বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য গিনি থেকে চার হাজার কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে মিশরে গেছেন ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কায়রোর বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সে পড়ার তীব্র ইচ্ছা ছিল মামাদু সাফায়উ ব্যারি নামে ওই তরুণের। এজন্য গত মে মাসে গিনির নিজের বাড়ি থেকে সাইকেল চালিয়ে মিশরের উদ্দেশে যাত্রা করেন। দীর্ঘ যাত্রায় তিনি পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ৪,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মামাদু বলেন, “আমি জানতাম না, আমার পড়ার উদ্দেশ্য সফল হবে কি না। কিন্তু ইচ্ছা ছিল সেখানে পড়ার। এজন্যই যাত্রা শুরু করি। চার মাস ধরে সাইকেল চালিয়েছি। এরমধ্যে মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, টোগো, বেনিন ও চাদ নামের দেশগুলো পার হয়েছি। অনেক দেশেই রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যুত্থান ও সহিংসতা চলছিল।”
তিনি বলেন, “এসব অনেক দেশে নিরাপত্তা নেই। তবুও ভ্রমণ করেছি। মালি ও বুরকিনা ফাসোতে লোকেরা আমার দিকে এমনভাবে তাকিয়ে ছিল যেন আমি একজন খারাপ মানুষ। অনেক জায়গায় বড় বন্দুক এবং গাড়ি নিয়ে সড়কে সামরিক বাহিনীকে ঘুরতে দেখেছি।”
এই সফরে বুরকিনা ফাসোতে দুইবার ও টোগোতে গ্রেপ্তার ও আটক হন এই তরুণ।
চাদে পৌঁছানোর পর সেখানকার এক সাংবাদিক মামাদুর সাক্ষাৎকার নেন। যেখানে তার দুর্দশার কথা উঠে আসে। এরপর থেকেই তিনি বহু মানুষের সহায়তা পেয়েছেন বলেও জানান।
মামাদু বলেন, “ওই সংবাদ প্রকাশের পর আমার জন্য অনেকেই অর্থ সংগ্রহ করে। আমাকে মিশরের ফ্লাইটের টিকেট কিনে দেয়। এজন্য আমি সুদানের সহিংস পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সাইকেল চালানো থেকে বেঁচে যাই।”
গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান ও ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সে ভর্তির সুযোগ পান মামাদু।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ডিন ডক্টর নাহলা তাকে এলসেইডির বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মামাদুর সঙ্গে বৈঠকের একটি ছবি শেয়ার করেছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বের সবার কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছাতে চায়। তারা সব দেশের শিক্ষার্থীদের সাদরে গ্রহণ করে। যত্ন নেয় ও সহায়তা করে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন অনুসারে, ৯৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি। এটি ইসলামী শিক্ষার একটি সম্মানিত কেন্দ্র বলেও সমাদৃত।