তামিমের এবার ‘ধৈর্য পরীক্ষা’

স্পোর্টস ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
তামিমের এবার ‘ধৈর্য পরীক্ষা’

হাঁটা চলা একদমই স্বাভাবিক। বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে উঠা পর্যন্ত তামিম ইকবাল যে গতিতে হাঁটছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল ‘সুইট হোমে’ যত তাড়াতাড়ি পৌঁছানো সম্ভব ততই ভালো। কালো কাঁচে ঢাকা গাড়িতে উঠার আগে হাত নেড়ে বাংলাদেশের ওপেনার যেন জানিয়ে দিলেন, ‘আই অ‌্যাম ব্যাক।’

তবে এই ‘ব‌্যাক’ কেবল তার নতুন লড়াইয়ের শুরু। কণ্টকাকীর্ণ লম্বা পথ যে এখনো তাকে পাড়ি দিতে হবে। যেখানে তাকে মুখোমুখি হতে হবে অযুত নিযুত চ্যালেঞ্জ। আর দিতে হবে ধৈর্যর অসীম পরীক্ষা।

পিঠের নিচের অংশের ব্যথা মুক্তির চিকিৎসা নিয়ে তামিম সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছান। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার লাম্বার ফোর ও লাম্বার ফাইভের সংযুক্ত ডিস্কে পর্যায়ক্রমে দুটি ইনজেকশন নিয়েছেন তিনি।

মেরুদণ্ড বিশেষজ্ঞ টনি হ্যামন্ড ব্যথা কমিয়ে রাখতে এই দুটি ইনজেকশন দিয়েছেন। তামিমের সামনে অস্ত্রোপচারের পথও খোলা ছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচার করালে সামনের এশিয়া ও বিশ্বকাপ কোনটাই খেলা হবে না তার। সেজন্য আপদ কালীন কাজ চালানোর জন্যই ইনজেকশন নিয়েছেন তামিম।

চিকিৎসা নেওয়া পর্যন্ত তামিমের লড়াই ছিল একরকম। সামনে শুরু হচ্ছে আরেক লড়াই। যেখানে তাকে নিজের ফিটনেস নিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে। এশিয়া ও বিশ্বকাপ খেলার জন্য যে ফিটনেস প্রয়োজন তা পেতে তামিমকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে। সঙ্গে যোগ হবে দলে তার অবস্থান।

হুট করে কাউকে না জানিয়ে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। একদিন পরই সেই অবসর ভেঙে ফিরে আসার ঘোষণা দেন। তামিমের এই অবসর কাণ্ডে ওলট পালট হয়েছে অনেক কিছু। নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে একাধিক গণমাধ্যমে তামিম সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। যেগুলোর মোদ্দাকথা, দলের ভেতরে এমন কিছু হচ্ছে যেগুলো অধিনায়ক হিসেবে পছন্দ হচ্ছে না তার। বলতে দ্বিধা নেই, কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে তার রসায়ন জমছে না কোনভাবেই।

অবসর ভেঙে ফিরলেও ওয়ানডে অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাবেন কিনা তা নিয়ে আছেন দ্বিধায়। এসব নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসারও কথা রয়েছে তার। যা খুব শিগগিরিই হওয়ার কথা।

মাঠের বাইরে পুরনো সম্পর্ক মজবুত করার লড়াইয়ের সঙ্গে ২২ গজে টিকে থাকতে, পুরনো রূপে ধরা দিতে ফিটনেসের চরম পরীক্ষাও দিতে হবে তাকে। যে জন্য ইন ফিল্ড ও অফফিল্ড ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে তাকে।

তামিমের ফেরার লড়াইটা শুরু হবে সপ্তাহ খানেকের ভেতরেই। হ‌্যামন্ডের পরামর্শে একটু একটু করে ফিটনেসের কাজ শুরু হবে। তার এই পুনর্বাসনের কাজ করবেন বিসিবির চিকিৎসক, ফিজিও ও ট্রেনাররা। ১৪ দিন পর তামিম ব্যাট হাতে অনুশীলন শুরু করতে পারবেন। শুরুতে হাল্কা জোরে করবেন ব্যাটিং। ধাপে ধাপে বাড়াবে তার ওয়ার্কলোড।

তামিম যে ইনজেকশন নিয়েছেন সেগুলোর কার্যকারিতা ২-৩ মাস থেকে ৪-৫ মাস পর্যন্ত থাকে। কিছু ক্ষেত্রে এক মাসের মধ্যেও ব্যথা অনুভব হতে পারে। এক বছরে তিনবারের বেশি ইনজেকশন নিতে পারবেন না।

জানা গেছে, বিশ্বকাপের আগে আরেকবার লন্ডন যেতে হবে তার। তৃতীয় ইনজেকশন তখনই নেবেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যদি অনুশীলনের সময় ফের কোমরে সমস্যা অনুভব হয় তামিমের, দেরি না করে তাকে বন্ধ করতে হবে সব কার্যক্রম। তাই তাকে নিয়ে বেশ সতর্ক বোর্ড।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিসের কণ্ঠে পাওয়া গেল বেশ সতর্কাবস্থান, ‘একজন প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসেবে বলতে পারি ইনজুরির কারণে একজন খেলোয়াড়ের ফিরে আসাটা কখনও সহজ আবার কখনও কঠিন হতে পারে। আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব একজন ক্রিকেটারকে শতভাগ সাপোর্ট করা যাতে তারা তাড়াতাড়ি রিকোভার করতে পারে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সবসময় সহযোগিতা করা, এটা কোচের মাধ্যমে হোক, প্র্যাকটিসের মাধ্যমে হোক যেভাবেই হোক। আমরা তা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমরা সেটা করব।’

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তামিমের এবার ‘ধৈর্য পরীক্ষা’

তামিমের এবার ‘ধৈর্য পরীক্ষা’

হাঁটা চলা একদমই স্বাভাবিক। বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে উঠা পর্যন্ত তামিম ইকবাল যে গতিতে হাঁটছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল ‘সুইট হোমে’ যত তাড়াতাড়ি পৌঁছানো সম্ভব ততই ভালো। কালো কাঁচে ঢাকা গাড়িতে উঠার আগে হাত নেড়ে বাংলাদেশের ওপেনার যেন জানিয়ে দিলেন, ‘আই অ‌্যাম ব্যাক।’

তবে এই ‘ব‌্যাক’ কেবল তার নতুন লড়াইয়ের শুরু। কণ্টকাকীর্ণ লম্বা পথ যে এখনো তাকে পাড়ি দিতে হবে। যেখানে তাকে মুখোমুখি হতে হবে অযুত নিযুত চ্যালেঞ্জ। আর দিতে হবে ধৈর্যর অসীম পরীক্ষা।

পিঠের নিচের অংশের ব্যথা মুক্তির চিকিৎসা নিয়ে তামিম সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছান। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার লাম্বার ফোর ও লাম্বার ফাইভের সংযুক্ত ডিস্কে পর্যায়ক্রমে দুটি ইনজেকশন নিয়েছেন তিনি।

মেরুদণ্ড বিশেষজ্ঞ টনি হ্যামন্ড ব্যথা কমিয়ে রাখতে এই দুটি ইনজেকশন দিয়েছেন। তামিমের সামনে অস্ত্রোপচারের পথও খোলা ছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচার করালে সামনের এশিয়া ও বিশ্বকাপ কোনটাই খেলা হবে না তার। সেজন্য আপদ কালীন কাজ চালানোর জন্যই ইনজেকশন নিয়েছেন তামিম।

চিকিৎসা নেওয়া পর্যন্ত তামিমের লড়াই ছিল একরকম। সামনে শুরু হচ্ছে আরেক লড়াই। যেখানে তাকে নিজের ফিটনেস নিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে। এশিয়া ও বিশ্বকাপ খেলার জন্য যে ফিটনেস প্রয়োজন তা পেতে তামিমকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে। সঙ্গে যোগ হবে দলে তার অবস্থান।

হুট করে কাউকে না জানিয়ে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। একদিন পরই সেই অবসর ভেঙে ফিরে আসার ঘোষণা দেন। তামিমের এই অবসর কাণ্ডে ওলট পালট হয়েছে অনেক কিছু। নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে একাধিক গণমাধ্যমে তামিম সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। যেগুলোর মোদ্দাকথা, দলের ভেতরে এমন কিছু হচ্ছে যেগুলো অধিনায়ক হিসেবে পছন্দ হচ্ছে না তার। বলতে দ্বিধা নেই, কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে তার রসায়ন জমছে না কোনভাবেই।

অবসর ভেঙে ফিরলেও ওয়ানডে অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাবেন কিনা তা নিয়ে আছেন দ্বিধায়। এসব নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসারও কথা রয়েছে তার। যা খুব শিগগিরিই হওয়ার কথা।

মাঠের বাইরে পুরনো সম্পর্ক মজবুত করার লড়াইয়ের সঙ্গে ২২ গজে টিকে থাকতে, পুরনো রূপে ধরা দিতে ফিটনেসের চরম পরীক্ষাও দিতে হবে তাকে। যে জন্য ইন ফিল্ড ও অফফিল্ড ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে তাকে।

তামিমের ফেরার লড়াইটা শুরু হবে সপ্তাহ খানেকের ভেতরেই। হ‌্যামন্ডের পরামর্শে একটু একটু করে ফিটনেসের কাজ শুরু হবে। তার এই পুনর্বাসনের কাজ করবেন বিসিবির চিকিৎসক, ফিজিও ও ট্রেনাররা। ১৪ দিন পর তামিম ব্যাট হাতে অনুশীলন শুরু করতে পারবেন। শুরুতে হাল্কা জোরে করবেন ব্যাটিং। ধাপে ধাপে বাড়াবে তার ওয়ার্কলোড।

তামিম যে ইনজেকশন নিয়েছেন সেগুলোর কার্যকারিতা ২-৩ মাস থেকে ৪-৫ মাস পর্যন্ত থাকে। কিছু ক্ষেত্রে এক মাসের মধ্যেও ব্যথা অনুভব হতে পারে। এক বছরে তিনবারের বেশি ইনজেকশন নিতে পারবেন না।

জানা গেছে, বিশ্বকাপের আগে আরেকবার লন্ডন যেতে হবে তার। তৃতীয় ইনজেকশন তখনই নেবেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যদি অনুশীলনের সময় ফের কোমরে সমস্যা অনুভব হয় তামিমের, দেরি না করে তাকে বন্ধ করতে হবে সব কার্যক্রম। তাই তাকে নিয়ে বেশ সতর্ক বোর্ড।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিসের কণ্ঠে পাওয়া গেল বেশ সতর্কাবস্থান, ‘একজন প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসেবে বলতে পারি ইনজুরির কারণে একজন খেলোয়াড়ের ফিরে আসাটা কখনও সহজ আবার কখনও কঠিন হতে পারে। আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব একজন ক্রিকেটারকে শতভাগ সাপোর্ট করা যাতে তারা তাড়াতাড়ি রিকোভার করতে পারে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সবসময় সহযোগিতা করা, এটা কোচের মাধ্যমে হোক, প্র্যাকটিসের মাধ্যমে হোক যেভাবেই হোক। আমরা তা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমরা সেটা করব।’

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত