বগুড়ার জামেয়া আরাবিয়া শামছুল উলুম কারবালা মাদ্রাসায় দুই সহপাঠির তিন হাজার টাকা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই মাদ্রাসা ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করেছে তাদেরই সহপাঠি আব্দুল মুকিব। রোববার (২৮ মে) সকাল ১০ টার দিকে বগুড়া শহরের নিশিন্দারা কারবালা মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ছুরিকাহত শিক্ষার্থীরা, জামেয়া আরাবিয়া শামছুল উলুম কারবালা মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের (হাফতম) বিভাগের ছাত্র ফুয়াদ হাসান ফাহিম (১৭) ও ফয়সাল মাহমুদ (১৭)।
জানা গেছে, বগুড়া শহরের চারমাথা কারবালা এলাকার জামেয়া আরাবিয়া শামছুল উলুম মাদ্রাসায় (২৭ মে) ছাত্র ফুয়াদ হাসান ফাহিম ও ফয়সাল মাহমুদের তিন হাজার টাকা চুরি হয়। চুরির ঘটনা নিয়ে ওইদিন মাদরাসা চত্বরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরোধ হয়। টাকা চুরি জন্য শিক্ষার্থীরা আব্দুল মুকিত নামের এক শিক্ষার্থীকে দায়ী করে। পরে আব্দুল মুকিত টাকা চুরির কথা স্বীকার করে।
রোববার সকাল ১০ টার দিকে আব্দুল মুকিত ওই দুই ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে মুকিত পালিয়ে যায়। মাদরাসার শিক্ষকরা আহত দুই শিক্ষার্থীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ফুয়াদ হাসান ফাহিমকে ভর্তি করা হয় এবং ফয়সাল মাহমুদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। তার সহপাঠিরা সেবাযতœ করছে। ফুয়াদ হাসান ফাহিমের বুকের ডান পাশে তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে। রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফয়সালের পরিবারের কাউকে দেখা যায় নি। ফয়সালের পরিবারকে জানানো হয়েছে আজ সন্ধ্যায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাদ্রাসা ছাত্র ফুয়াদ হাসান ফাহিম জানান, আমার ও ফয়সালের তিন হাজার টাকা চুরি হয়। তারপর বিষয়টা সবাইকে বলার পর বিচার বসানো হয়েছিল। তখন আব্দুল মুকিব ঘামতে শুরু করে। পরে মুকিব টাকা চুরির বিষয় স্বীকার করেছে। মুকিব কয়েকদিন আগে কারোর থেকে টাকা ধার করে মোবাইল কিনেছে। সেই ধারের টাকা সংগ্রহ করতে মুকিব আমাদের টাকা চুরি করে।
এ বিষয়ে জামেয়া আরাবিয়া শামছুল উলুম কারবালা মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতাতিম (নায়েবে মুহতামিম) মাওলানা আফতাব উদ্দিন জানান, টাকা চুরির ঘটনার জের ধরে আব্দুল মুকিত নামের এক শিক্ষার্থী আম কাটার চাকু দিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে আঘাত করলে তারা আহত হয়। আহত ফুয়াদ হাসান ফাহিমকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আব্দুল মুকিতকে তার অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ধরনের ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।