ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ

স্টাফ রিপোর্টার এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ
ছবি : সংগৃহীত

ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। এতে ভাটার আশপাশের এলাকা, নদী, শহরাঞ্চল ও গ্রামীণ জনপদের জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, ইটভাটা সৃষ্ট দূষণে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারাদেশে ১০ হাজারেরও অধিক ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজারই অবৈধ। ইটভাটাগুলোতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে এসব ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা- কর্মচারীর যোগসাজশে এসব অবৈধ ইটভাটা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া ইটভাটায় নিম্নমানের জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এতে উজাড় হচ্ছে গাছপালা। অধিকাংশ ইটভাটায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ইট পোড়ানো কার্যক্রম। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনে (২০১৩) নিষেধ থাকা সত্তেও বেশির ভাগ ভাটাই স্থাপন করা হয়েছে বা হচ্ছে লোকালয় তথা মানুষের বসতবাড়ি, গ্রাম-গঞ্জ, শহর-বন্দরের অতি সন্নিকটে, কৃষি জমিতে, নদীর তীরে, পাহাড়ের পাদদেশে। ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে আবাদি জমির উপরিভাগ, নদীর তীর এবং পাহাড়ের মাটি, যা আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কাঠ ও অত্যন্ত নিম্নমানের কয়লা পোড়ানো এবং স্বল্প উচ্চতার ড্রাম চিমনি ব্যবহার করায় ইটভাটাগুলোতে নির্গত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া। সে ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে চার পাশে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।এ বিষয়ে করণীয় কী জানতে চাইলে বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আইনুন নিশাত দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য ইট প্রস্তুত করতেই হবে।

বর্তমানে যে পদ্ধতিতে ইট তৈরি হয় তাতে প্রচুর পরিবেশ দূষণ হয়। এ পদ্ধতি বাদ দিয়ে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ইট প্রস্তুত করতে হবে। এ ছাড়া যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে সরকার আছে, আইন আছে। তাই আইনের প্রয়োগ যারা করবেন তারা তা সঠিকভাবে করছেন না। তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন- এটাই আমরা আশা করি।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। অথচ ওই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত ইটভাটা। এর মধ্যে রাজধানীর গাবতলীর পর আমিন বাজার এলাকা থেকে শুরু করে সাভার পর্যন্ত রাস্তার আশপাশে অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ভাটার কালো ধোঁয়ায় ওই এলাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। অভিযোগ আছে স্থানীয় ইটভাটার মালিকদের কেউ কেউ কৃষকদের ম্যানেজ করে জমি লিজ নিয়ে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করছেন। রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জ এলাকায় তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় তিনশ’ ভাটাই অবৈধ। অথচ প্রশাসন একেবারেই নীরব। মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও তা খুব একটা কার্যকর হয় না। কেরানীগঞ্জের মতো ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ এসব এলাকায়ও শত শত অবৈধ ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে।

আইন না মেনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কড্ডা, ইসলামপুর, বাইমাইল ও কোনাবাড়ী এলাকায় চলছে অবৈধ দেড় শতাধিক ইটভাটা। বেশির ভাগ ইটভাটা গড়ে উঠেছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও আবাসিক এলাকার আশপাশে। ভাটাগুলোর বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। ছড়িয়ে পড়েছে রোগ-ব্যাধি। সারা দেশে ইট তৈরিতে আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনি বা সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাটা। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে পরিবেশবিদরা মনে করেন।

এ বিষয়ে গবেষণা করলে জানা যায়, এ দেশীয় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের মধ্যে অনেক ত্রুটি আছে। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। যদিও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। সারা দেশে মাত্র দু’টি পরিবেশ আদালত আছে। সে তুলনায় অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট খুবই কম। বিধায় পরিবেশ অধিদপ্তর আন্তরিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩’ সংসদে পাস করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই তারিখের গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আইনটি ওই বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করে। এই আইনের আওতায় জ্বালানি সাশ্রয়ী, উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন জিগজ্যাগ কিলন, ভার্টিক্যাল স্যাফট ব্রিক কিলন, হাইব্রিড হফম্যান কিলন, টানেল কিলন, বা অনুরূপ কোনো ভাটা স্থাপন/পরিচালনা করা যাবে বলা হয়েছে। আইন কার্যকর হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা; সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর; সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি, কৃষি জমি, প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা, ডিগ্রেডেড এয়ার শেড এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে কোনো ইটভাটা স্থাপন করতে পারবেন না। নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বা জেলা প্রশাসক কোনো আইনের অধীন কোনোরূপ অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স প্রদান করতে পারবে না। আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে, ছাড়পত্র গ্রহণকারী কোনো ব্যক্তি যদি নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার মধ্যে বা নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে বা স্থানে ইটভাটা স্থাপন করে থাকেন, তা হলে তিনি, আইন কার্যকর হওয়ার দুই বৎসর সময়সীমার মধ্যে, ওই ইটভাটা, যথাস্থানে স্থানান্তর করবেন, অন্যথায় লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। যেহেতু বর্তমানে দেশের অধিকাংশ ইটভাটাই এ আইন অমান্য করে স্থাপিত এবং ইট তৈরি করছে। প্রথমেই আমাদের আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এরপর পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করে যেতে হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ

ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ
ছবি : সংগৃহীত

ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। এতে ভাটার আশপাশের এলাকা, নদী, শহরাঞ্চল ও গ্রামীণ জনপদের জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, ইটভাটা সৃষ্ট দূষণে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারাদেশে ১০ হাজারেরও অধিক ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজারই অবৈধ। ইটভাটাগুলোতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে এসব ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা- কর্মচারীর যোগসাজশে এসব অবৈধ ইটভাটা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া ইটভাটায় নিম্নমানের জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এতে উজাড় হচ্ছে গাছপালা। অধিকাংশ ইটভাটায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ইট পোড়ানো কার্যক্রম। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনে (২০১৩) নিষেধ থাকা সত্তেও বেশির ভাগ ভাটাই স্থাপন করা হয়েছে বা হচ্ছে লোকালয় তথা মানুষের বসতবাড়ি, গ্রাম-গঞ্জ, শহর-বন্দরের অতি সন্নিকটে, কৃষি জমিতে, নদীর তীরে, পাহাড়ের পাদদেশে। ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে আবাদি জমির উপরিভাগ, নদীর তীর এবং পাহাড়ের মাটি, যা আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কাঠ ও অত্যন্ত নিম্নমানের কয়লা পোড়ানো এবং স্বল্প উচ্চতার ড্রাম চিমনি ব্যবহার করায় ইটভাটাগুলোতে নির্গত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া। সে ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে চার পাশে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।এ বিষয়ে করণীয় কী জানতে চাইলে বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আইনুন নিশাত দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য ইট প্রস্তুত করতেই হবে।

বর্তমানে যে পদ্ধতিতে ইট তৈরি হয় তাতে প্রচুর পরিবেশ দূষণ হয়। এ পদ্ধতি বাদ দিয়ে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ইট প্রস্তুত করতে হবে। এ ছাড়া যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে সরকার আছে, আইন আছে। তাই আইনের প্রয়োগ যারা করবেন তারা তা সঠিকভাবে করছেন না। তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন- এটাই আমরা আশা করি।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। অথচ ওই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত ইটভাটা। এর মধ্যে রাজধানীর গাবতলীর পর আমিন বাজার এলাকা থেকে শুরু করে সাভার পর্যন্ত রাস্তার আশপাশে অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ভাটার কালো ধোঁয়ায় ওই এলাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। অভিযোগ আছে স্থানীয় ইটভাটার মালিকদের কেউ কেউ কৃষকদের ম্যানেজ করে জমি লিজ নিয়ে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করছেন। রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জ এলাকায় তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় তিনশ’ ভাটাই অবৈধ। অথচ প্রশাসন একেবারেই নীরব। মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও তা খুব একটা কার্যকর হয় না। কেরানীগঞ্জের মতো ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ এসব এলাকায়ও শত শত অবৈধ ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে।

আইন না মেনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কড্ডা, ইসলামপুর, বাইমাইল ও কোনাবাড়ী এলাকায় চলছে অবৈধ দেড় শতাধিক ইটভাটা। বেশির ভাগ ইটভাটা গড়ে উঠেছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও আবাসিক এলাকার আশপাশে। ভাটাগুলোর বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। ছড়িয়ে পড়েছে রোগ-ব্যাধি। সারা দেশে ইট তৈরিতে আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনি বা সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাটা। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে পরিবেশবিদরা মনে করেন।

এ বিষয়ে গবেষণা করলে জানা যায়, এ দেশীয় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের মধ্যে অনেক ত্রুটি আছে। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। যদিও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। সারা দেশে মাত্র দু’টি পরিবেশ আদালত আছে। সে তুলনায় অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট খুবই কম। বিধায় পরিবেশ অধিদপ্তর আন্তরিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩’ সংসদে পাস করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই তারিখের গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আইনটি ওই বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করে। এই আইনের আওতায় জ্বালানি সাশ্রয়ী, উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন জিগজ্যাগ কিলন, ভার্টিক্যাল স্যাফট ব্রিক কিলন, হাইব্রিড হফম্যান কিলন, টানেল কিলন, বা অনুরূপ কোনো ভাটা স্থাপন/পরিচালনা করা যাবে বলা হয়েছে। আইন কার্যকর হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা; সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর; সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি, কৃষি জমি, প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা, ডিগ্রেডেড এয়ার শেড এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে কোনো ইটভাটা স্থাপন করতে পারবেন না। নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বা জেলা প্রশাসক কোনো আইনের অধীন কোনোরূপ অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স প্রদান করতে পারবে না। আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে, ছাড়পত্র গ্রহণকারী কোনো ব্যক্তি যদি নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার মধ্যে বা নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে বা স্থানে ইটভাটা স্থাপন করে থাকেন, তা হলে তিনি, আইন কার্যকর হওয়ার দুই বৎসর সময়সীমার মধ্যে, ওই ইটভাটা, যথাস্থানে স্থানান্তর করবেন, অন্যথায় লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। যেহেতু বর্তমানে দেশের অধিকাংশ ইটভাটাই এ আইন অমান্য করে স্থাপিত এবং ইট তৈরি করছে। প্রথমেই আমাদের আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এরপর পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করে যেতে হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত