্তাক্ত সেই বধ্যভূমি ও গণহত্যাকে সামনে রেখে মৃত্যপূরাণ নামে একটি প্রদর্শনীতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালযের প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বললেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এত কম সময়ে এত মানুষ হত্যার ঘটনা কোথাও ঘটেনি যা ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে ঘটেছিল। আমরা এই গণহত্যার দিন ২৫ মার্চকে আর্ন্তজাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দেয়ার দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একাত্তরের বধ্যভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা সব সময় সেই স্মৃতি ও আবেগ ধারণ করি এবং শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন একাত্তরের ২৫ মার্চ গণহত্যা স্মরণে নতুন প্রজন্মের মধ্যে চেতনা সৃষ্টিতে স্থাপনা শিল্পের যে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে তার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদযাপন কমিটির আহবায়ক শিক্ষা স্কুলের ডিন প্রফেসর মোছাঃ তাছলিমা খাতুন, কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রুবেল আনছার, চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ খান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত এ গণহত্যা ও নির্যাতন শিল্প স্থাপনায় ১০মিনিটে একাত্তরের ২৫মার্চ রাতে গণহত্যার প্রতীকী চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা এ উপস্থাপনায় অংশগ্রহণ করেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত