কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে মাছ ধরছে ও বিক্রি করছে

মো: ইব্রাহিম জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর
কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে মাছ ধরছে ও বিক্রি করছে
কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে মাছ ধরছে ও ব্রিক্রি করছে

রবিবার(২ এপ্রিল) বিকালে মাতাব্বার হাট মাছঘাট এলাকায় নদীর পাড়ে কয়েকজন জেলে দাঁড়িয়ে আছে আর পাশে মাঝামাঝি নদীতে কয়েকটি নৌকা মাছ-ধরছে।নিষিদ্ধ সময় নদীতে কেন মাছ ধরা হচ্ছে এই প্রশ্নের জবাবে এক জেলে অভিযোগ করে বলেন এরা নিয়মিত এই ভাবে মাছ ধরে। কিছু আড়তদার, অসাধু কিছু মৎস্য ব্যবসায়ীর সম্বনয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস, কোষ্ট গার্ড মেনেজ করে প্রকাশ্যে প্রতিনিয়ত মাছ ধরছে বিপদ গ্রামী এই অসাধু চক্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালকিনি, সাহেবের হাট, ফলকন, মার্টিনের কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জেলে কার্ড থাকা সত্ত্বেও খাদ্য সহায়তা ভুক্ত হতে টাকা লাগে। আবার নদীতে অভিযান করলেও তাদের চুক্তির নৌকাগুলো ছেড়ে দেয় আর ঘাটে বাজারে গিয়ে ছোট মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযান করে। নদীতে অভিযান করে না।

হাজিরহাটের সবুজ, মোসলে উদ্দিন, বাহার, মোহাম্মদ ইউসুফ ,মোহাম্মদ সবুজ,শাহাবুদ্দিন, আলী হোসেন মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, কুদ্দুস সাহেব সাহেবের সাথে একজন লোক এসে আমাদের কাছে টাকা পয়সা চায়, আমরা না দিলে আমাদের মাছ মাপার মেশিন ভেঙে ফেলে এবং আমাদের মাছ নিয়ে যায়। ভোরবেলা মাছঘাটে মাছ বিক্রি হয়, রাতে নদীতে মাছ ধরে সেখানে অভিযান করে না, বাজারে এসে অভিযান করে ছোট ছোট ব্যাপারীদের মাছ নিয়ে যায় বড় বড় আড়তদারের কোন খোঁজ নাই।জেলেদের অভিযোগ এই সকল কারনে জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে যায়।

কালকিনি ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, মজুচোধুরীর হাট থেকে বড় নৌকা গুলা রাত তিনটার দিকে নদীতে মাছ ধরতে আসে নৌ-পুলিশ কে মেনেজ করে এইসব বিষয় দেখার কেউ নাই। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে অভয়াশ্রমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস মেঘনায় সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও বাঁধা মানছেনা জেলেরা। প্রতিদিন নদী থেকে মাছ ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। ইলিশ সংরক্ষণে উপজেলা টার্সফোর্স কমিটি থাকলে তাদের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। আবার মৎস্য কর্মকর্তা দুষছেন কোস্টগার্ডকে। কোস্টগার্ড নাকি সঠিক সময়ে অভিযানে নামছেন না। তারা যদি সময় মতো অভিযান পরিচালনা করতো তাহলে জেলেদের মাছ ধরার সাহস পেতোনা। এদিকে স্থানীয়দের দাবি সংশ্লিষ্টদের নৌকা প্রতি দৈনিক মাসোয়ারা দিয়েই নদীতে নামছে জেলেরা। মাছঘাটের আড়ৎদাররা উপজেলার কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করে জেলেদের নদীতে নামতে বাধ্য করছেন।

জানা যায়, জাটকা সংরক্ষণের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবছর ১মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। মেঘনা নদী ও পদ্মার কিছু অংশ নিয়ে পাঁচটি অঞ্চল অভয়াশ্রমের আওতায় আনে। এ অভয়াশ্রমের মধ্যে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নিম্ন অববাহিকার ১০০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে।

এসব অভয়াশ্রমে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরলে আইনে কমপক্ষে এক থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট জেলায় এ সময় মৎস্য আহরণে বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের ৮০ কেজি হারে ভিজিএফ চাল দিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার এক মাস পেরিয়ে গেলেও সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। মাঝে মধ্যে নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করলেও কোন সুফল আসেনি।

এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা কোস্টগার্ড কন্টিজেন্টা কমান্ডার নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জেলেরা মাঝেমধ্যে রাতে নদীতে নামে এটা সত্য। কোস্টগার্ড কোন জেলে বা আড়ৎদারদের থেকে সুবিদা নিয়ে মাছ ধরতে দেয় এটা ভিত্তিহীন।

এদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমাদের দিনের বেলা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রাতে জেলেরা নদীতে নামে তখনতো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারিনা। কোস্টগার্ড একটু সক্রিয় হলে এ সমস্যা থাকতো না।

এ বিষয়ে উপকেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রম রক্ষায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। তথাপি, মাঝ রাতে বা ভোরে বিভিন্ন জায়গায় মাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে মাছ ধরছে ও বিক্রি করছে

কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে মাছ ধরছে ও বিক্রি করছে
কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে মাছ ধরছে ও ব্রিক্রি করছে

রবিবার(২ এপ্রিল) বিকালে মাতাব্বার হাট মাছঘাট এলাকায় নদীর পাড়ে কয়েকজন জেলে দাঁড়িয়ে আছে আর পাশে মাঝামাঝি নদীতে কয়েকটি নৌকা মাছ-ধরছে।নিষিদ্ধ সময় নদীতে কেন মাছ ধরা হচ্ছে এই প্রশ্নের জবাবে এক জেলে অভিযোগ করে বলেন এরা নিয়মিত এই ভাবে মাছ ধরে। কিছু আড়তদার, অসাধু কিছু মৎস্য ব্যবসায়ীর সম্বনয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস, কোষ্ট গার্ড মেনেজ করে প্রকাশ্যে প্রতিনিয়ত মাছ ধরছে বিপদ গ্রামী এই অসাধু চক্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালকিনি, সাহেবের হাট, ফলকন, মার্টিনের কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জেলে কার্ড থাকা সত্ত্বেও খাদ্য সহায়তা ভুক্ত হতে টাকা লাগে। আবার নদীতে অভিযান করলেও তাদের চুক্তির নৌকাগুলো ছেড়ে দেয় আর ঘাটে বাজারে গিয়ে ছোট মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযান করে। নদীতে অভিযান করে না।

হাজিরহাটের সবুজ, মোসলে উদ্দিন, বাহার, মোহাম্মদ ইউসুফ ,মোহাম্মদ সবুজ,শাহাবুদ্দিন, আলী হোসেন মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, কুদ্দুস সাহেব সাহেবের সাথে একজন লোক এসে আমাদের কাছে টাকা পয়সা চায়, আমরা না দিলে আমাদের মাছ মাপার মেশিন ভেঙে ফেলে এবং আমাদের মাছ নিয়ে যায়। ভোরবেলা মাছঘাটে মাছ বিক্রি হয়, রাতে নদীতে মাছ ধরে সেখানে অভিযান করে না, বাজারে এসে অভিযান করে ছোট ছোট ব্যাপারীদের মাছ নিয়ে যায় বড় বড় আড়তদারের কোন খোঁজ নাই।জেলেদের অভিযোগ এই সকল কারনে জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে যায়।

কালকিনি ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, মজুচোধুরীর হাট থেকে বড় নৌকা গুলা রাত তিনটার দিকে নদীতে মাছ ধরতে আসে নৌ-পুলিশ কে মেনেজ করে এইসব বিষয় দেখার কেউ নাই। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে অভয়াশ্রমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস মেঘনায় সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও বাঁধা মানছেনা জেলেরা। প্রতিদিন নদী থেকে মাছ ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। ইলিশ সংরক্ষণে উপজেলা টার্সফোর্স কমিটি থাকলে তাদের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। আবার মৎস্য কর্মকর্তা দুষছেন কোস্টগার্ডকে। কোস্টগার্ড নাকি সঠিক সময়ে অভিযানে নামছেন না। তারা যদি সময় মতো অভিযান পরিচালনা করতো তাহলে জেলেদের মাছ ধরার সাহস পেতোনা। এদিকে স্থানীয়দের দাবি সংশ্লিষ্টদের নৌকা প্রতি দৈনিক মাসোয়ারা দিয়েই নদীতে নামছে জেলেরা। মাছঘাটের আড়ৎদাররা উপজেলার কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করে জেলেদের নদীতে নামতে বাধ্য করছেন।

জানা যায়, জাটকা সংরক্ষণের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবছর ১মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। মেঘনা নদী ও পদ্মার কিছু অংশ নিয়ে পাঁচটি অঞ্চল অভয়াশ্রমের আওতায় আনে। এ অভয়াশ্রমের মধ্যে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নিম্ন অববাহিকার ১০০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে।

এসব অভয়াশ্রমে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরলে আইনে কমপক্ষে এক থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট জেলায় এ সময় মৎস্য আহরণে বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের ৮০ কেজি হারে ভিজিএফ চাল দিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার এক মাস পেরিয়ে গেলেও সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। মাঝে মধ্যে নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করলেও কোন সুফল আসেনি।

এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা কোস্টগার্ড কন্টিজেন্টা কমান্ডার নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জেলেরা মাঝেমধ্যে রাতে নদীতে নামে এটা সত্য। কোস্টগার্ড কোন জেলে বা আড়ৎদারদের থেকে সুবিদা নিয়ে মাছ ধরতে দেয় এটা ভিত্তিহীন।

এদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমাদের দিনের বেলা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রাতে জেলেরা নদীতে নামে তখনতো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারিনা। কোস্টগার্ড একটু সক্রিয় হলে এ সমস্যা থাকতো না।

এ বিষয়ে উপকেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রম রক্ষায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। তথাপি, মাঝ রাতে বা ভোরে বিভিন্ন জায়গায় মাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত