ঘণ্টায় ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ছে ভারত, বন্যার শঙ্কা বাংলাদেশে

ডেস্ক এডিটর এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
ঘণ্টায় ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ছে ভারত, বন্যার শঙ্কা বাংলাদেশে

ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে ভারী বৃষ্টির কারণে এবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের চার জেলায়। ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যারেজের তিস্তা ও জলঢাকা নদীতে রেড এলার্ট জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গের সেচ দপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে ভোর ৪টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ ৮৪ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। অর্থ্যাৎ ঘণ্টায় ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ভারী বৃষ্টির জেরে ব্যারাজে পানির চাপ থাকায় অব্যাহতভাবে এখনো পানি ছাড়া হচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। বুধবার রাত থেকে তার প্রতিফলন দেখা যায়। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায়। বুধবার রাত থেকেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ৩৭ দশমিক ৭০, শিলিগুড়িতে ১২৫ দশমিক ৬০ ও বানারহাটে ২৯০ মিলিমিটার।

এদিকে উত্তর ভারতে বন্যা পরিস্থিতিরও বেশ অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে যমুনা নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে যমুনা নদীর আশপাশের অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় যমুনায় পানিস্তর পৌঁছায় ২০৮ দশমিক ৪৬ মিটারে। সকাল ৮টা নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০৮ দশমিক ৪৮ মিটারে।

বন্যা নিয়ন্ত্রক পোর্টালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে ওল্ড রেলওয়ে ব্রিজের কাছে যমুনা নদীর পানি অতিক্রম করেছিল ২০৭ মিটারের সীমা।

পরিস্থিতি এতটাই খারাপের দিকে গেছে যে শহরেও পানি ঢুকছে হু হু করে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন সংলগ্ন এলাকাও ভাসছে যমুনার পানিতে। পানির নিচে কাশ্মিরী গেট, দিল্লি বিধানসভা এলাকা, বোট ক্লাব, মনেস্ট্রি মার্কেট, যমুনা বাজার, গীতা ঘাট, খাড্ডা কলোনি, মঞ্জু কাটিলা থেকে ওয়াজিরাবাদ, ময়ূর বিহার। এমন অবস্থায় জরুরি অবস্থায় জারি করা হয়েছে রাজধানীতে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট ১৬টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

এদিকে হিমাচলের বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা জানিয়েছে, তাদের পর্যটকবাহী প্রায় ৪০০ বাস আটকে পড়েছে হিমাচলের বিভিন্ন এলাকায়। বিআরও জানিয়েছে ধস প্রবণ এলাকায় ধীরগতিতে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ চলছে।

ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে পাঞ্জাব, হরিয়ানাতেও। ইতিমধ্যেই এনডিআরএফ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী হরিয়ানায় কর্নালের বন্যা কবলিত এলাকায় তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালাচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ১৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। দুই রাজ্যে এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।

হতিয়ানার কাইথাল, যমুনানগর, পঞ্চকুলা সহ বহু জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার জেজেপি বিধায়ক ঈশ্বর সিং গুহলা বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গেলে কাইথালে গেলে প্রতিবাদের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে একজন ক্ষুব্ধ নারী তাকে চড় মারেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ঘণ্টায় ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ছে ভারত, বন্যার শঙ্কা বাংলাদেশে

ঘণ্টায় ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ছে ভারত, বন্যার শঙ্কা বাংলাদেশে

ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে ভারী বৃষ্টির কারণে এবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের চার জেলায়। ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যারেজের তিস্তা ও জলঢাকা নদীতে রেড এলার্ট জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গের সেচ দপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে ভোর ৪টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ ৮৪ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। অর্থ্যাৎ ঘণ্টায় ১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ভারী বৃষ্টির জেরে ব্যারাজে পানির চাপ থাকায় অব্যাহতভাবে এখনো পানি ছাড়া হচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। বুধবার রাত থেকে তার প্রতিফলন দেখা যায়। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায়। বুধবার রাত থেকেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ৩৭ দশমিক ৭০, শিলিগুড়িতে ১২৫ দশমিক ৬০ ও বানারহাটে ২৯০ মিলিমিটার।

এদিকে উত্তর ভারতে বন্যা পরিস্থিতিরও বেশ অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে যমুনা নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে যমুনা নদীর আশপাশের অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় যমুনায় পানিস্তর পৌঁছায় ২০৮ দশমিক ৪৬ মিটারে। সকাল ৮টা নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০৮ দশমিক ৪৮ মিটারে।

বন্যা নিয়ন্ত্রক পোর্টালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে ওল্ড রেলওয়ে ব্রিজের কাছে যমুনা নদীর পানি অতিক্রম করেছিল ২০৭ মিটারের সীমা।

পরিস্থিতি এতটাই খারাপের দিকে গেছে যে শহরেও পানি ঢুকছে হু হু করে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন সংলগ্ন এলাকাও ভাসছে যমুনার পানিতে। পানির নিচে কাশ্মিরী গেট, দিল্লি বিধানসভা এলাকা, বোট ক্লাব, মনেস্ট্রি মার্কেট, যমুনা বাজার, গীতা ঘাট, খাড্ডা কলোনি, মঞ্জু কাটিলা থেকে ওয়াজিরাবাদ, ময়ূর বিহার। এমন অবস্থায় জরুরি অবস্থায় জারি করা হয়েছে রাজধানীতে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট ১৬টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

এদিকে হিমাচলের বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা জানিয়েছে, তাদের পর্যটকবাহী প্রায় ৪০০ বাস আটকে পড়েছে হিমাচলের বিভিন্ন এলাকায়। বিআরও জানিয়েছে ধস প্রবণ এলাকায় ধীরগতিতে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ চলছে।

ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে পাঞ্জাব, হরিয়ানাতেও। ইতিমধ্যেই এনডিআরএফ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী হরিয়ানায় কর্নালের বন্যা কবলিত এলাকায় তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালাচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ১৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। দুই রাজ্যে এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।

হতিয়ানার কাইথাল, যমুনানগর, পঞ্চকুলা সহ বহু জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার জেজেপি বিধায়ক ঈশ্বর সিং গুহলা বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গেলে কাইথালে গেলে প্রতিবাদের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে একজন ক্ষুব্ধ নারী তাকে চড় মারেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত