বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে ভারত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু সোমবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

Google news
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অংশ হিসাবে আওয়ামী লীগের পর এবার বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতা জিএম কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেছে মোদি সরকার। জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলের এই সফর ভারতের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কয়েকদিন পরই জি-২০ জোটের সম্মেলনে ‘আমন্ত্রিত অতিথি’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাবেন।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপি (প্রতিবেদনে প্রধান বিরোধী দল বলে দাবি করা হয়েছে) এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে কেন্দ্র করে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। কারণ ২০১১ সালেই সংসদের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের টেলিফোনে দ্য হিন্দুকে বলেছেন,‘সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের জন্য সরকারের এগিয়ে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই সব পক্ষ বসুক এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করুক।’

তবে জিএম কাদের বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রতি সমর্থন জানাননি।

তিনি বলেছেন, ‘তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে, কিন্তু এই সরকার কীভাবে গঠন করা হবে তা পরিষ্কার করছে না।’

জিএম কাদের এর পরিবর্তে তৃতীয় বিকল্পের পরামর্শ দিয়েছেন। আর এই বিকল্পটি জাতীয় পার্টির কাছে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যখন সব দল সংলাপে বসবে তখন সেটি জানাবেন বলে জানিয়েছেন কাদের। ধারণা করা হচ্ছে, তার এ পরিকল্পনাটি অনেকটা ‘আপসের’ হবে।

জিএম কাদের বলেছেন, ‘আমাদের কাছে একটি ফর্মুলা আছে। যখন সব দল সংলাপে বসবে, তখন আমরা সেটি সামনে আনব।’

গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এর সঙ্গেই যুক্ত হলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের ভারত সফর।

দ্য হিন্দু লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান রিখ ম্যাককোরমিক এবং ইডি কেস গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপর ওই দুই কংগ্রেসম্যান ১৭ আগস্ট দিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (ওআরএফ) আসেন। সেখানে তারা একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন।এর আগের দিন ওআরএফে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন প্রজেক্টের মিডল ইস্ট ফোরামের পরিচালক ক্লিফোর্ড স্মিথ একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি জানান, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী সিদ্ধান্ত নেবে সে ব্যাপারে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। এছাড়া ওই বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে কথা বলেন। আলোচনার এক পর্যায়ে জামায়াতের ছাত্র সংগঠনকে এক সময়কার ‘বিশ্বের সবচেয়ে উগ্রবাদী সংগঠন’ হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। ক্লিফোর্ড স্মিথ অবশ্য জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী সংগঠন র‌্যাব ধর্মীয় মৌলবাদীদের দমনে যথেষ্ট কাজ করেনি।

জাতীয় পার্টির ভারত সফরের মাধ্যমে চলমান এই আলোচনা স্পষ্টভাবেই প্রসারিত হচ্ছে, একইসঙ্গে ঢাকার কিছু সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, অনুরূপ ‘জানালা’ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মহলেও খোলা রয়েছে। এগুলি ছাড়াও, দুই সরকারের মধ্যে আলোচনা আরও গভীর হবে, কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উভয়েই ব্রিকস সম্মেলনের জন্য জোহানেসবার্গে যাবেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে ভারত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে ভারত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু সোমবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

Google news
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অংশ হিসাবে আওয়ামী লীগের পর এবার বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতা জিএম কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেছে মোদি সরকার। জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলের এই সফর ভারতের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কয়েকদিন পরই জি-২০ জোটের সম্মেলনে ‘আমন্ত্রিত অতিথি’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাবেন।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপি (প্রতিবেদনে প্রধান বিরোধী দল বলে দাবি করা হয়েছে) এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে কেন্দ্র করে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। কারণ ২০১১ সালেই সংসদের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের টেলিফোনে দ্য হিন্দুকে বলেছেন,‘সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের জন্য সরকারের এগিয়ে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই সব পক্ষ বসুক এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করুক।’

তবে জিএম কাদের বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রতি সমর্থন জানাননি।

তিনি বলেছেন, ‘তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে, কিন্তু এই সরকার কীভাবে গঠন করা হবে তা পরিষ্কার করছে না।’

জিএম কাদের এর পরিবর্তে তৃতীয় বিকল্পের পরামর্শ দিয়েছেন। আর এই বিকল্পটি জাতীয় পার্টির কাছে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যখন সব দল সংলাপে বসবে তখন সেটি জানাবেন বলে জানিয়েছেন কাদের। ধারণা করা হচ্ছে, তার এ পরিকল্পনাটি অনেকটা ‘আপসের’ হবে।

জিএম কাদের বলেছেন, ‘আমাদের কাছে একটি ফর্মুলা আছে। যখন সব দল সংলাপে বসবে, তখন আমরা সেটি সামনে আনব।’

গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এর সঙ্গেই যুক্ত হলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের ভারত সফর।

দ্য হিন্দু লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান রিখ ম্যাককোরমিক এবং ইডি কেস গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপর ওই দুই কংগ্রেসম্যান ১৭ আগস্ট দিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (ওআরএফ) আসেন। সেখানে তারা একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন।এর আগের দিন ওআরএফে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন প্রজেক্টের মিডল ইস্ট ফোরামের পরিচালক ক্লিফোর্ড স্মিথ একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি জানান, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী সিদ্ধান্ত নেবে সে ব্যাপারে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। এছাড়া ওই বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে কথা বলেন। আলোচনার এক পর্যায়ে জামায়াতের ছাত্র সংগঠনকে এক সময়কার ‘বিশ্বের সবচেয়ে উগ্রবাদী সংগঠন’ হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। ক্লিফোর্ড স্মিথ অবশ্য জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী সংগঠন র‌্যাব ধর্মীয় মৌলবাদীদের দমনে যথেষ্ট কাজ করেনি।

জাতীয় পার্টির ভারত সফরের মাধ্যমে চলমান এই আলোচনা স্পষ্টভাবেই প্রসারিত হচ্ছে, একইসঙ্গে ঢাকার কিছু সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, অনুরূপ ‘জানালা’ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মহলেও খোলা রয়েছে। এগুলি ছাড়াও, দুই সরকারের মধ্যে আলোচনা আরও গভীর হবে, কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উভয়েই ব্রিকস সম্মেলনের জন্য জোহানেসবার্গে যাবেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত