সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভা নির্বাচন আর মাত্র দুদিন পর। ২০১৭ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছেন কে? ভোটাররা কার গলায় বিজয় মালা পরাবেন-সেই প্রতিক্ষার অবসান হচ্ছে আগামী সোমবার (১৭ জুলাই)।
সীমানা জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ ৬ বছর পর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন ঘিরে চলছে সরগরম আলোচনা। শেষ মুহূর্তে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। কে হবেন প্রথম পৌর পিতা?
অনেক ভোটারের মতে, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বাবুল শেখের মধ্যেই লড়াই হতে পারে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মো. আব্দুর রাজ্জাক, জগ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বাবুল শেখ, নারকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম, মোবাইল ফোন প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আল-আমিন হোসেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দুইজন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী রয়েছেন। এর বাইরে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৫ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার মোট ভোটার ১৯ হাজার ২৮৭ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৯ হাজার ৮২০ জন, পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৪৬৭ জন, তৃতীয় লিঙ্গের ১জন।
এ দিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিটের তৎপরতা চোখে পড়ার মত। পৌরসভার ১০টি ভোট কেন্দ্রে থাকছে অতিরিক্ত পুলিশ, ব্যাটালিয়ন পুলিশ, আনসার সদস্যরা। সেই সঙ্গে সার্বক্ষণিক টহলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র্যাব সদস্য দ্বারা গঠিত স্ট্রাইকিং ফোর্স, একজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন মোবাইল টিম।
অপরদিকে গত ১২ জুলাই তাড়াশ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সকল প্রার্থীদের সাথে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশিদা সুলতানার মত বিনিময় সভায় উন্মক্ত আলোচনায় কোন প্রার্থীই নির্বাচনের সার্বিক ব্যবস্থা, প্রচার-প্রচারণার বাধা কিংবা অন্য কোন বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেননি।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ভোটের পরিবেশ নিয়ে জানান, তিনি সন্তুষ্ট। সেই সাথে নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক তিনি মেনে নেবেন।
তাড়াশ পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহা. মুজিবুল আলম বলেন, পৌরসভার প্রথম এই নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে সবপ্রস্তুতি সম্পন্ন।
তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিটি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি শেষ সময় পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকবে।
নির্বাচনকে ঘিরে পুরো পৌরসভা এখন উৎসবমুখর। আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন এতোদিন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট সুন্দর পরিবেশে হবে এমটাই জানিয়েছেন, তাড়াশ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম।