গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ও তার প্রতিকার

,
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ও তার প্রতিকার
ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশে বর্তমানে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৭১ লাখের বেশি, এর মধ্যে ৩৫ লাখের বেশি নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সংস্থাটি বলছে, এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশের নারীরাই সন্তান জন্মদানের জন্য সক্ষম অবস্থায় এ রোগে আক্রান্ত হন। নারীদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের বিভিন্ন ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীরা গর্ভধারণের সময় এবং গর্ভধারণের পর যেমন বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন, তেমনি যেসব নারীর ডায়াবেটিস নেই তারাও গর্ভাবস্থায় বিশেষ ধরণের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার পর বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই গর্ভে সন্তান আগে থেকেই ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা যেন তৈরি না হয় সেজন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা প্রয়োজন।
ডায়াবেটিস সাধারণত দুই প্রকার।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস

টাইপ২ ডায়াবেটিস

গর্ভধারণের ক্ষেত্রে নারীরা মূলত এই দুই ধরণের ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতার মধ্যে পড়তে পারেন। যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস (টাইপ-১ বা টাইপ২) থাকে এবং যারা গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস (জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস) আক্রান্ত হন।

বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ. দেলোয়ার হোসেন বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা দেখেছেন প্রতি দশ জন নারীর মধ্যে একজনের ডায়াবেটিস আছে। আর এজন্য এখনকার জীবনযাত্রাকেই সবচেয়ে বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন “মূল কারণ আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন। কায়িক পরিশ্রম নাই, বসে থাকা হয় বেশি। আর নারীদের আক্রান্ত বেশি হবার কারণ, তারা সংসারের অনেক কাজ করেন, সংসার সামলানো, সন্তান প্রতিপালনসহ সব করার পরে নিজের দিকে নজর দেন না তারা। ডায়াবেটিস হলেও সেটার চিকিৎসায় নজর দেন না অনেকেই।”ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় খাদ্যাভ্যাস এবং কায়িক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তী হতে হবে একজন রোগীকে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা সেটি মেনে চলতে পারেন না।

জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-

অনেকসময় গর্ভধারণের আগে ডায়াবেটিস না থাকলেও গর্ভধারণের পর নারীদের অনেকে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হতে পারে। যখন গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার হার বেড়ে যায় এবং সন্তান প্রসবের পর তা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে, এটিকেই গর্ভকালীন বা জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে।

গর্ভাবস্থায় শরীর অতিরিক্ত চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত ইনসুলিন – যে উপাদান রক্তে শর্করার হার নিয়ন্ত্রণ করে – তৈরি করত না পারায় এই লক্ষণ দেখা দেয়। গর্ভধারণ করার প্রথম তিনমাস অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে এই ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।অধিকাংশ সময়ই সন্তান প্রসবের পর এই ধরণের ডায়াবেটিসের লক্ষণ থাকে না। জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ নেই।

কিছু নারীর রক্তে শর্করার হার অতিরিক্ত বেড়ে গেলে কয়েকটি লক্ষণ দেখা যেতে পারে:

তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া

সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি মাত্রায় প্রস্রাবের বেগ পাওয়া

ঘন ঘন মুখ শুকিয়ে যাওয়া

দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া

ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

গর্ভবতীদের ডায়াবেটিসের লক্ষণ:

গর্ভধারণের আগে থেকেই যেসব নারীরা টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত থাকেন তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে বেশকিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে।যেমনঃ

শিশুর আকৃতি অপেক্ষাকৃত বড় হওয়া, যার ফলে সাধারণের তুলনায় বেশি প্রসব বেদনা অনুভব করতে পারেন গর্ভবতী মা।

গর্ভবতী নারীর চোখে (ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি) ও কিডনিতে (ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি) জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা থাকে।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ডায়াবেটিক কেটোঅ্যাসিডোসিস হতে পারে যার কারণে রক্তে ক্ষতিকর রাসায়নিক কেটোন তৈরি হতে পারে গর্ভকালীন সময়ে এ ধরণের রোগ তৈরি হতে পারে অথবা এসব রোগ থাকলে গর্ভকালীন সময়ে তার তীব্রতা বাড়তে পারে।

যেভাবে সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে:

সন্তান গর্ভে থাকার সময় মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে নানাভাবে সন্তানের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তাই মায়েদের এ ব্যাপারে সম্পুর্ণ সতর্ক থাকতে হবে।

জন্মগ্রহণের পরপরই স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে (হৃৎপিন্ড ও শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা)।

ভবিষ্যতে স্থূলাকৃতির দেহ (অতিরিক্ত ওজন) হওয়ার বা ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এছাড়া জন্মের পর থেকেই স্নায়ুতন্ত্র এবং হৃৎপিন্ডের সমস্যার পাশাপাশি আরো কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ডায়াবেটিস রোগে যা করণীয়-

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডাক্তার হাজেরা মাহতাব বলেন টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিকে গর্ভধারণের অন্তত তিনমাস আগে থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। অধ্যাপক মাহতাব বলেন, “ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগে নিশ্চিত করতে হবে যে তার ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।”

স্বাভাবিক অবস্থায় ডায়াবেটিসের জন্য যেসব ওষুধ গ্রহণ করতে হতো, গর্ভকালীন অবস্থায় ওষুধ গ্রহণের মাত্রা এবং ওষুধের ধরণ পরিবর্তিত হয় বলে জানান ডাক্তার মাহাতাব।”টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী গর্ভধারণ করলে সাধারণভাবে খাওয়া যায় এমন হাইপোগ্লাইসেমিক এজেন্ট (রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ানোর ওষুধ) বন্ধ করতে হবে এবং উচ্চ রক্তচাপের ওষুধও পরিবর্তন করতে হবে।গর্ভকালীন অবস্থায় খালি পেটে রক্তে গ্লূকোজের মাত্রা ৪.৫ মিলিমোল/লিটার থেকে ৫ বা সর্বোচ্চ

৫ মিলিমোল/লিটার হতে পারে। আর খাওয়ার দু ঘন্টা পরে ঐ মাত্রা ৫ থেকে ৬ মিলিমোল/লিটার হতে পারে।” অধ্যাপক মাহাতাবের মতে, গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

এছাড়া যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক সরকারি ওয়েবসাইট এনএইচএস-এর তথ্য অনুযায়ী ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীদের গর্ভধারণের চেষ্টার সময় থেকে গর্ভধারণের পর ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫ মিলিগ্রাম ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া উচিত। এর ফলে জন্মগ্রহণের সময় শিশুর বিভিন্ন রকম জটিলতা তৈরি হয় না।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ও তার প্রতিকার

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ও তার প্রতিকার
ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশে বর্তমানে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৭১ লাখের বেশি, এর মধ্যে ৩৫ লাখের বেশি নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সংস্থাটি বলছে, এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশের নারীরাই সন্তান জন্মদানের জন্য সক্ষম অবস্থায় এ রোগে আক্রান্ত হন। নারীদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের বিভিন্ন ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীরা গর্ভধারণের সময় এবং গর্ভধারণের পর যেমন বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন, তেমনি যেসব নারীর ডায়াবেটিস নেই তারাও গর্ভাবস্থায় বিশেষ ধরণের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার পর বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই গর্ভে সন্তান আগে থেকেই ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা যেন তৈরি না হয় সেজন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা প্রয়োজন।
ডায়াবেটিস সাধারণত দুই প্রকার।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস

টাইপ২ ডায়াবেটিস

গর্ভধারণের ক্ষেত্রে নারীরা মূলত এই দুই ধরণের ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতার মধ্যে পড়তে পারেন। যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস (টাইপ-১ বা টাইপ২) থাকে এবং যারা গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস (জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস) আক্রান্ত হন।

বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ. দেলোয়ার হোসেন বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা দেখেছেন প্রতি দশ জন নারীর মধ্যে একজনের ডায়াবেটিস আছে। আর এজন্য এখনকার জীবনযাত্রাকেই সবচেয়ে বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন “মূল কারণ আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন। কায়িক পরিশ্রম নাই, বসে থাকা হয় বেশি। আর নারীদের আক্রান্ত বেশি হবার কারণ, তারা সংসারের অনেক কাজ করেন, সংসার সামলানো, সন্তান প্রতিপালনসহ সব করার পরে নিজের দিকে নজর দেন না তারা। ডায়াবেটিস হলেও সেটার চিকিৎসায় নজর দেন না অনেকেই।”ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় খাদ্যাভ্যাস এবং কায়িক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তী হতে হবে একজন রোগীকে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা সেটি মেনে চলতে পারেন না।

জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-

অনেকসময় গর্ভধারণের আগে ডায়াবেটিস না থাকলেও গর্ভধারণের পর নারীদের অনেকে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হতে পারে। যখন গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার হার বেড়ে যায় এবং সন্তান প্রসবের পর তা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে, এটিকেই গর্ভকালীন বা জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে।

গর্ভাবস্থায় শরীর অতিরিক্ত চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত ইনসুলিন – যে উপাদান রক্তে শর্করার হার নিয়ন্ত্রণ করে – তৈরি করত না পারায় এই লক্ষণ দেখা দেয়। গর্ভধারণ করার প্রথম তিনমাস অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে এই ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।অধিকাংশ সময়ই সন্তান প্রসবের পর এই ধরণের ডায়াবেটিসের লক্ষণ থাকে না। জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ নেই।

কিছু নারীর রক্তে শর্করার হার অতিরিক্ত বেড়ে গেলে কয়েকটি লক্ষণ দেখা যেতে পারে:

তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া

সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি মাত্রায় প্রস্রাবের বেগ পাওয়া

ঘন ঘন মুখ শুকিয়ে যাওয়া

দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া

ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

গর্ভবতীদের ডায়াবেটিসের লক্ষণ:

গর্ভধারণের আগে থেকেই যেসব নারীরা টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত থাকেন তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে বেশকিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে।যেমনঃ

শিশুর আকৃতি অপেক্ষাকৃত বড় হওয়া, যার ফলে সাধারণের তুলনায় বেশি প্রসব বেদনা অনুভব করতে পারেন গর্ভবতী মা।

গর্ভবতী নারীর চোখে (ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি) ও কিডনিতে (ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি) জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা থাকে।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ডায়াবেটিক কেটোঅ্যাসিডোসিস হতে পারে যার কারণে রক্তে ক্ষতিকর রাসায়নিক কেটোন তৈরি হতে পারে গর্ভকালীন সময়ে এ ধরণের রোগ তৈরি হতে পারে অথবা এসব রোগ থাকলে গর্ভকালীন সময়ে তার তীব্রতা বাড়তে পারে।

যেভাবে সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে:

সন্তান গর্ভে থাকার সময় মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে নানাভাবে সন্তানের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তাই মায়েদের এ ব্যাপারে সম্পুর্ণ সতর্ক থাকতে হবে।

জন্মগ্রহণের পরপরই স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে (হৃৎপিন্ড ও শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা)।

ভবিষ্যতে স্থূলাকৃতির দেহ (অতিরিক্ত ওজন) হওয়ার বা ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এছাড়া জন্মের পর থেকেই স্নায়ুতন্ত্র এবং হৃৎপিন্ডের সমস্যার পাশাপাশি আরো কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ডায়াবেটিস রোগে যা করণীয়-

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডাক্তার হাজেরা মাহতাব বলেন টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিকে গর্ভধারণের অন্তত তিনমাস আগে থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। অধ্যাপক মাহতাব বলেন, “ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগে নিশ্চিত করতে হবে যে তার ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।”

স্বাভাবিক অবস্থায় ডায়াবেটিসের জন্য যেসব ওষুধ গ্রহণ করতে হতো, গর্ভকালীন অবস্থায় ওষুধ গ্রহণের মাত্রা এবং ওষুধের ধরণ পরিবর্তিত হয় বলে জানান ডাক্তার মাহাতাব।”টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী গর্ভধারণ করলে সাধারণভাবে খাওয়া যায় এমন হাইপোগ্লাইসেমিক এজেন্ট (রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ানোর ওষুধ) বন্ধ করতে হবে এবং উচ্চ রক্তচাপের ওষুধও পরিবর্তন করতে হবে।গর্ভকালীন অবস্থায় খালি পেটে রক্তে গ্লূকোজের মাত্রা ৪.৫ মিলিমোল/লিটার থেকে ৫ বা সর্বোচ্চ

৫ মিলিমোল/লিটার হতে পারে। আর খাওয়ার দু ঘন্টা পরে ঐ মাত্রা ৫ থেকে ৬ মিলিমোল/লিটার হতে পারে।” অধ্যাপক মাহাতাবের মতে, গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

এছাড়া যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক সরকারি ওয়েবসাইট এনএইচএস-এর তথ্য অনুযায়ী ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীদের গর্ভধারণের চেষ্টার সময় থেকে গর্ভধারণের পর ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫ মিলিগ্রাম ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া উচিত। এর ফলে জন্মগ্রহণের সময় শিশুর বিভিন্ন রকম জটিলতা তৈরি হয় না।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত