পটুয়াখালী সদর উপজেলার টাউন কালিকাপুর এলাকা থেকে রুমা (১৮) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ। নিহত রুমা দথানীয় আক্কেল আলী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী।
গতকাল শুক্রবার ৯ই জুন আনুমানিক সকাল ১১ টায় পটুয়াখালী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার পশ্চিম পাশে ইলিয়াছ মিয়ার ভাড়াটিয়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার এইচএসসি পরীক্ষার জন্য শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার ভাড়া বাড়িতে বেড়াতে আসে রুমা। সাথে তার স্বামী এবং ননদও বেড়াতে এসেছিলো। গত ৭-৮ মাস পূর্বে পারিবারিক ভাবে রুমার বিবাহ হয় মরিচবুনিয়া গ্রামের নিজাম মৃধার ছেলে আরাফাত মৃধার সাথে।ঘটনার দিন রুমার মা মরিয়ম বেগম বাজারে যান।
তারা জানায়, কিছুক্ষণ পরে তার জামাই আরাফাত মৃধা শ্বাশুরীকে ফোন করে বলে আমরা বাড়ি চলে যাচ্ছি। পরে বাসায় ফিরে ঘরের সামনের দরজা বন্ধ দেখে জামাইকে ফোন দিলে সে বাড়িতে চলে গেছে বলে জানায়। পরে ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকে বিছানা এলোমেলো দেখতে পান রুমার মা। পাশের রান্না ঘরে ঢুকে রুমার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। তার ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয় মৃত রুমার পিতা খোকন খান বলেন, আমি বাসায় ছিলাম না। খবর শুনে এসে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক হিসেবে টাকা পয়সা চাইতো।সামনের কোরবানির পরে তা দেয়ারও কথা ছিল।এনিয়ে মাঝে মাঝে ওদের সংসারে কথার কাটাকাটি হত। কিছুদিন আগেও ওর (রুমার) স্বামী মোবাইল কেনার জন্য টাকা চেয়েছিল।ঘরের মধ্যে মেয়ের লাশ, জামাই তার বাড়ি চলে গেছে এর মধ্যে কি ঘটেছে তা জানিনা।
এদিকে মৃত রুমার ভাবি মিষ্টি আক্তার বলেন, আমি বাবার বাড়িতে ছিলাম খবর পেয়ে এসেছি। এসে বিছানা এলোমেলো দেখে মনে হয় এখানে হাতাহাতি হয়েছে। এরপর রুমা নিজে অথবা তার স্বামী মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে কিনা জানিনা। বিছানায় গলায় থাকা তাগার ও মাথার ব্যান্ড পরে আছে। মৃত্যুটা রহস্যজনক বলেই মনে হচ্ছে ।
মৃত্যুর খবর শুনে শশুর বাড়ির কেউ দেখতে না আসার কারনে নিহতের পরিবার নিহতদের শশুর বাড়ীর লোকজনকেই দায়ী করছেন।
প্রতিবেশীদের ধারনা, রুমার স্বামী আরাফাত ও ননদ মিলে কিছু একটা করে মিথ্যা বলে পালিয়ে গেছেন। না হলে মৃত্যুর সংবাদ শুনে আসবেনা কেন! শাশুরূ না হয় বাজারে গেছে সে ফিরে আসার আগে কেন চলে গেল? এ মৃত্যু স্বাভাবিক বলে মনে হয় না।
খবর পেয়ে সদর থানার এসআই বিপুল ও এসআই রুবেল ঘটনাস্থল থেকে রুমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।
এ দিকে জানাগেছে ঘটনার পরই স্বামী আরাফাত মৃধা ও ননদ আরামান সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, “পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় একটি ভাড়া বাসা থেকে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করা হয়েছে,তবে লাশের ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”