সৌদি আরবে ওমরাহ পালন শেষে মদিনা থেকে মক্কায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শ্যালক দুলাভাইয়ের লাশ তাদের নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২ টায় স্বজনরা তাদের লাশ নিয়ে মির্জাগঞ্জের সুবিধখালীর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। এরপর সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। বিশেষ করে নিহত মোজাম্মেল মৃধার স্ত্রী, মেয়ে এবং সাগর জোমাদ্দারের স্ত্রী ও লাশবাহী গাড়ি দেখে বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের বতটলা গ্রামে সাগরের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে সকাল ৯ টায় মির্জাগঞ্জ উপজেলার ছৈলাবুনিয়ায় নিজ বাড়িতে মোজাম্মেলের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজা নামাজে হাজারো মানুষের ঢল নামে।
নিহতের মোজাম্মেলের ভায়রা ও সাগরের ছোট দুলাভাই মো. তারেক মুন্সি বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সাগর ও মোজাম্মেলের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌছায়। বিমানবন্দর কতৃপক্ষ বিকাল সোয়া ৫টায় আমাদের মরদেহ বুঝিয়ে দেয়। সেখান থেকে সরাসরি আমরা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে রাত পৌনে ১২টায় সুবিধখালী পৌঁছাই।
তিনি আরও বলেন, সৌদি কতৃপক্ষ আমাদের শুধু লাশ পাঠিয়ে দিয়েছে। তারা পরিবারের দেনা পাওনা, ইন্স্যুরেন্সের টাকা ও দোকানের টাকা কিছুই দেইনি।
সাগর জোম্মাদ্দারের মামা ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, আমার ভাগ্নি জামাই মোজাম্মেল নিজের জমি বিক্রি করে ও এনজিও থেকে লোন নিয়ে সৌদিতে হোটেল ব্যবসা শুরু করে। পরে সাগর সেখানে গিয়ে কাজে যোগ দেয়। তাদের উপার্জনের উপরেই তাদের পরিবার নির্ভরশীল ছিল। তারা যেন তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পেতে পারে সেই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে ওমরাহ হজ শেষে ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তারা সৌদি আরবের আলগাছিমের উনাইয়া নামক স্থানে ব্যবসা করতেন। ওমরাহ হজ পালনের জন্য মক্কায় যান। ওমরা হজ পালন শেষে শনিবার কর্মস্থলে ফেরার পথে তাদের বহন করা গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পাথরের পাহাড়ারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান।