চাকরি সরকারিকরণে ভুয়া তথ্যে মাস্টাররোলের কর্মচারীর মামলা

মো: ইব্রাহিম জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর
চাকরি সরকারিকরণে ভুয়া তথ্যে মাস্টাররোলের কর্মচারীর মামলা

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের দৈনিক বেতনে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত মো. ইউছুফ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। রাজস্বখাতে চাকরিটি পাকাপোক্ত করতে তিনি ভুয়া তথ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে দৈনিক বেতন হিসেবে ইউছুফকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ইউছুফের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান ও মোবারক হোসেন নামে আরও দুইজনকে নিয়োগ দেন লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম।

এ পদে চাকরিটি রাজস্ব করতে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সড়ক ও জনপথ বিভাগে সারাদেশে কর্মরত ২৯৫ জন মাষ্টাররোলে চাকরিরত কর্মচারী রিট পিটিশন করেছেন (নং-৭৮৬৪/২০১৭)। এতে ইউছুফ ১০৪ নাম্বার বাদী।

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে- ইউসুফ ২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগে মাস্টাররোলে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইউসুফ কাজ শুরু করেছেন ২০২২ সালে। ২০২১ সালের লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগে মাস্টার রোলে কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর তালিকায় তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফিসিয়াল কোন বেতন কাঠামোতেই তার নাম নেই। ফলে এ পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগ পেতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি প্রতারণা আশ্রয় নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ইউছুফ লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়ী চালক নুরুল আমিনের ছেলে। নুরুল আমিন সড়ক ও জনপথ বিভাগের জাতীয় শ্রমিক লীগের জেলা শাখার সভাপতি। নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ী চালক ও সাংগঠনিক পদবীর ক্ষমতাবলে তিনি ছেলে ইউছুফসহ ৬ আত্মীয়কে মাস্টাররোলে চাকরিতে নিযুক্ত করান। এরমধ্যে ইউছুফের চাকরি রাজস্ব করতে ভুয়া তথ্য দিয়ে তিনিই মামলার বাদী করিয়েছেন বলে সড়ক বিভাগের কর্মচারীদের মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, ইউসুফ ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৬ সালে শ্যামলী আইডিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা পাশ করেন। এরপর তিনি ২-৩ বছর ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরী করেন। ২০২২ সালে ‘কাজ নেই মজুরি নেই’ ভিত্তিতে তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের লক্ষ্মীপুর উপ-বিভাগে দৈনিক বেতনে কাজে নিযুক্ত হন। পর্যাপ্ত লোকবল থাকলেও নুরুল আমিন তার ক্ষমতাবলে ছেলেকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিযুক্ত করিয়ে দিতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. ইউছুফের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নিয়ে সড়ক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার জন্য বলেন। এ ব্যাপারে কোন কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি।

ইউছুফের বাবা সড়ক বিভাগের গাড়ির চালক নুরুল আমিন বলেন, আমি এখানে কাজ করি। সেক্ষেত্রে আমার ছেলে ও আত্মীয়-স্বজন অগ্রাধিকার পাবে এটা স্বাভাবিক। মিথ্যে তথ্যেও যদি একজন শিক্ষিত যুবক সরকারি চাকরি পায়, তাতে বিরোধিতা করা উচিত নয়।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরি সরকারিকরনে যারা মামলা করেছে তারা অপরাধী। দৈনিক বেতন ভিত্তিক কাজ করা শ্রমিকদের নিয়মিত টাকা পাওয়ার কোন নিশ্চয়তাও নেই। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোষ্য বা আত্মীয় হওয়ায় কয়েকজন বাড়তি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন। এটি অনেকে সহ্য করতে পারছে না। তাই এনিয়ে অনেকে নানান ধরণের প্রচারণা চালাচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, কয়েক মাস হল ইউছুফ দৈনিক বেতন ভিত্তিতে কাজ করছেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি আমাদের কার্যালয়ে কাজ করছেন বলে কোন তথ্য আমার কাছে নেই। মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে কেউ চাকরির জন্য আদালতে মামলা করলে সেটার দায়ভার আমাদের নয়। সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চাকরি সরকারিকরণে ভুয়া তথ্যে মাস্টাররোলের কর্মচারীর মামলা

চাকরি সরকারিকরণে ভুয়া তথ্যে মাস্টাররোলের কর্মচারীর মামলা

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের দৈনিক বেতনে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত মো. ইউছুফ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। রাজস্বখাতে চাকরিটি পাকাপোক্ত করতে তিনি ভুয়া তথ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে দৈনিক বেতন হিসেবে ইউছুফকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ইউছুফের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান ও মোবারক হোসেন নামে আরও দুইজনকে নিয়োগ দেন লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম।

এ পদে চাকরিটি রাজস্ব করতে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সড়ক ও জনপথ বিভাগে সারাদেশে কর্মরত ২৯৫ জন মাষ্টাররোলে চাকরিরত কর্মচারী রিট পিটিশন করেছেন (নং-৭৮৬৪/২০১৭)। এতে ইউছুফ ১০৪ নাম্বার বাদী।

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে- ইউসুফ ২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগে মাস্টাররোলে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইউসুফ কাজ শুরু করেছেন ২০২২ সালে। ২০২১ সালের লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগে মাস্টার রোলে কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর তালিকায় তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফিসিয়াল কোন বেতন কাঠামোতেই তার নাম নেই। ফলে এ পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগ পেতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি প্রতারণা আশ্রয় নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ইউছুফ লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়ী চালক নুরুল আমিনের ছেলে। নুরুল আমিন সড়ক ও জনপথ বিভাগের জাতীয় শ্রমিক লীগের জেলা শাখার সভাপতি। নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ী চালক ও সাংগঠনিক পদবীর ক্ষমতাবলে তিনি ছেলে ইউছুফসহ ৬ আত্মীয়কে মাস্টাররোলে চাকরিতে নিযুক্ত করান। এরমধ্যে ইউছুফের চাকরি রাজস্ব করতে ভুয়া তথ্য দিয়ে তিনিই মামলার বাদী করিয়েছেন বলে সড়ক বিভাগের কর্মচারীদের মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, ইউসুফ ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৬ সালে শ্যামলী আইডিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা পাশ করেন। এরপর তিনি ২-৩ বছর ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরী করেন। ২০২২ সালে ‘কাজ নেই মজুরি নেই’ ভিত্তিতে তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের লক্ষ্মীপুর উপ-বিভাগে দৈনিক বেতনে কাজে নিযুক্ত হন। পর্যাপ্ত লোকবল থাকলেও নুরুল আমিন তার ক্ষমতাবলে ছেলেকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিযুক্ত করিয়ে দিতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. ইউছুফের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নিয়ে সড়ক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার জন্য বলেন। এ ব্যাপারে কোন কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি।

ইউছুফের বাবা সড়ক বিভাগের গাড়ির চালক নুরুল আমিন বলেন, আমি এখানে কাজ করি। সেক্ষেত্রে আমার ছেলে ও আত্মীয়-স্বজন অগ্রাধিকার পাবে এটা স্বাভাবিক। মিথ্যে তথ্যেও যদি একজন শিক্ষিত যুবক সরকারি চাকরি পায়, তাতে বিরোধিতা করা উচিত নয়।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরি সরকারিকরনে যারা মামলা করেছে তারা অপরাধী। দৈনিক বেতন ভিত্তিক কাজ করা শ্রমিকদের নিয়মিত টাকা পাওয়ার কোন নিশ্চয়তাও নেই। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোষ্য বা আত্মীয় হওয়ায় কয়েকজন বাড়তি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন। এটি অনেকে সহ্য করতে পারছে না। তাই এনিয়ে অনেকে নানান ধরণের প্রচারণা চালাচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, কয়েক মাস হল ইউছুফ দৈনিক বেতন ভিত্তিতে কাজ করছেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি আমাদের কার্যালয়ে কাজ করছেন বলে কোন তথ্য আমার কাছে নেই। মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে কেউ চাকরির জন্য আদালতে মামলা করলে সেটার দায়ভার আমাদের নয়। সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত